ধর্মের বেড়াজাল টপকে মুসলিম পিতা-পুত্রের তৈরি রাম মূর্তি অযোধ্যায়
কাজের নমুনা অনলাইন মাধ্যমে সামনে এসেছিল। আর তার ওপর ভর করেই সুদূর অযোধ্যায় নির্মীয়মান রাম মন্দিরের মূর্তি তৈরির বরাতটাও আসে তাঁদের কাছে।

দেশজুড়ে (India) যেভাবে বারংবার হিন্দু-মুসলিমদের (Hindu-Muslim) মধ্যে বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক টানাপোড়নের ঘটনা সামনে এসেছে, তানিয়ে চর্চায় ছিল দেশ। সেই সমস্ত বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনাকে দূরে সরিয়ে রেখেই এই দেশ বারংবার জাতি- ধর্ম-বর্ণের বাধাকে টপকে সম্প্রীতির বন্ধনে সবাইকে আবদ্ধ করেছে।
সেই ছবিই এবার ফুটে উঠল রাম মন্দিরের (Ram Mandir) সৌজন্যে। এমনিতেই, সাম্প্রতিক সময়ে সমগ্র দেশের মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে এই মন্দির। নির্মাণকাজ থেকে শুরু করে মন্দিরের আয়তন এবং অসাধারণ সব শিল্পকর্ম অবাক করেছে প্রত্যেককেই। এমন পরিস্থিতিতে, জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে রাম মন্দিরে ভগবান রামের যে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হবে সেই মূর্তি তৈরি করেছেন পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার দুই শিল্পী।
সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তাঁরা মুসলিম। অর্থাৎ, ধর্মীয় বেড়াজালকে টপকে রাম মন্দির তৈরি করে ফেলল এক অনবদ্য নজির। ওই দুই শিল্পীর নাম হল মহম্মদ জামালউদ্দিন এবং তাঁর পুত্র বিট্টু। কাজের নমুনা অনলাইন মাধ্যমে সামনে এসেছিল। আর তার ওপর ভর করেই সুদূর অযোধ্যায় নির্মীয়মান রাম মন্দিরের মূর্তি তৈরির বরাতটাও আসে তাঁদের কাছে। এই প্রসঙ্গে মহম্মদ জামালউদ্দিন জানিয়েছেন যে, ‘মাটির তুলনায় ফাইবারের মূর্তি তৈরি করার বিষয়টি সবসময়েই খরচ সাপেক্ষ। যদিও, আউটডোর ইনস্টলেশনের ক্ষেত্রে ফাইবারই সবথেকে ভালো।’ মূর্তি তৈরি করতে প্রায় ২.৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
এদিকে, বিষয়টি সামনে আসার পরেই স্বাভাবিকভাবেই জামালউদ্দিন এই প্রশ্নের সম্মুখীন হন যে একজন মুসলিম হয়ে রাম মন্দিরের মতো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা মন্দিরের হিন্দু দেবতার মূর্তি তৈরি করে তাঁর অনুভূতি ঠিক কি? এর উত্তরে জামালউদ্দিন বলেন, ‘একজন শিল্পী হিসেবে এই বিষয়টি আমার কাছে সৌভাতৃত্বের বার্তা। সাম্প্রদায়িক বিভেদের এই আবহে আমাদের আরও বেঁধে বেধে থাকতে হবে। ধর্ম প্রত্যেকের ব্যক্তিগত বিষয়। আমাদের দেশে বহু ধর্মের মানুষই বসবাস করেন। তবে আমি ভগবান রামের মূর্তি তৈরি করতে পেরে সত্যিই আনন্দিত।’