Mamata Banerjee: লক্ষ্মীর ভান্ডার এখন গড়ের মাঠ, মমতার একের পর এক প্রোজেক্টে পড়েছে ‘লালবাতি’

‘ভাঁড়ের মা ভবানী’- ঋণের জ্বালায় জর্জরিত হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু তারপরও নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা কাটছে না রাজ্য সরকারের। ফলে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্পে ‘লালবাতি’ জ্বলছে রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিন কয়েক আগে সরকারের অর্থ সংকটের কথা জানিয়ে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন, নতুন কোনও প্রকল্প আর অনুমোদন করা হবে না। চালু প্রকল্পের কাজ আগে শেষ করা হবে। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোষাগারের এমন বেহাল দশা যে টাকার অভাবে বহু এমন কাজ থামিয়ে দিতে হচ্ছে রাজ্য জুড়ে, যেগুলির বেশিরভাগই মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে শিলান্যাস করেন। ক্ষমতায় এসেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নে প্রকল্পে গতি আনতে শিলান্যাসের দিনই উদ্বোধনের আনুমানিক দিন-তারিখও প্রশাসনকে জানিয়ে দিতেন, যাতে লাল ফিতের ফাঁসে কাজ থমকে যায় না।

মুখ্যমন্ত্রীর এই কৌশলে অভাবনীয় সুফল মেলে বলে জানা গিয়েছে প্রশাসনিক মহল তরফে। তবে এখন দিন দিন পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে। থমকে যাওয়া বড় প্রকল্পগুলির মধ্যে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে। তার মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়, তমলুকে গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়, তারকেশ্বরে গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি আলিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো রাজনৈতিকভাবে স্পর্শকাতর প্রকল্পও রয়েছে। গত সপ্তাহে কলকাতা পুরসভার প্রচার সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের কাজের খতিয়ান দিতে গিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কথা উল্লেখ করে। বাস্তবে সেগুলির নির্মাণ কাজ থমকে গিয়েছে টাকার অভাবে।

Bengali News,News,West Bengal Goverment,Mamata Banerjee,Laxmi Bhandar,Health Card,স্বাস্থ্যসাথী,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,খবর,বাংলা খবর,নবান্নের খবর,প্রশাসনের খবর,রাজনীতি,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খবর,mamata banerjee news,TMC,BJP,West Bengal political news

উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা ধার নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মাসের শেষের দিকে আরও দু’হাজার কোটি টাকা ধার নেওয়া হতে পারে। সাধারণত, এই ঋণের পোশাকি নাম “স্টেট ডেভেলপমেন্ট লোন”। নাম শুনেই স্পষ্ট যে এই ঋণের গোটা টাকা রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজে খরচ হতে চলেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, আদতেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই ঋণের টাকাগুলিকে সঠিক খাতে খরচ করছে?-নবান্ন সূত্রে খবর, বাজারে বন্ড ছেড়ে টাকা ধার নেওয়া ছাড়াও আরও নানা খাতে রাজ্য সরকার ঋণ-অনুদান বাবদ যে অর্থ পাচ্ছে তা পরিকল্পনা বহির্ভূত নানা খাতেও ব্যয় করা হচ্ছে। ফলে কমে যাচ্ছে পরিকল্পনা খাতে প্রতিশ্রুত বরাদ্দ। তার ফলে থমকে যাচ্ছে নির্মীয়মাণ প্রকল্পের বকেয়া কাজ। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, লক্ষ্মী ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথীর মতো প্রকল্পের অর্থ জোগাতে গিয়ে টান পড়েছে। অর্থ দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, এগুলিও সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের অংশ।

আরও পড়ুন……IIEST Shibpur: হিন্দু-হিন্দুত্বের ছোঁয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, অভিযোগ, গীতা মাধ্যমে গৈরিকীকরণের

মুখ্যমন্ত্রী দিন কয়েক আগে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রকাশ্যেই জানিয়ে দেন, এখন নতুন কোনও প্রকল্প অনুমোদন করা সম্ভব নয়। শাসক দলের এক বিধায়কের স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির পরস্তাব নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, চালু প্রকল্পের কাজ আগে শেষ হোক। দেখা যাচ্ছে, অনেক প্রকল্পই মাঝপথে থমকে আছে। উল্লেখ্য, সরকারি সূত্রে খবর, অচিরেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাজারে দেনার অঙ্ক পাঁচ লক্ষ কোটিতে পৌঁছে যাবে। ঋণের অঙ্ক যত বাড়বে, আসল এবং সুদ-সহ তা পরিশোধ করতে গিয়ে উন্নয়ন খাতে বরাদ্দে ততই টান পড়বে। ফলে রাজস্ব ঘাটটি আরও চড়বে। প্রসঙ্গত, ঋণের অঙ্কে রাশ টানতে চতুর্দশ অর্থ কমিশন রাজ্যগুলিকে বাজার থেকে ধার নেওয়ার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছে। রাজস্ব ঘাটতির সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ অর্থ রাজ্যগুলি বাজার থেকে উন্নয়ন বন্ড বেচে তুলতে পারবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই সীমাও ছুঁয়ে ফেলেছে।

টাকার অভাবে থমকে থাকা নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলি একনজরে।

  • নবান্নের পাশে অ্যানেক্স বিল্ডিং।
  • আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় টাকার জন্য আপাতত স্থগিত কাজ।
  • মংপো বিশ্ববিদ্যালয় আপাতত বন্ধ।
  • আলিপুর মাল্টিলেয়ার পার্কিং লট তৈরির কাজ ঢিমেতালে চলছে।
  • ক্যালকাটা বিশ্ববিদ্যালয় রাজারহাট ক্যাম্পাস।
  • হরিচন্দ্র গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়।
  • মহাত্মা গান্ধী বিশ্ববিদ্যালয়।
  • তারকেশ্বর গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয় আপাতত কাজ বন্ধ
  • আলিপুরের ধনামধন্য অডিটোরিয়াম, ২০১৯-এর জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।




Back to top button