গৃহে মদ্যপানের আসরেই গৃহবধূকে ধর্ষণ, আবার অ্যাসিড হামলাও
শ্বশুরবাড়িতে চলছিল মদ্যপানের আসর। আসর বসায় ওই গৃহস্বামী এবং তাঁর দুই জামাইবাবু। অতিরিক্ত মদ্যপানের পর চলে একাধিকবার ধর্ষণ। এখানেই শেষ নয়, অ্যাসিড হামলাও করা হয় ধর্ষিতার উপর। ১৮ বছরের যুবতী মিনার (পরিবর্তিত নাম) সঙ্গে তাঁর এলাকারই এক যুবক ২০ বছর বয়সী সিরাজুল মোল্লার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সোনার গয়না এবং বাড়ি নির্মাণের জন্য ১০ লক্ষ টাকার বেশি পণ নেয় সিরাজুল। তারপর বিয়ের প্রথম তিন মাস বেশ ভালই কাটছিল। সুখেই সংসার করছিলেন ওই যুবতী।
কিন্তু তিন মাস কাটতেই শুরু হয় দোটানা। হঠাতই পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে সিরাজুল। কিন্তু বাপের বাড়ি তরফে পণ দিতে না পারায় বধূর উপর নেমে আসে অকথ্য অত্যাচার। তাঁকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে অত্যাচার করে স্বামী এবং তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকী কয়েক বার কেরোসিন দিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও দাবি বধূর বাপের বাড়ির লোকজনের। পাশাপাশি প্রতিনিয়ত আত্মহত্যার প্ররোচনাও চলেছে বলে জানিয়েছেন মিনা। এরপর গত ৫ অক্টোবর ঘটে যায় সেই চাঞ্চল্যকর ঘটনা। মিনার অভিযোগ, সেদিন বাড়িতে মদ্যপানের আসর বসায় সিরাজুল এবং তাঁর দুই জামাইবাবু। অতিরিক্ত মদ্যপানের পর দুই জামাইবাবু গিয়াসউদ্দিন মোল্লা এবং শেখ বাবলু মোল্লা তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এদিকে বধূর আর্ত চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন।স্থানীয়রাই তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
মিনা আরও জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি তাঁর স্বামী সিরাজুলকে জানালে তিনি প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা, উল্টে তাঁর উপর আরও অত্যাচার করতে থাকেন। এরপর ওই গৃহবধূ বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে সিরাজুলের এক জামাইবাবু গিয়াসউদ্দিন মোল্লাকে ইতিমধ্যে আটক করেছে পুলিশ। কিন্তু তারপরও মিনকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর ও হুমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। তিনি ভয় পেয়ে বাপের বাড়িতে চলে যায়। কিন্তু তাতেও নাছোড় স্বামী। এদিন বিদ্যাধরী নদী সংলগ্ন এলাকায় স্ত্রী মিনাকে অ্যাসিড মারার চেষ্টা করে অভিযুক্ত স্বামী সিরাজুল এবং তার দুই সঙ্গী। অকুস্থলে হঠাতই স্থানীয় বাসিন্দারা চলে আসায় সেখান থেকে সোজা চম্পট দেয় অভিযুক্তরা।
আরও পড়ুন….কেন্দ্র বন্ধ করলেও চালু থাকবে বিনামূল্যে রেশন প্রক্রিয়া, এমনই বার্তা খাদ্যমন্ত্রীর
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরনা জেলার বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া থানা এলাকায়। এই ঘটনার পর ফের হাড়োয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মিনা। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বধূ এবং বধূর বাপের বাড়ির লোকজন ঘটনায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।