Sleep Champion Triparna: কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমিয়েই লাখপতি! শ্রীরামপুরের ঘুমের রানি ত্রিপর্ণা নিদ্রা কেড়েছেন নেটিজেনদের

ঘুমকাতুরে, কুম্ভকর্ণ, অলস, এইসব উপমা বাঙালি মায়েদের ব্রহ্মাস্ত্র। কিন্তু ছেলে-মেয়েরা যে পাশা উল্টে দেবে এমন কখনও ভেবছিল কেউ? রামায়ণের পাতায় থাকা বৃহদাকার রাক্ষস কুম্ভকর্ণ ঘুমোতেন ৬মাস, জাগতেন ৬মাস। তার ঘুম ভাঙানোর কায়দা শুনে হাসিতে ফেটে পড়ত শিশুরা। কিন্তু এ যুগের কুম্ভকর্ণদের যে পুরস্কৃত করা হবে তা বোধহয় কল্পনাতেও আনেননি। আবার রূপকথার গল্পই ভাবুন না, রাজকন্যাকে সোনার কাঠি, রূপোর কাঠি দিয়ে ঘুম পাড়াতে অথবা ভাঙাতে হতো। তবে এ যুগে সোনা রূপাটা বড্ড ব্যয়বহুল। সামান্য ম্যাট্রেসই সোনার কাঠির চেয়ে ঢের বেশি কার্যকরী। ম্যাট্রেসে টানা ন ঘন্টা ঘুমিয়ে ঘুমের দেশের রানি হয়ে গেলেন ‘ত্রিপর্ণা চক্রবর্তী’। মাঝে মাঝেই বিজ্ঞাপনে দেখা যায় ঘুমিয়েই রোজগার তবে এবার আর গুজব নয় সত্যি।
একটি ম্যাট্রেস সংস্থার তরফে এই ঘুমের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। MBA করতে ঢুকেই এই প্রতিযোগিতার কথা জানতে পেরেছিলেন ত্রিপর্ণা। তিনি বলেন, “যখন আবেদন করেছিলাম তখন বুঝতে পারিনি এটা প্রতিযোগিতা। ইন্টার্নশিপের মত ছিল বিষয়টা। পরে গিয়ে দেখি ঘুমানোর জন্য পয়সাও দেওয়া হবে।”একেবারে দমদার প্রতিযোগিতা, আয়োজক সংস্থা জানিয়েছে, একাধিক রাউন্ড ছিল। ইন্টারভিউ হয়েছে। সেখানে ঘুমকে কে কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে সেই বিষয়টা দেখা হয়েছে। সাড়ে পাঁচ লাখ আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। সেখান থেকে ১৫ জনকে বেছে নেওয়া হয়। তাঁদের ১০০ দিন ৯ ঘণ্টা করে ঘুমোতে বলা হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল একটি ম্যাট্রেস ও স্লিপ ট্র্যাকার। সেখান থেকে ফাইনালিস্ট হন চারজন। আর সেই চারজনের মধ্যেই সেরার শিরোপা পেলেন ত্রিপর্ণা।
ঘুমানোর চাকরি করে পেলেন ৫ লক্ষ। কিছু করতে হল না তাকে যাবতীয় ব্যবস্থা করেন ম্যাট্রেস কোম্পানি।ঘুমানোর সচেতনতাটা সবার মধ্যে কিছুটা হলেও ছড়াতে পেরেছেন ত্রিপর্ণা। তিনি বলেছেন, “ঘুমাতে পেরে আমি গর্বিত। কারণ মুম্বইয়ের বাসিন্দারা যখন বলে তাঁরা রাতে ঘুমোন না, চেন্নাইয়ের বাসিন্দারা বলেন তাঁরা নাকি একমাত্র মৃত্যুতেই ঘুমোন তখন বাঙালির ঘুম নিয়ে দুর্নাম রয়েছে। কিন্তু, এই ঘুম দিয়েই আজ বাংলাকে গর্বিত করতে পেরেছি।”
ঘুমানোর রেকর্ড তার আগেও ছিল। বসে বসে ঘুম, পরীক্ষার হলে ঘুম, অঙ্ক স্যাট পরীক্ষায় ঘুম এমনকী কর্মক্ষেত্রেও অবলীলায় ঘুমিয়ে পড়েন ত্রিপর্ণা। তাই যোগ্য ব্যক্তিদের তালিকায় সহজেই জায়গা হয়েছিল তার। অবশ্য এ ঘটনার আগে মায়ের বকুনি ছিল অহরহ। হাসি মজার খোরাকও কম হয়নি ত্রিপর্ণা। কিন্তু সকলের ঘুম উড়িয়ে, ঘুমিয়েই পাঁচ লাখের অধিকারী ত্রিপর্ণা।