Padmashree- এগিয়ে বাংলা, রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সর্বোচ্চ সম্মান নিয়ে ফিরলেন বিনা পয়সার ডাক্তার
অবশেষে চূড়ান্ত সফলতা। নিজের ডাক্তারির জোরে নাম কামিয়েছিল গোটা বিশ্বে। বসিরহাট মহাকুমার সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের সাহেব খালি গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্দননগর গ্রামের ভুমিপুত্র সে। পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসার ভীত চিরকালীন ডুবো সূর্যের মতো। এই পরিস্থিতি কলকাতা কিংবা তাঁর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে বসবাসকারী মানুষজন চিকিৎসার একগুচ্ছ সুযোগ সুবিধা পেলেও প্রান্তিক এলাকার মানুষজন সেই সুযোগ থেকে সম্পূর্ণরূপে বঞ্ছিত থাকে। সুন্দরবনের মতো এলাকা থেকে খুব কম লোকই এই শহরে এসে চিকিৎসা করাতে পারে। সেই সমস্ত প্রান্তিক জায়গাগুলিতে কোয়াক ডাক্তারই আশা ও ভরসা। আর এই সংগ্রাম সম্পর্কে বেশ অবগত অরুণোদয়। সে জানে সেখানকার মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই। দমদমের মতো শহরাঞ্চলে থাকলেও ছোটো থেকেই ইচ্ছা ছিল সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষগুলির জন্য কিছু করার। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর, তাঁদের প্রতিদিনের বাঁচার লড়াইয়ে খানিক পথচলতি সাথী হয়ে ওঠার। আর এই উদ্যোগ নিয়ে ২০০০ সাল থেকে শুরু করলেন বিনা পয়সায় চিকিৎসা। তারপর টানা ৬ বছর পরিশ্রমের পর শুরু করলেন ‘সুজন’ নামে একটি সংস্থা। খেতাব পেলেন “বিনা পয়সার ডাক্তার-এর”।
বছরের পর বছরের পরিশ্রম, মানুষের জন্য কাজ করার অদম্য ইচ্ছা, অবশেষে মিলেছে সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান। ২০২০ সালে তিনি পদ্মভূষণ পুরস্কার পান। কিন্তু করোনার জেরে চলা লকডাউনের কারণে রাষ্ট্রপতির হাত থেকে তিনি পুরস্কার নিতে পারেননি। অবশেষে চলতি বছরর ৬ই নভেম্বর তিনি রাষ্ট্রপতির হাত থেকে গ্রহণ করেন সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মানটি। বেশ আবেগপ্লুত হয়ে পড়েন অরুণোদয়। পুরস্কার হাতে নিয়ে তিনি বলেন, “করোনা মহামারির জেরে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে চিকিৎসা করতে বেশ অসুবিধার মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু সেই সমস্ত বাঁধা রুখতে পারেনি তাঁকে। এছাড়াও বাংলা বিভিন্ন প্রান্তে তথা বোলপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, মন্দারমনি-র বিভিন্ন জেলায় গিয়ে একদিকে অনাথ আশ্রমের শিশু ও সাধারণ মানুষের চিকিৎসা করেছেন।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “আগামী দিনে সুন্দরবনের সাগর কুমিয়ারি ও মৌসুমি দ্বীপের আইল্যান্ডে চিকিৎসা করবেন। দেশের তথা বিদেশের মাটিতেও উজ্জ্বল করবেন বাংলার নাম।”
আরও পড়ুন………কমলালেবু বিক্রেতা থেকে পদ্মশ্রী! ‘অক্ষর সন্ত’ হাজাব্বা জ্বালাচ্ছেন শিক্ষার আলো
উল্লেখ, প্রতি সপ্তাহেই জন্মভুমির টানে তিনি চলে আসেন সুন্দরবনে। সেখানে মানুষের চিকিৎসা করেন, ওষুধ দেন। ইতিমধ্যে তাঁকে সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয় তরফে সংবর্ধনা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হিঙ্গলগঞ্জের বাসিন্দা না হয়েও সেখানকার মানুষের বেশ আপন অরুণোদয়। এদিন শনিবার তাঁকে এক অনুষ্ঠানে হিঙ্গলগঞ্জ মহাবিদ্যালয় তরফে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধিত হতে পেরে বেশ খুশি ডাক্তারবাবু, বিদ্যালয়ের প্রধানকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি, পড়ুয়াদের নিজের লক্ষ্যকে স্থির রেখে পড়াশোনা করে যাওয়ার পরামর্শ দেন।