Baby Born in moving train :হঠাৎ প্রসববেদনা, চলন্ত ট্রেনেই ভূমিষ্ঠ হলো শিশু

নেহা চক্রবর্তী,কলকাতাঃ
বিভিন্ন রকম অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটে চলেছে প্রতিনিয়তই। মানুষের চোখে কিছু জিনিস কখনো বিশ্বাস যোগ্য কখনো নয় । সেরকমই অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটলো একটি দূরপাল্লার ট্রেনে। ট্রেনে কি এমন ঘটেছিলো সেদিন যা মানুষকে আবার ভাবিয়েছিল ‘এও সম্ভব’!আমরা প্রত্যেকেই কোনো একটি নির্দিষ্ট হসপিটালে বা নার্সিংহোমে জন্মগ্রহন করেছি। জেনেছি আগেকার দিনের বাচ্চা প্রসব করা হত কোনো হাসপাতালে নয় বরং বাড়িতেই। সেখানে থাকতেন দাইমা। তিনিই করাতেন প্রসব বছর বছর ধরে।
তবে এটা ২০২১। তাই দাইমা এর সাথে সাথে অদৃশ্য হয়েছে অস্বাস্থ্যকর ভাবে বাচ্চা কে প্রসব করার প্রক্রিয়াও। তবে সেদিনে ঘটে যাওয়া ঘটনা চমকে দিয়েছে মানুষকে।রেল চিকিৎসক ও ট্রেনের স্বাস্থ্যকর্মীরা ট্রেনের মধ্যেই প্রসব করালেন এক যাত্রীর। নাম তার রিনা কুমারী। অবধ-অসম এক্সপ্রেসের ভিতরে বুধবার গভীর রাতে রেলের চিকিৎসক ও ট্রেনের স্বাস্থ্যকর্মীদের সহায়তায় তাঁর সন্তান প্রসব করেন। রিনাকে পরে জিজ্ঞেস করলে জানা যায় তিনি তিনসুকিয়া থেকে মুজফ্ফরপুরে যাচ্ছিলেন এক আত্মীয়ের সাথে। পথের মাঝেই তার প্রসব বেদনা ওঠে। তাই নিউ বঙ্গাইগাঁও স্টেশনে এই ইমার্জেন্সির খবর দেওয়া হয় টিটির মাধ্যমে। তৎক্ষণাৎ সাহায্যের জন্য চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা একটি দল নিয়ে পৌঁছে যান রিনার কাছে। রাত তখন ১টা বাজতে ১০। ওনারা শুরু করে দেন অস্ত্রোপচার ও সন্তান প্রসবের তোড়জোড়।
আরও পড়ুনWest Bengal- “এগিয়ে বাংলা” বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহে শীর্ষে, ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পকে স্বীকৃতি কেন্দ্রের
ট্রেনটিকে দাঁড় করানো হয় ঘণ্টাখানেক নিউ বঙ্গাইগাঁও স্টেশনে। এরপর শুরু হয় অস্ত্রপ্রচার। অবশেষে প্রসব শেষ হলে চিকিৎসকরা নাড়ি কাটার ক্ষতে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেন। এরপর মা ও সন্তান দু’জনেই শারীরিক ভাবে সুস্থ ছিলেন বলে জানান চিকিৎসকরা তাই রিনারা ওই ট্রেনেই মুজফ্ফরপুরের এই ঘটনার পুরো বিবরণ দেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জনসংযোগ আধিকারিক নীলাঞ্জন দেব ব্যাখ্যা করে বলেন,”বুধবার রাত ১২টা ১০ নাগাদ অবধ-অসম এক্সপ্রেসে থাকা এক টিটিই ফোন করে খবর দেন, ওই ট্রেনে এক মহিলা যাত্রীর প্রসব বেদনা উঠেছে। পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছে, কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই মহিলার সন্তান প্রসব করানো প্রয়োজন। তখনও নিউ বঙ্গাইগাঁও স্টেশনে ট্রেনটির ঢুকতে ঘণ্টাখানেক লাগার কথা। সঙ্গে সঙ্গে স্টেশন মাস্টার নিউ বঙ্গাইগাঁও ডিভিশনাল রেল হাসপাতালে খবর দেন। তড়িঘড়ি কর্তব্যরত চিকিৎসক কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্মী, গরম জল থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় সমস্ত ওষুধপত্র নিয়ে স্টেশনে গিয়ে পৌঁছন।”
তিনি আরও বলেন,‘‘জন্মের পর সদ্যোজাত কাঁদছিল না। তাতে একটু চিন্তায় পড়ে যান চিকিৎসক। কিন্তু কিছু ক্ষণ পর চিকিৎসকদের তৎপরতায় সকলকে আস্বস্ত করে সে কেঁদে ওঠে। রেলের তরফে মা ও সন্তানের শুশ্রূষার জন্য রিনাদেবীকে নিউ বঙ্গাইগাঁওতে থেকে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু উনি থাকতে চাননি। ওই ট্রেনেই রওনা দেন। এমন পরিষেবা দিতে পেরে আমরা গর্বিত। এখান থেকে রওনা হওয়ার সময় মা ও সন্তান ভালই ছিলেন।’’