কেক-মোমবাতির জঙ্গলের বাইরে এক অন্যরকম জন্মদিন, দুঃস্থ মানুষের পাশে নাকতলার ‘হাত বাড়ালেই বন্ধু’
ফেসবুক ভরা শুভেচ্ছা বার্তা, দিনভর কব্জি ডুবিয়ে খাওয়া সঙ্গে বন্ধুদের সঙ্গে দেদার হুল্লোর, জন্মদিন (Birthday) বলতে কমবেশি এরকম একটা ছবি ভেসে ওঠে আমাদের চোখে। কিন্তু তারপরেও কিছু মানুষ থাকে যারা তাদের জন্মদিনের স্বাদ নিতে চান একটু অন্য মোড়কে। কেক-বেলুন, মোমবাতির জঙ্গলের বাইরে বেরিয়ে আম-আদমির স্রোতে ভেসে। হ্যাঁ, সম্প্রতি হাওড়া স্টেশনে(Howrah Station) ধরা পড়ল এমনই এক মন কেমনের জন্মদিনের প্রতিচ্ছবি। বনানি বিশ্বাসের জন্মদিনেই পেটপুড়ে খাচ্ছে দুঃস্থ মানুষের দল। আর গোটা উদ্যোগের নেপথ্যে রয়েছে ‘হাত বাড়ালেই বন্ধু’।
নাকতলার বিধান পল্লীতেই ২০১৩ সালে প্রথম পথ চলা শুরু এই সামাজিক সংগঠনের(Social Worker)। উদ্দেশ্য একটাই যেভাবই হোক অভাবে অনটনে নিত্য-প্রয়োজনে পৌঁছে যাওয়া শহরের অলিগলিতে জীবনযুদ্ধে ধুঁকতে থাকা ওই দুঃস্থ মানুষ গুলোর কাছে। সংগঠনের সদস্য হোক বা বাইরের কোনও ব্যক্তির জন্মদিন কিংবা বিবাহবার্ষিকী, স্পনসর পেলেই ছুটে যাওয়া দ্রারিদ্রতার জ্বালায় ধুঁকতে থাকা ওই সংগ্রামী মানুষ গুলোর কাছে। কখনও দুপুরের পেট ভরা মধ্যাহ্ন ভোজ হোক বা বিকালের টিফিন, সাধ্য মতো কাজ চলছে সর্বদাই।
সম্প্রতি বানানি বিশ্বাসের জন্মদিন উপলক্ষ্যে হাওড়া স্টেশনে এমনই এক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল হাত বাড়ালেই বন্ধুর তরফ থেকে। স্টেশন চত্বরে থাকা দুঃস্থ মানুষের জন্য ব্যবস্থা করা হয় ফ্রায়েড রাইস, মাংস সহ একাধিক সুস্বাদু পদ। গত প্রায় ৭ বছর ধরে এই কাজ করে আসছে নাকতলার এই সংগঠন। কখনও বৃদ্ধাশ্রমে পৌঁছে যাওয়া তো কখনও তিলোত্তমার বুকে নাম না জানা ওই ভবঘুরদের মুখে একচিলতে হাসি ফোটানো, একগ্রতা আর দিন বদলের স্বপ্ন বুকে নিয়ে কাজ করে চলেছে নাকতলার হাত বাড়ালেই বন্ধু।
বর্তমানে এই সংগঠনের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন দেবযানী বিশ্বাস। তার উদ্যোগেই মূলত হাওড়া স্টেশনের জনাহারের আয়োজন করা হয়। অন্যদিকে সেক্রিটারির পদে রয়েছেন প্রশান্ত হাজরা। এদিকে আসন্ন পুজো উললক্ষ্যে একাধিক কর্মসচি রয়েছে এই সংগঠনের। পুজোর আগেই শহরের কয়েক হাজার দুঃস্থ মানুষকে জামাকাপড় দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন দেবযানী দেবী। জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে সেই কাজও।