রাত বাড়লে অন্দরমহলে দাঁড়াতেও ভয় পান প্রহরীরা! লাইব্রেরীর অন্দর থেকে যেন আজও ভেসে আসে গর্ভনরের স্ত্রী কান্না

কলকাতার বিখ্যাত কিছু হেরিটেজ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি হল ন্যাশনাল লাইব্রেরী ( National Library )। দেশের সর্ব বৃহৎ এই বইয়ের সমাহার হামেশাই পাঠকদের তার দিকে টেনে থাকে। বই প্রেমীদের কাছে এই জায়গা স্বর্গের থেকে কোনও অংশেই কম নয়। তাই সর্বদাই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এখানে বই প্রেমীদের ছুটে আসতে দেখা যায়। তবে শুধুই বইয়ের পাহাড় এমনটা মোটে়ও নয়। বই ছাড়াও আরও একটি কারণে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে ন্যাশনাল লাইব্রেরী। সেটি হল এই হেরিটেজের মধ্যে অনবরত ঘটে চলা ভুতুরে কান্ড কারখানা। কলকাতার বিখ্যাত সকল ভুতুরে জায়গাগুলির মধ্যে এটিও একটি।
১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বাংলার শাসনভার চলে যায় ইংরেজদের কাঠপুতুল মিরজাফরের হাতে। তিনি ১৭৬০ খ্রীস্টাব্দে কলকাতার আলিপুরে তৈরি করে বেলভেডর হাউস। তবে কিছু দিন পর তিনি আবার এটিকে ভারতের গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস-এর হাতে সমর্পণ করে দেন। এরপর যতদিন না ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লী সরিয়ে নেওয়া হয়, ততদিন পর্যন্ত ওই বাড়িটি গভর্নর হাউস বলেই চিহ্নিত থাকে। ১৮৩৬ খ্রীস্টাব্দে বর্তমান এসপ্লেনেডে প্রথম বেসরকারি উদ্দ্যোগে একটি লাইব্রেরী তৈরি করা হয়। যার মালিক ছিলেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। এরপর সেই ক্যালকাটা পাবলিক লাইব্রেরীর নাম পরিবর্তন হয়ে ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরী নামকরণ করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেই ইম্পেরিয়াল লাইব্রেরী হয়ে ওঠে ন্যাশনাল লাইব্রেরী।
২০১০ সালে আর্কেলোজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার দ্বারা বিল্ডিং পুনরুদ্ধারের কাজ চলার এক পুরানো চেম্বার পাওয়া যায়। অদ্ভুত এক গোপন ঘর মেলে ন্যাশনাল লাইব্রেরীর মধ্যে যার কোনও রকমের দরজা-জানালা কোনও কিছুই নেই। সঙ্গে সঙ্গে একটি বিষয় রটে যায় যে ইউরোপের পুরানো দূর্গগুলিতে পাওয়া টর্চার চেম্বারগুলির মতোই এটিও একটি সেই প্রকারেরই টর্চার চেম্বার। এরপর গবেষকরা সেটি নিয়ে যথারীতি গবেষণা শুরু করে দেয়। প্রথমদিকে এটিকে ঘিরে নানা রহস্য দানা বাঁধলেও পরবর্তীকালে গবেষকরা বলেন এটি শুধুমাত্র নির্মাণকার্যের সুবিধার্থে বানানো। তবে ২০১২ সালের পর হটাৎ করেই এই বিষয় নিয়ে খবর আসা বন্ধ হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, ন্যাশনাল লাইব্রেরীতে কর্মরত সকল প্রহরীদের কাছেই শোনা গিয়েছে, রাতে লাইব্রেরীর মধ্যে কাজ করা অসম্ভব হয়ে ওঠে। তাঁর পাশাপাশি সেই ভল্ট থেকে যেন কোনও এক মহিলার কান্নার শব্দ পাওয়া যায়। তবে চাকরি যাওয়ার ভয়ে এই বিষয়ে কোনও রকম খোলাখুলি মন্তব্য কেউ করেন না। কিছু প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, অন্ধকারে আবছায় অনেক সময় ছায়ামূর্তির দেখা যায়।