আব্বাস সিদ্দিকীর ধর্মীয় সভা ঘিরে ফের রণক্ষেত্র ভাঙড়! একাধিক এলাকায় অশান্তির আঁচ
রবিবার দুপুর ২টো নাগাদ সুন্নাতুল জামাতের কর্নধার আব্বাস সিদ্দিকীর একটি ধর্মীয় সভা হওয়ার কথা ছিল ভাঙড়ের বড়ালী পদ্মপুকুর এলাকার একটি খেলার মাঠে। সভা উপলক্ষ্যে মাঠে একটি মঞ্চ তৈরী করা হয়েছিল এবং অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন আইএসএফের কর্মীরা। সেই একই খেলার মাঠে সেদিন সকাল থেকেই চলছিল তৃণমূল কংগ্রেসের একটি ফুটবল ম্যাচ। বেলা বাড়ার সাথে সাথেই ঠান্ডাযুদ্ধের আবহ তৈরী হয় দুপক্ষের মধ্যেই।
এরপরেই অভিযোগ ওঠে, সেই এলাকার আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামীদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর এবং তাদের মারধর করেন তৃণমূল কর্মীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। অভিযোগ অনুযায়ী, ভোজেরহাট থেকে পদ্মপুকুরের দিকে আইএসএফের কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার পথেই তাদের ওপরে লাঠিচার্জ করেছিল পুলিশবাহিনী।
সূত্র মারফত খবর, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ার অভিযোগ আব্বাস অনুগামীদের বিরুদ্ধেও। এদিকে সভার কারণে সেদিন সকাল থেকেই ভাঙড়ের নতুন ব্রিজের মুখ থেকেই পুলিশি সাহায্যে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল সমস্ত গাড়ি। কাশীপুর থানা এলাকার থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় আইএসএফ কর্মীদেরকে। ফলে এলাকায় ব্যাপক যানজট হয়। কেবল তাই নয়, ভোজেরহাট এলাকার রাস্তা কার্যত অবরোধ করেন আইএসএফের কর্মীরা। ফলতঃ বিক্ষোভ থেকে যানজট সবকিছু নিয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরী হয় ভাঙড়ে।
অসমর্থিত সূত্রের খবর, সকাল থেকেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেই অঞ্চলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার অজয় গণপতি স্বয়ং। তবে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ আইএসএফের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, “বিশ্ব নবি দিবসের এই সভাকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে পুলিশের যে ভূমিকা, তাতে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। প্ররোচনা ছাড়াই পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। সকল মানুষের ধর্মপালন করার অধিকার রয়েছে। মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার এই প্রচেষ্টা নিয়ে আমি বিধানসভায় আলোচনা করব। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যতদূর যাওয়া সম্ভব, আমি যাব। ভাঙড়বাসীকেও জানাচ্ছি, আপনারা শান্ত হন। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আমি এর প্রত্যুত্তর নেব।” এদিকে সভার কারণে সেদিন সকাল থেকেই ভাঙড়ের নতুন ব্রিজের মুখ থেকেই পুলিশি সাহায্যে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল সমস্ত গাড়ি।
বর্তমানে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক, অবরোধ উঠেছে বাসন্তী হাইওয়ে থেকেও। সমস্ত ঘটনার জন্য পুলিশকেই দোষারোপ করছেন আব্বাস। তাঁর অভিযোগ, “ইচ্ছাকৃতভাবেই ধর্মীয় সমাবেশ ভন্ড করা হয়েছে। আমাকে এবং আমার অনুগামীদের আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছে।”