ঝরেছে মুকুল, রং বদলেছে বাবুলের!এবার কী পালা লকেটের? কুণালের টুইটে বাড়ছে জল্পনা
প্রথমে মুকুল রায়, তারপর বাবুল সুপ্রিয়েরও রাজনীতিতে থেকে অরাজনৈতিক ভাবধারা আর সেখান থেকে ফুল পরিবর্তন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঠিক যেমন ছবিটা তৈরি হয়েছিল, এখনও সেই ছবি একই আছে শুধু পরিবর্তন হয়েছে স্থানের এবং বলাই যেতে পারে কালেরও। নির্বাচনের আগে এক এক করে তৃণমূল ছেড়ে “রাম নাম সত্য হে” বলে ঢুকে পড়ছিল বিজেপিতে। এখন ঠিক উল্টোটা।
মুকুল, বাবুল পেরিয়ে এবার কি তাহলে পালাবদলের পালা লকেটের? নেই কোনো সঠিক উত্তর তবে আছে কিছু ইঙ্গিত। ভবানীপুর উপনির্বাচনে দলের হয়ে প্রচারে না আসার জন্য বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে টুইট করে ধন্যবাদ জানালেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ভবানীপুর উপনির্বাচনে প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়াল-এর হয়ে প্রচার করার জন্য “তারকা প্রচারক”-দের তালিকায় নাম ছিল হুগলী বিজেপি সাংসদ লকেটের। কিন্তু তিনি আসেননি প্রচারে। বস্তুত সোমবারই প্রচারের শেষ দিন। সেদিন পর্যন্তও লকেটকে ভবানিপুরে দেখ যায়নি। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লকেটকে না প্রচার করার জন্য টুইট মাধ্যমে ধন্যবাদ দেন তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সেই সুত্রেই লকেটকে নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। তবে বাবুলের পরে এবার তৃণমূলে নাম লেখাতে চলেছেন লকেট?
Thanks and congrats 'star campaigner' @me_locket for not campaigning at Bhabanipur. Inspite of many requests from BJP U hvn't come.
As a friend wish your success wherever u r.
World is too small.
Hope those days will return again when u started your political innings.— Kunal Ghosh (@KunalGhoshAgain) September 27, 2021
তবে এই প্রসঙ্গে লকেট কিছু বলেননি। তিনি আপাতত উত্তরাখন্ডের সহ প্রভারী হিসেবে কাজ করছেন। সূত্রের খবর, লকেটকে ভবানিপুরে মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার জন্য বহুবার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু উনি প্রতিবারই এই বিষয়ে প্রত্যাখ্যান করে দেন। ঘটনাচক্রে, বিজেপি-র অন্দরে লকেটের সঙ্গে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘সমীকরণ’ খুব ভাল ছিল না। বরং দিলীপের আমলে তুলনায় বেশি গুরুত্ব পেয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা পাল। যিনি গত বিধানসভা ভোটে জিতে বিধায়ক হয়েছেন। দিলীপের উদ্যোগেই অগ্নিমিত্রা বিজেপি-র মহিলা মোর্চার রাজ্য শাখার সভাপতি হয়েছিলেন বলে খবর। যদিও এর আনুষ্ঠানিক সত্যতা কোনও তরফেই কখনও স্বীকার করা হয়নি। তবে দিলীপ-লকেট সমীকরণ যে সবসময়েই ‘মধুর’ থেকেছে, তা বিজেপি-র অন্দরে কারও অজানা নয়।
উল্লেখ্য, সোমবার সকালে কুণাল ঘোষ টুইটে লেখেন, “ভবানীপুরে প্রচারে না আসায় “তারকা প্রচারক” লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাই। বিজেপির অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও আপনি প্রচার করেননি। আপনি যেখানেই থাকুন বন্ধু হিসেবে আপনার সাফল্য কামনা করি।” এরপরেই জল্পনা বাড়িয়ে কুণাল আরও লেখেন, “পৃথিবী খুব ছোট। আশা করছি আপনার রাজনীতির শুরু করার দিনগুলি আবার ফিরে আসুক।” অর্থাৎ লকেট চট্টোপাধ্যায় তাঁর রাজনীতিক জীবন শুরু করেছিল তৃণমূল থেকে। তিনি যেন সেখানেই ফিরে আসেন। বাবুল দলবদলের পরই লকেটকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছিল। জল্পনা বলছে তৃণমূলের সাথে যোগাযোগ রাখছেন লকেট। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর ভাঙন ধরেছে বিজেপি-তে। একের পর এক বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। তার মধ্যে কিছু দিন আগে সাংসদ বাবুলও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন।
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা ভোটের পর থেকে লকেটের সঙ্গে বেড়ে চলেছে বিজেপি নেতৃত্বের দূরত্ব। তবে এই দূরত্বের আনুষ্ঠানিক কোনো সত্যতাই মেলেনি। লকেট ঘনিষ্ঠমহলে জানিয়েছেন, তিনি উত্তরাখন্ডের সহ-প্রভারীর দায়িত্ব পেয়ে খুশি। সম্প্রতি লকেটের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। যা থেকে জল্পনা আরও ছড়িয়েছে। কারণ, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে বাবুলও নড্ডার সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছিলেন।