ভ্যাপসা গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে খান পান্তা ভাত! একনজরে বিশ্বসেরা এই বাঙালি খাবারের রেসিপি

মন্টি শীল, কলকাতা : যারা মোটের উপর খাদ্য রসিক তারা অনেকেই এই বিশেষ পদটির সঙ্গে পরিচিত। সাধারণত রোজ সকালে কাজে বেরোনোর আগে এই বিশেষ পদটির দ্বারা নিজের প্রাতরাশ সম্পূর্ণ করে থাকেন। নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কোন পদের কথা বলা হচ্ছে, এর নাম হল পান্তা ভাত (Panta Bhat)। বেশির ভাগ বাড়িতেই, বিশেষত শ্রমিক, দিনমজুর শ্রেনীর মানুষেরা এই জনপ্রিয় পদটিকে ভোজনের উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। কারণ এই শ্রমিক শ্রেণীর কাজ সাধারণত খুব পরিশ্রমের হয়।
বইতে হয় বিভিন্ন ধরনের ভারি জিনিস যেমন সিমেন্ট, বালি, ইট কাঠ সহ নির্মাণের একাধিক উপাদান। আর এই অক্লান্ত পরিশ্রমের সময় ক্লান্তির কোনও স্থান নেই। যার দরুন এই পান্তা ভাতের দিকেই ঝোঁকেন একাধিক শ্রমিক শ্রেণীর মানুষ। তবে আজ যার কথা বলা হচ্ছে তিনিও একদা খুব পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন। তার নাম হল জগন্নাথের বাবা মদনমোহন। প্রথম জীবনে তিনি জোগাড়ের কাজ করলেও পরবর্তী সময়ে তিনি একজন রাজমিস্ত্রি হয়ে উঠেছিলেন। তবে বর্তমানে জগন্নাথও জোগাড়ের কাজ করেন। জানা গিয়েছে, কাজের দরুন দুবেলা পান্তা ভাত খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তার বাবা মদনমোহন।
অনেকই বলে থাকেন, খাওয়ারের এই বিশেষ পদটি রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে, শরীরে শক্তি আসে। তবে এই কথা শোনার পর অনেকেই কৌতুকের সুরে বলেছেন, মাছ, মাংস, ডিমের বদলে কেবল পান্তা ভাতে শক্তি সঞ্চয় করতে সহায়তা করে তা অভাবনীয়। কিন্তু এই পান্তা ভাতের প্রশংসা করেছেন দেশের তাবড় তাবড় চিকিৎসকরা। সম্প্রতি AIIMS-এর গবেষণা অনুসারে জানা গিয়েছে, এই পান্তা ভাত রোগ প্রতিরোধ করতে ভীষণ ভাবে সক্ষম। সাধারণত এই পদটির প্রচলিত রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশেও।
বাংলায় এই পান্তা ভাত কেবল একটি পদ হিসেবে বাবহার করা হলেও, ওড়িশাতে এটি একটি ঐতিহ্যবাহী পদ হিসেবে পরিচিত, যার নাম ‘পোখলা ভাত’। সাধারণত, আগের দিনের জল ঢালা ভাতের মধ্যে গন্ধরাজ লেবু, কাঁচা তেল, নুন লঙ্কা এবং কাঁচা পেঁয়াজ সহযোগে তৈরি হয় এই পান্তা ভাত। যদিও অনেকে আবার এর সঙ্গে রকমারি ভাজা, আচার এবং আরও বিভিন্ন ধরনের পদ ব্যবহার করেন। যা তৈরী হওয়ার পর একেবারে চেটে পুটে খান ধনী দরিদ্র সকলেই।
তবে এই তীব্র তাপপ্রবাহের দিনে কাজে শক্তি এবং মনোবল বৃদ্ধি করতে এই পদ খাওয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন অনেকেই। এমনকি সুস্থ থাকার জন্যও চিকিৎসার এই পান্তা ভাতের পরামর্শ দেন, কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। তবে দরিদ্র গরীব শ্রেনীর এই পদ কে গবেষকরা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে স্বীকৃতি দিলেও পরিশ্রমী মানুষের কাছে এই পদ বংশগত ভাবে ভোজনের উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয় হয়েছে তা বলাই যায়।