এম.এ -বি.এড পাস, স্বপ্ন শিক্ষকতা, জুতো সেলাই করেই দিন টেট উত্তীর্ণ সুভাষের

অনীশ দে, কলকাতা: ভাগ্যের পরিহাস। ছেলেবেলায় পড়ার জন্য জুতো সেলাই করতেন। এম.এ, বি.এড পাশ করেও মেলেনি চাকরি। তাই এখনও জুতো সেলাই করতে হচ্ছে। জুতো সেলাই করে যা পান তাতে সংসার চলে না তাই বিয়েটাও করতে পারেননি। এইভাবেই কোনরকম জীবন কেটে যাচ্ছে সুভাষচন্দ্র দাসের। উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের (Hingalganj) গবিন্দকাটি গ্রামে অবস্থান তাঁর। ছেলেবেলা থেকেই লেখাপড়া খুব ভালোবাসতেন। তাও লেখাপড়া করেও কেন মিলল না চাকরি?

ইতিহাস নিয়ে এম.এ পাশ করার সময়ই শিক্ষকতাকে নিজের পেশা হিসেবে বেছে নেন সুভাষ। পরবর্তীতে স্থানীয় বিধায়কদের সাহায্যে বেসরকারি কলেজ থেকে বি.এড পাশ করেন তিনি। তৎকালীন স্থানীয় বিধায়ক গোপাল গায়েন এবং বর্তমান বিধায়ক দেবেশ মন্ডল যথেষ্ট সাহায্য করেছেন সুভাষকে তবুও আজ কেন এই হাল তাঁর? ২০১৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক টেট (TET) পরীক্ষা দেন তিনি। উত্তীর্ণ হন, পরে ইন্টারভিউ হলেও মেলেনি চাকরি (TET)।

ssc 3

আর সেখানেই প্রশ্ন, তবে কি সুভাষচন্দ্র দাস দুর্নীতির শিকার (TET)? এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “নিয়োগ-সংক্রান্ত দুর্নীতির খবরগুলি দেখে মনে হয়, স্বচ্ছ ভাবে নিয়োগ হলে আমি এতদিনে কোনও বড় স্কুলে ইতিহাসের শিক্ষক হয়ে ছাত্র পড়াতাম।” মাসের শেষে হাতে দুই থেকে তিন হাজার টাকা উপার্জন করেন সুভাষ বাবু। সকালের দিকে দুস্থ বাচ্চাদের ইতিহাস পড়ান তিনি। মূলত পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণীর পড়ুয়া তাঁর। একসময় নিজের পড়াশুনার জন্য ট্রেনে ট্রেনে জুতো সেলাই পর্যন্ত করেছেন তিনি।

ssc 2

সেই প্রসঙ্গে সুভাষচন্দ্র বলেন, “খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছি। ২০০৭ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ পাশ করি। শিক্ষক হওয়ার জন্য বিএড করা জরুরি ছিল। প্রয়োজন ছিল লাখখানেক টাকা। ট্রেনে ঘুরে জুতো সেলাই করে টাকা জমানো শুরু করি।’’ ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী এবং তিনি থাকেন এক বাড়িতে। সুভাষের মা আগের বছরই মারা গিয়েছেন। সুভাষ জানান, “খুব কষ্ট করে পড়াশোনা করেছি। ২০০৭ সালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ পাশ করি। শিক্ষক হওয়ার জন্য বিএড করা জরুরি ছিল। প্রয়োজন ছিল লাখখানেক টাকা। ট্রেনে ঘুরে জুতো সেলাই করে টাকা জমানো শুরু করি।’’




Back to top button