মা বেচতে চুরি, ভাই চালাতো রিকশা, অভাবের মধ্যে দিন কাটিয়েও ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে গর্বে ভরালো বোন

দারিদ্রতায় হার না মেনে জীবনযুদ্ধে জিতে যাওয়ার গল্প আমাদের আশেপাশে অনেক, যা প্রতিনিয়ত আমাদের অনুপ্রেরণা (Inspiration) জোগায়। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে মহারাষ্ট্রবাসী। মহারাষ্ট্রের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ( Deputy Magistrate ) ওয়াসিমা সেখ ( Wsima Sk ) এর জীবনযুদ্ধের গল্পটা এতটা সহজ ছিল না। দীর্ঘদিনের কঠিন সাধনা ও পরিশ্রমের পর মহারাষ্ট্র পাবলিক সার্ভিস কমিশনে ( Maharastra Public Service Commission ) তিনি তৃতীয় স্থান অধিকার করে তারপর ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের পদটি পেয়েছেন ওয়াসিমা।
মহারাষ্ট্রের নান্দের জেলার ( Nander District ) অত্যন্ত গরিব ঘরের ওয়াসিমা-র স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে ডেপুটি কালেক্টর ( Deputy Collector ) হওয়ার। কিন্তু তার পারিবারিক অবস্থা বরাবরই খুব শোচনীয় ছিল। তার বাবা দীর্ঘদিন ধরেই মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ( Mentally Unstable ), চুড়ি বিক্রি করে সেই টাকায় সংসার চালাতেন তার মা। চুড়ি বিক্রি সামান্য টাকায় সংসার চালানোর সাথে সাথে মেয়ের পড়াশোনাও চালাতে হতো তার মাকে। এমনকী দিদির পড়াশোনার প্রতি এত আগ্রহ ও অদম্য জেদ দেখে ওয়িসিমার ছোটো ভাইও রিকশা চালিয়ে সেই উপার্জনের টাকায় দিদির পাশে দাঁড়িয়েছিল। এই কঠিন সংগ্রামের মধ্যে তার অস্ত্র ছিল শুধু আত্মবিশ্বাস ও কঠিন পরিশ্রম। এই পরিশ্রমকেই হাতিয়ার করে নিজেকে যোগ্য তৈরি করে তোলেন ওয়াসিমা।
महाराष्ट्र:- भाई ने रिक्शा चलाकर पढ़ाया और एमपीएससी की टॉपर बन गईं #वसीमा_शेख
वसीमा शेख जी को डिप्टी कलेक्टर बनने की दिली मुबारकबाद और उनके भाई को दिल से सैल्यूट। ❣️ pic.twitter.com/ylWu9TA93H— Mohammad Munajir🇮🇳محمدمناظر (@munajir92) June 28, 2020
পারিবারিক দুর্দিনের মধ্যেও গ্রামের টাউন কাউন্সিল স্কুল (Town Council School) থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ওয়াসিমা হাই স্কুলেও পড়াশোনা চালিয়েছিলেন। কিন্তু আঠারো বছর বয়সেই তার বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয় হায়দার (Haidar) নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে। কিন্তু ওয়াসিমার অদম্য জেদ তাকে হেরে যেতে দেয়নি। যখন তার বিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেই সময় মহারাষ্ট্র সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার (Civil Service Examination) জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ওয়াসিমা। তার এই লড়াইয়ে তিনি পাশে পেয়েছিলেন তার স্বামীকেও। কালেক্টর ওয়াসিমা জানান, মা, ভাই ও পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি যে লড়াইটা শুরু করেছিলেন, তার স্বামীর অবদান না থাকলে হয়তো তা আজ পূর্ণতা দিয়ে তাকে এই জায়গায় নিয়ে আসতে পারতো না।
আরও পড়ুনঃ চারচাকা নিয়ে সাড়া ফেললেন এই বামন, তিন ফুট উচ্চতাতেই গাড়ি চালিয়ে পেলেন লাইসেন্স
২০১৮ সালে প্রথমবার সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ফল ভালো না হওয়ায় দ্বিতীয়বার আবার এই একই পরীক্ষাতে বসেন ওয়াসিমা। ২০২০ সালে মহারাষ্ট্র পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পাশাপাশি মহারাষ্ট্র মহিলা বিভাগেও তৃতীয় স্থান করেছিলেন ওয়াসিমা। ওয়াসিমার এই সংগ্রাম যেমন যুবসমাজকে দারিদ্রতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে শাখায়, তেমনই ‘মেয়েদের বেশি পড়াশোনা করার প্রয়োজন নেই’ -এর বিরুদ্ধে হায়দার এক জ্বলন্ত প্রত্যুত্তর।