স্বাধীনতার দিনেই ফ্রান্স-ভারতের সন্ধি! প্যারিসের ভিনদেশি এখন ছাপোষা বাঙালি ঘরের বধূ

সাত সমুদ্র তেরো নদী’ পেরিয়ে বাংলার ছেলের প্রেমের টানে ছুটে এসেছিলেন ফরাসি কন্যা। মনে আছে তো? আজ সেই ফ্রান্সের বিপ্লব ঘটে গেল শিমলার কালি মন্দিরে। স্বাধীনতার দিনই ফরাসি কন্যার হাতে পরাধীন হলেন বাংলার যুবক! কী কান্ড বলুন দেখি! যাই হোক এ পরাধীনতা প্রেমের ,তাই মন্দ কিছু নয়। সোমবার রাতে পান্ডুয়ার সিমলাগড় কালী মন্দিরে প্যাট্রিসিয়া ও কুন্তল সাত পাকে বাঁধা পড়েন। প্রেমের টানে প্যারিস থেকে পান্ডুয়া এসে পৌঁছেছিলেন প্যাট্রিসিয়া।
লাল বেনারসি ও হাতে শাঁখা-পলা পরে একেবারে বাঙালি সাজে হিন্দুমতে প্রেমিক কুন্তলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাধা হল প্যাট্রিসিয়ার। যদিও এদিন মন্দিরে দুই পরিবারের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। প্যাট্রিসিয়ার ইচ্ছা ছিল মন্দিরে বিয়ে করবেন। সেই কারণেই নাকি শিমলা গড়ের কালি মন্দিরে ঈশ্বর সাক্ষী রেখে সাত জন্মের বাঁধনে বাঁধা পড়লেন।এর মধ্যেই হিন্দু ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রতি অনেকটাই আকৃষ্ট হয়ে পড়েন প্যাট্রিসিয়া। কলকাতা মায়াপুর সহ বিভিন্ন জায়গার মন্দিরে ঘুরে ফেলেছেন দু’জনেই। আর মন্দিরে প্রতিটি আচার অনুষ্ঠান নিষ্ঠা ভরে মেনেই হয়ে উঠলেন বাঙালি বধূ।মালাবদল থেকে সিঁদুর দান সবই দেখে দারুণ অনুভূতি হয়েছে প্যাট্রিসিয়ার। রেড লাইন ও রেড ডট এসব বিশেষ পছন্দ প্যাট্রিসিয়ার। কী অবাক হলেন! রেড লাইন হল সিঁদুর, রেড ডট হল টিপ। রেড লাইন ও রেড ডট এর সাজে নব বধূকে অপূর্ব সুন্দর লাগছিল। মন্দির চত্বরে একাধিক বিয়ে হলেও সকলের চোখ ছিল ‘মেম বউ’ এর দিকে।
ইন্টারন্যাশনাল ডেটিং সাইড থেকে ছাদনা তলার জার্নি পান্ডুয়ার সারদা পল্লির বাসিন্দা কুন্তল ভট্টাচার্যের সঙ্গে প্যাট্রিসিয়ার।প্রায়ই তাঁদের মধ্যে কথা বার্তা হত ডেটিং সাইটে। এরপর ক্রমে বন্ধু তারপর আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয় তাঁদের। লকডাউনের সময় কর্মসূত্রে দিল্লিতে থাকতেন কুন্তল। তবে এখন পান্ডুয়ায় থাকেন কুন্তল। কয়েকদিন আগে কুন্তলকে সারপ্রাইজ দিতে প্যারিস থেকে পান্ডুয়াতে পৌঁছেছিলেন প্যাট্রিসিয়া। তারপর কুন্তলের বাড়িতেই ছিলেন তিনি দীর্ঘদিন ছিলেন। সোমবার বিয়ের পর প্যাট্রিসিয়ার বাড়ি থেকেও ভারতে আসবে তাঁর বাড়ির লোক। হানিমুনে গোয়া যাওয়ার প্ল্যানও সেরে ফেলেছেন তাঁরা। বাঙালিরা একটু বেশি আপ্লুত, দেশের মাটিতে এমন প্রেমের বিশ্বজয়ের কান্ড দেখে। সকলের শুভেচ্ছায় ভরে উঠছে নব দম্পতির জীবন।