আধুনিক যুগে দাঁড়িয়ে কুসংস্কার ভরসা! ছাত্রীদের ভূতের ভয় তাড়াতে ভরসা পুরোহিত,মৌলবিরা

যে স্থান মানুষকে কুসংস্কারের (Superstition) অন্ধকার কাটিয়ে শিক্ষার আলোয় আসার পথ দেখায়,যে স্থান মানুষকে জাত,ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ হবার প্রেরনা দেয় বর্তমান সময়ে দাড়িয়ে সেই স্থান কুসংস্কার ও ধর্ম বিভেদের স্থান হয়ে উঠেছে। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে স্কুলের ভূত তাড়াতে ডাকা হলো পুরোহিত ও মৌলবিকে একত্রে। জিনের হানা বলে নিদান দিয়ে মৌলবি বোতলের মধ্যে জল ভরে তাতে জলপড়া দিলেন।স্কুলের এই সমস্থ কান্ড দেখে হতবাক জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা।
জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেছেন,” স্কুলের উচিত ছিল অন্ধ কুসংস্কারকে প্রশ্যয় না দিয়ে ছাত্রীদের বিজ্ঞানমনস্ক করে বিষয়টি নিয়ে বোঝানো। স্থানিয় বিভিন্ন স্কুল এই ঘটনায় হতবাক। ধুলিয়াল শহরের মধ্যে ওই বিদ্যালয়ের নাম বাণীচাদ আগরওয়ালা বালিকা বিদ্যালয়। উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত ওই স্কুলে মোট ছাত্রী ২৭০০জন।বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত এলাকা হবার কারণে গরিবঘরের ছাত্রীদের থাকার জন্য হোস্টেল করেছেন সর্বশিক্ষা মিশন। লকডাউনের পর দেড় মাস সেই হস্টেল খুলেছে।
সেখানে ৭৫ জন ছাত্রী ছাড়াও আছে রাধুনি ও প্রহরী। ছাত্রীদের দাবি কিছু দিন ধরে নূপুরের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে তারা তাদের মনে হচ্ছে কেউ যেন নূপুর পরে ঘুরছে। সেই থেকেই ভীত ছাত্রীরা।সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কাকলি ঘোষ বলেন “স্কোলের চারিদিকে লোকালয় উচু পাচিল দিয়ে ঘেরা হস্টেল এত দিন কিছু হয় নি। দিন ছয়েক ধরে ভূতের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ছাত্রীরা।
ছাত্রীদের হস্টেলে গিয়ে বোঝানো হচ্ছে প্রতিদিনই। তখন তারা বুঝছে শুনছে পরক্ষণেই রাত হলে হারিয়ে ফেলছে সব বোধশক্তি। তখন তারা নূপুরের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে তাদের মনে হচ্ছে কেউ যেন পাশের ডোবার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শিক্ষিকার মতে সেটা হতে পারে ঝিঝি পোকার শব্দ। সকলের মধ্যে কিছু কিছু সংস্কার রয়ে গিয়েছে। সেটাই মানসিকভাবে ভার করছে তাদের মন। তাদের সেই মনের ভয় কাটাতেই নাকি দুই ধর্মের দুই উপাশক এর আগমণ।
শিক্ষিকার কথায় তারা মন্ত্র পরে কি করেছে সেটা তার কাছে বড় না। ছাত্রীদের মনের ভয় কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোই ছিল মূল উদ্দেশ্য। মৌলবি ও পুরোহিতের সাহায্যে এটা করাই ছিল শিক্ষিকার লক্ষ্য। পাশের একটি স্কুল জয়কৃষ্ণপুর হাইস্কুলে একি ঘটনা ঘটে কয়েক বছর আগে। সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন তাকে সবাই ঝাড়ফুকের পরামর্শ দিলেও তিনি তা করেন নি। তিনি রাতে ঐ হোস্টেলে থেকে ও রাতে পাড়ে ঘুরে প্রমাণ করেছেন ভূত নেই। বিজ্ঞান মঞ্চ(Science club) জানিয়েছে তারা স্কুলে গিয়ে কুসংস্কার(superstition) ও ভূতের ভয় দূর করার জন্য যা যা করনীয় করবে।