Independence Day 2022 : ব্যর্থতার মাঝেই সফলতার চাবিকাঠি! যে বিদ্রোহ গলা টিপে ধরেছিল ব্রিটিশদের, মনে কি আছে সাধারণের?

নেহা চক্রবর্ত্তী, কলকাতা : ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ইতিহাসের পাতায় উল্লেখিত হয়েছে। তাঁর মধ্যে একটি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল নৌ বিদ্রোহ ( ১৯৪৬ )। এটি মিউনিটি বিদ্রোহ হিসেবেও পরিচিত। যদিও ঐতিহাসিকদের অনেকেরই মতানুযায়ী এই বিদ্রোহ সেভাবে স্বীকৃতি পায়নি কারোর কাছেই।১৭৫৭ সালে পলাশির আমবাগানে বাংলার স্বাধীনতা পাওয়ার পর ভারতে ব্রিটিশরাজ মূলত দু’টি সশস্ত্র বিদ্রোহের মুখোমুখি হয়। প্রথমটি ঠিক ১০০ বছর পর ১৮৫৭ সালের সেনা বিদ্রোহ এবং দ্বিতীয়টি তার ঠিক ৮৯ বছর পর নৌ বিদ্রোহ ।
এই বছর ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবস। সেই উপলক্ষে উন্মাদনা চারিদিকে সকলেই দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু আশ্চর্যের কথা এই যে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের শেষ বিদ্রোহ অর্থাৎ নৌ বিদ্রোহেরও এবছর ৭৫তম বার্ষিকী । এই নৌ বিদ্রোহীদের আত্মজীবনী নিয়ে যদিও এখন নতুন করে গবেষণা হচ্ছে, বই বেরোচ্ছে এবং মানুষ পড়ছেও কম-বেশি। কিন্তু তার যে ভারতের স্বাধীনতার উপর প্রভাব কতটা তা হয়ত সকলে ঠাওর করতে পারেন না। যদিও নৌ বিদ্রোহ শেষ অবধি ব্যর্থ হয়েছিল। বিশেষ কিছু কারণের ফলে এই বিদ্রোহ শেষ অবধি সফল হয়নি। কিন্তু এটি স্বাধীনতার নেপথ্যে একটি বিশাল ছাপ রেখে গিয়েছিল।
উল্লেখ্য, নৌ বিদ্রোহীদের মতে এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার অন্যতম কারণ, তৎকালীন রাজনীতিবিদেরা তাঁদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিলেন। দিত্বীয়ত কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ বিদ্রোহে কোনরকম সমর্থন দেয়নি। কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগের নেতারা বিপ্লব চাননি। তারা চেয়েছিলেন শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিতে।কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যে অরুণা আসফ আলি দলের শীর্ষ নেতাদের মত বদলানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বল্লভভাই প্যাটেলের বিরোধিতার কারণে ব্যর্থ হন ।একমাত্র কমিউনিস্ট পার্টি ছিল এই বিদ্রোহের সমর্থনে।
এই বিদ্রোহের কারণ হিসেবে অনেকে বলে থাকেন বেতন, খাবার ও আবাসনের মান শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় কম ও নিম্নমানের হওয়া, বর্ণবাদী বৈষম্যের কারণে ভারতীয়দের মধ্যে ক্ষোভ এসবই।এই বিদ্রোহে ২২৮ জন বেসামরিক ব্যক্তি ও তিনজন পুলিশ নিহত হন। আহত হন হাজারেরও বেশি মানুষ । কিন্তু এত কিছুর পরেও ২২ ফেব্রুয়ারিতেই বল্লভভাই প্যাটেল বিদ্রোহীদের আত্মসমর্পণের জন্য বার্তা পাঠান।
ভারতের সাধারণ মানুষ ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে নৌ বিদ্রোহের সমর্থনে ২২ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিভিন্ন শহরে বন্ধ পালন করে। বর্তমানে রাজনীতির উত্থান পতন তথা সমাজে বিভাজন ও অস্থিরতা যে পরিমাণে ছড়িয়ে পড়ছে তা হয়ত কাউকেই দেখতে হত না যদি নৌ বিদ্রোহ সফল হত।