খাঁ খাঁ করছে সিঙ্গুরের জমি, নেই শিল্প নেই চাষ, বেকারত্বের জ্বালায় সরকারের কাছে কাতর আর্জি স্থানীয়দের
সিঙ্গুরের ইতিহাস সম্পর্কে প্রায় সকলেই অবগত। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে যে উত্তাল সমুদ্র নেমে এসেছিল তা আজ সবই ইতিহাসের পাতায়। কেটে গেছে বেশ কটা বছর। এই পরিস্থিতি স্থানীয় বা সিঙ্গুরবাসীদের অবস্থা এখন কেমন? চাষের জমিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন বা বলা চলে শাসকবিরোধী আন্দোলনের এতো বছর পর তাঁদের জীবনে কি এসেছে কোনো সাফল্যের রঙ? শিল্প সরিয়ে কৃষিকে আপন করে নেওয়া ভবিষ্যৎ কি তৈরি হয়েছে তাঁদের?
একসময় এই সিঙ্গুরের মাটিতেই এক বিরাট শিল্পের স্বপ্ন দেখিয়েছিল টাটা গোষ্ঠীর(TATA Group) কর্ণধর রতন টাটা(Ratan Tata)। আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি সিঙ্গুরবাসীর ভবিষ্যৎ তৈরি করবেন, সিঙ্গুরের ঘরে ঘরে মিলবে চাকরি। তবে সেই সময় রাজি হননি সিঙ্গুরবাসী। সেখানকার কৃষক মহল তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন চাষের জমিতে শিল্প গড়ার পরিকল্পনায়। ফলত শিল্প আর গড়ে ওঠেনি সিঙ্গুরে(Singur)। টাটা গোষ্ঠী ও ফায়ার গেছেন। তবে এত কিছুর পরেও চাষের জমিকে কি আদৌ বাঁচাতে পেরেছিলেন সিঙ্গুরবাসী? না ! সেখানে শিল্প গড়ে ওঠে নি ঠিকই তবে সেখানকার মাটিতে চাষও আর হয় না। সিঙ্গুরের সেই জমি যাকে নিয়ে এতোটা উত্তাল হয়ে পড়েছিল রাজ্য রাজনীতি, আজ সেই জমি বেকার পড়ে আছে। না গড়ে উঠলো শিল্প, না গড়ে উঠলো কৃষি। শুধুই নিরবতা, মানুষের কাতর আর্তনাদ ও এক নতুন শাসক শিবির।
আরও পড়ুন….School Reopen: ছাত্র-ছাত্রীরা করোনা আক্রান্ত হলে দায়বদ্ধতা কার? প্রশ্ন উঠছে রাজ্য জুড়ে
আজ সিঙ্গুরবাসীর গলায় আর্তনাদ, সুর আক্ষেপের। ঘরে বেকার ছেলে-মেয়ে, চাই শিল্প। সেই জমিতেই তাঁরা গড়ে তুলতে চান শিল্প কলকারখানা। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দেউচা পাচামির জন্য পুনর্বাসন প্রকল্প ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের একাংশের। এই প্রসঙ্গে এদিন অনুব্রত মন্ডল বলেন, “সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই সিধান্ত নেওয়া হয়েছে।” আর একথা প্রকাশ্যে আসতেই সিঙ্গুরবাসীর কাতর আবেদন যে, ‘সিঙ্গুরেও শিল্প হোক।’ প্রসঙ্গত, দেউচা পাচামিতে কয়লা খনির জন্য জমি অধিগ্রহণের ঘোষণা করতে গিয়ে সিঙ্গুরের ইতিহাসের (Singur History) স্মৃতিচারণা করতে ছাড়েন নি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, ‘মনে রাখবেন সিঙ্গুরে যেভাবে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল আমরা সেভাবে করবো না।’