Pet Cat Rescued – তিন দিন ধরে মগডালেই আটকে, উদ্ধারে ব্যর্থ দমকল, যুবকের তৎপরতায় মেলে সফলতা
উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) অশোকনগরের (Ashoknagar) পূর্ব মানিকনগর এলাকায় গত তিনদিন ধরে হইচই ফেলে দিয়েছে একটি পোষ্য বিড়াল। গত তিনদিন ধরে মানিকনগর এলাকার একটি বড় মগডালে উঠে বসে আছে পোষ্য বিড়ালটি। তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করতে হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে দমকল কর্মী থেকে পশুপ্রেমী সংগঠনগুলিকেও। অবশেষে দমকল কর্মীদের সহযোগিতায় সেই পোষ্যটিকে মগডাল থেকে নামিয়ে আনে এক স্থানীয় যুবক।
পূর্ব মানিকনগরের বাসিন্দা ব্যাঙ্ককর্মী কল্যান বালার (Kalyan Bala) বাড়ির পোষ্য বিড়াল তাঁদের আদরের ‘সানি’ (Sunny)। তাকে একেবারে নিজেদের পরিবারের সদস্যের মতনই অকথ্য স্নেহ করে কল্যান বালার মেয়ে মীণাক্ষী (Minakshi) ও বাকি পরিবার। কিন্তু, সোমবার রাতে অনেক খুঁজেও সানির দেখা পায়নি মীনাক্ষী। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির পিছনের বাগান থেকে সানির গলার আওয়াজ পাওয়া গেলে তারা গিয়ে দেখে যে বাগানেরই একটি গাছের মগডালে বসে আছে ‘সানি’। ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে গেছে সে, চেয়েও নামতে পারছে না সেই মগডাল থেকে।
প্রথমদিকে, বালা পরিবার তাকে নামানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন তাঁরা। কারণ অনেকটাই উপরে ছিল সানি। তারপর মঙ্গলবার বিকালে স্থানীয় এক পশুপ্রেমী সংগঠনে খবর দিতেই সন্ধাতেই সেখানে চলে আসেন পশু অধিকার কর্মী মৌ মণ্ডল (Mou Mondal)। একইসঙ্গে খবর দেওয়া হয় দমকল বিভাগকেও। দমকল কর্মীরা এসে প্রথমে একটি ৩৬ ফুট উঁচু মই লাগিয়ে গাছে উঠে বিড়ালটিকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও অপরিচিত লোকজন দেখে প্রচন্ড ভয় পেয়ে বিড়ালটি গাছের আরো উঁচু ডালের দিকে উঠে যায়। প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে চেষ্টা চালিয়েও উদ্ধার করা যায়নি বিড়ালটিকে। অবশেষে সেদিন রাত্রিবেলা চলে যেতে বাধ্য হন দমকল কর্মী ও পশুপ্রেমী সংগঠনের কর্মীরা।
আরও পড়ুন……..richest youtubers: ক্যারি মিনাটি থেকে সন্দীপ মাহেশ্বরী, জেনে নিন দশজন ধনীতম ইউটিউবারের আয়
পরের দিন অর্থাৎ বুধবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ আবার দমকল ও পশুপ্রেমী সংগঠনের কর্মীরা ফিরে আসেন কল্যাণ বালার বাড়িতে। আবারও উঁচু মই লাগানো হয়, দমকল কর্মীরা জানিয়েছেন সেই সময় প্রায় ৬০ ফুট উঁচুতে ছিল বিড়ালটি। প্রায় আড়াই ঘন্টা ধরে দমকল কর্মীদের বিভিন্ন ধরনের চেষ্টার পরেও যখন বিড়ালটি উঁচুতে উঠতে থাকে, তখন প্রায় দেবদূতের মতন করে এগিয়ে আসেন এলাকার এক স্থানীয় যুবক, রতন। মই বেয়ে গাছে ওঠার পর রতন গাছের ডাল কেটে মগডালের ওপর থেকে বিড়াল টিকে নিচের দিকে ফেলে। নিচে চাদর, জাল নিয়ে তাকে ধরার জন্য তৈরি ছিলেন দমকল কর্মীরা। সম্পূর্ণ তিনদিন ধরে একটানা গাছের মগডালে টানানোর পর উদ্ধার করা যায় সানিকে।
বালা পরিবার জানিয়েছেন, উদ্ধারের পর সানি বেশ সুস্থই আছে। তবে এই কদিন শীতে কষ্ট পেয়েছে বলে দিদি মীনাক্ষী তার গায়ের উপর একটা চাদর চাপা দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে এবং সেও বেশ নিশ্চিন্তেই ঘুমিয়েছে। তখন তার ঘুমন্ত নিষ্পাপ মুখটা দেখে মেনে নেওয়া দুষ্কর যে এই অবদান প্রানীটাই গত তিনদিন ধরে সবাইকে নাস্তনাবুদ করে তুলেছিল।