বর কোথায়? সমাজের প্রশ্নের তোয়াক্কা না করে নিজের কপালে নিজেই সিঁদূর পরালেন গুজরাতের ক্ষমা

অনীশ দে, কলকাতা: সবাইকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নির্ধারিত সময়ের দুইদিন আগেই বিয়ে সেরে ফেললেন ক্ষমা বিন্দু। গুজরাট নিবাসী ক্ষমা বিন্দু (Kshama Bindu) কয়েকদিন আগেই জানান তিনি নিজেই নিজেকে বিয়ে করতে চান। ক্ষমার ‘নিজকমীতা’ যে ভারতবর্ষে এই প্রথম তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ক্ষমার এই কথা শুনে বিজেপি নেত্রী সুনিতা সুক্ল (Suneeti Shukla) এর তীব্র বিরোধিতা জানান। তার দাবি, এমন কাজ করলে জনসংখ্যা কমে যাবে।
কিন্তু তারপরে ক্ষমা যা করলেন, তা দেখে নেটিজেনদের চক্ষু চড়কগাছ। আসলে ১১ জুন নিজেকে বিয়ে করার কথা ঘোষণা করেন ক্ষমা। কিন্তু বিজেপি নেত্রীর হুসিয়ারিতে কান না দিয়ে দুদিন আগেই পরিণয় পর্ব সারলেন ক্ষমা বিন্দু (Kshama Bindu)। যথারীতি প্রত্যেকটি নিয়ম মেনে বিয়ে সারেন ক্ষমা। নিয়ম মেনে গায়ে হলুদ সারেন তিনি। ৪০ মিনিট ধরে চলা এই বিয়েতে শেষমেশ নিজেই নিজেকে সিঁদুর পরিয়ে দেন ক্ষমা (Kshama Bindu)।
ইতিহাসে প্রথমবার বিয়ের পিঁড়িতে শুধুমাত্র কোন এবং পুরোহিত উপস্থিত রইলেন। বিয়ের পর ক্ষমা জানান, ‘ অন্যান্য মেয়েদের মত আমাকে নিজের বাড়ি ছেড়ে যেতে হবে না, এটা ভেবেই খুব ভালো লাগছে’। ২৪ বছর বয়সী এই মহিলা সারা দেশের মানুষকে এই ঘটনার মাধ্যমে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। আগে আগে বিয়ে করার জন্যে যথার্থ যুক্তিও দিয়েছেন ক্ষমা। তিনি জানিয়েছেন, ‘ আমি চাই না আমার বিয়ে কোনও ঝামেলা হোক। আমি আমার বিয়েতে খুব মজা করতে চেয়েছিলাম তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই বিয়েটা সারলাম’।
ক্ষমা আরও জানান, ‘ আমি অনেকদিন থেকেই জানার চেষ্টা করছিলাম আমার আগে কেউ নিজেকে বিয়ে করেছেন কিনা। কিন্তু তেমন কোনো উদাহরণ আমার নজরে পড়ে না। আমিই হয়তো ভারতবর্ষে প্রথম যে নিজেকে বিয়ে করতে চলেছি।’ বিন্দুর মতে, ‘ এই বিয়ের মাধ্যমে আমি নিজের সাথে এক গভীর বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছি। তা ছাড়াও আমার সমস্ত ভালোবাসা তোলা থাকবে আমার নিজের জন্যেই এটাই সবচেয়ে ভালো ‘।
নিজেকে বিয়ে করার এই রীতিকে বলে সলোগামি (Sologamy)। এই তত্ত্বের সমর্থকরা বলেন এই রীতির মাধ্যমে সারাজীবনের জন্য নিজের প্রতি নিজের ভালোবাসা থেকে যায়। যা আপনাকে প্রত্যেক মুহূর্তে আনন্দ দেয়। কিন্তু এর বিপক্ষেও রয়েছে কিছু যুক্তি। এখনও পর্যন্ত কোনো দেশে এই প্রথা আইনি স্বীকৃতি না পেলেও সারা বিশ্বে বাড়ছে সলোগামির সংখ্যা। বিশেষ করে আজকের দিনের মেয়েরা নিজেদের ভালোবাসার জন্যে বেছে নিয়েছেন এই অভিনব পন্থা।