IIEST Shibpur: হিন্দু-হিন্দুত্বের ছোঁয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, অভিযোগ, গীতা মাধ্যমে গৈরিকীকরণের

সেখানকার ছাত্র-ছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা পর্যন্ত সকলেরই কাজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে। সেই শিবপুর(Shibpur) আইআইইএসটি(IIEST)-তে প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ‘ইনডাকশন’ বা অন্তর্ভুক্তির ভার্চুয়াল কর্মশালায় ভগবতগীতা ও হিন্দু(Hindu) ধর্মের মাহাত্ম্য প্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও আধিকারিকদের একাংশের প্রশ্ন বিজ্ঞান প্রযুক্তি নিয়ে পড়তে আসা ছেলে-মেয়েদের এসব গেলানো-বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে কেন? এই কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ধর্মের ছেলেমেয়েরাই পড়াশোনা করতে আসে। তাঁদের সামনে এই ভাবে শুধুই হিন্দু ধর্মের প্রচার কেন হবে?
আইআইইএসটি(IIEST)-তে শুরু হয়ে গিয়েছে স্নাতক(Graduation) প্রথম বর্ষের(1st Year) ছাত্রছাত্রীদের(Students) ক্লাস। সেই পড়ুয়াদের অন্তর্ভুক্তি ভার্চুয়াল(Virtual) কর্মশালা চলছে কয়েকদিন ধরেই। ইতিমধ্যে এই কর্মশালার চতুর্থ দিনে অভিযোগ(Allegation) উঠছে শিক্ষায় গৈরিকীকরণের। বস্তুত, অভিযোগ উঠেছিল কর্মশালার প্রথমদিনেই। সেই দিন চিফ ওয়ার্ডেন সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় যখন নবাগতদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য পেশ করছিলেন, তখন তাঁর পরিচয় দেখানো হয়েছিল অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের(AVBP) রাজ্য সভাপতি হিসাবে। ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও আধিকারিকদের একাংশের প্রশ্ন সুদীপ্তবাবু যদি এভিবিপি-র রাজ্য সভাপতি হয়েই থাকেন, তা হলেও কেনই বা সেই পরিচয় অনলাইন কর্মশালায় দেখানো হল? এই প্রশ্নের জবাবে সুদীপ্তবাবু জানিয়েছিলেন, “গোটা বিষয়টিই তাঁর অজান্তে হয়েছে। একবার লিঙ্ক কেটে যাওয়ার পরে ফের যখন ঢুকে ছিলেন, তখন কোনও বিভ্রান্তির ফলে ওই ‘পরিচয়’ দেখিয়েছে।
কিন্তু এই ধরনের কাজের অন্ত এখানেই ঘটেনি। কর্মশালার দ্বিতীয় দিন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি দেখিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বোঝানো হয়, তিনি কীভাবে সারা দেশের দু’কোটি যুবককে প্রতিবছর চাকরি দিচ্ছেন। কর্মশালায় এই ধরনের আলোচনার জেরে বেশ অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে একাংশের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং আধিকারিকদের মধ্যে। তবে শনিবার অর্থাৎ কর্মশালার চতুর্থ দিন গৈরিকীকরণের সমস্ত চেষ্টা সীমানা ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এদিন, কর্মশালা বক্তাদের তালিকায় না-থাকা এক ব্যাক্তিকে এনে বিজ্ঞানচর্চার এই প্রতিষ্ঠানে, ভগবদ্গীতা ও হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম্য প্রচার করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে গীতা বা হিন্দু ধর্মের কি যোগ? তাঁদের এ-সব বোঝানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে কেন? শুধু তো হিন্দু নয়, এই প্রতিষ্ঠানে পড়তে আসেন অন্যান্য ধর্মের ছেলেমেয়েরাও। তা হলে কি এখানে অন্যান্য ধর্মেরও প্রচার চালানো হবে? যদি তা না-হয় তা হলে শুধুই হিন্দু ধর্মের কেন প্রচার কেন?
আরও পড়ুন…….KMC election 2021: বোমাবাজি থেকে রক্তপাত, সি ভোটার সমীক্ষায় কার পক্ষে কলকাতা
এই কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে কোনও ধরনের রাজনৈতিক কাজকর্ম করা যাবে না। তা হলে এরপরও কেন শিক্ষায় গৈরিকীকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে?- এমনটাই অভিযোগ শিক্ষক ও পড়ুয়া মহলে। বিরক্ত আধিকারিকদের একাংশ। অভিযোগের তির মূলত প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা পার্থসারথী চক্রবর্তীর দিকে। অভিযোগ, তিনি বারাণসীর আইআইটি বিএইচইউ থেকে এসে শিবপুর আইআইইএসটি-র দায়িত্ব নেওয়ার পর বিভিন্ন সময় শিক্ষায় গৈরিকীকরণের চেষ্টা করা হয়েছে এবং হচ্ছে। ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম ভিত্তি বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান ভিত্তিক চেতনা। এই ধরনের কার্যকলাপের জেরে তাতেও আঘাত আনা হচ্ছে বলে মতামত একাংশের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এই ঘটনায় সংস্থার অধিকর্তার বক্তব্য জানতে তাঁকে ফোন ও মেসেজ উভয় করা হলেও, তাঁর তরফে কোনও রকমের জবাব মেলেনি।