মাটির নীচে ৪০০ বছর পুরানো মন্দির! দর্শন করলে আজই পূর্ণ হবে জীবনের সকল ইচ্ছা

অনীশ দে, কলকাতা: ভারতবর্ষ এবং ধর্ম একে অপরকে ছাড়া অসম্পূর্ণ। আমাদের দেশের ইতিহাসে লুকিয়ে রয়েছে এমন কিছু অজানা তথ্য যা জানলে আপনিও চমকে উঠবেন। ভারত সহ তার পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতে হিন্দু ধর্মের নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্য ছড়িয়ে রয়েছে। কালের নিয়মে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে সেই নিদারুণ সৃষ্টিগুলি হারিয়ে গেছে। তবে ভারতে এখনও অক্ষত সেই সমস্ত ইতিহাস। আমাদের দেশের উত্তর ভাগে অর্থাৎ গোবলয়ে হিন্দু ধর্মের যুগান্তকারী সৃষ্টি রয়েছে। তারই একটা পাতালেশ্বর মন্দির (Pataleshwar Shiva Temple)। রাজস্থানের (Rajasthan) জয়পুরে (Jaipur) অবস্থিত এই মন্দিরের স্থাপনা হয় প্রায় ৪০০ বছর আগে।
মন্দিরটি কে বা কারা তৈরি করেছিলেন সেই সম্পর্কে কোনও অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ভূগর্ভের নিচেই বা এই মন্দিরের অবস্থান কেন? সেই সম্পর্কেও পুরাতত্ত্ব বিভাগ অবগত নয়। বিজ্ঞানীরা অবশ্য জানিয়েছেন মাটির স্তর দিন দিন বাড়তে থাকায় এই মন্দিরটি (Pataleshwar Shiva Temple) ভূগর্ভস্থ হয়েছে। তবে কিছু ভক্তেরা মনে করেন, কালাজাদু ও তন্ত্র সাধনার জন্যেই খাস তৈরি হয়েছিল এই পাতালেশ্বর মন্দির। কিন্তু এই মন্দির তৈরির আসল উদ্দেশ্য কী? সেই দিকে কেউ যথেচ্ছ আলোকপাত করতে পারেনি।
১৯৭৭ সালে প্রথম পুরাতত্ত্ব বিভাগের খনন কার্যের ফলে আবিষ্কার করা হয় এই মন্দির। খননের পর দেখা যায় এই মন্দিরটি মাটি থেকে প্রায় ২০-২২ ফুট নিচে। শিবরাত্রির সময় এই মন্দিরের শোভা যেন বেশ কিছুগুন বাড়িয়ে দেন ভক্তেরা। ধুমধাম করে পালন করা হয় প্রত্যেকবারই শিবরাত্রি। আসুন জেনে নিই এই মন্দিরের কিছু বিশেষত্ব এবং নিয়ম:
সপ্তাহের সাতদিনই ভক্তের জন্যে খোলা থাকে এই মন্দিরের দ্বার। ভোর ৫টা থেকে শুরু হয় দর্শন এবং তা চলে প্রায় ১২টা পর্যন্ত। কিন্তু সকালের দিকে কাজে ব্যস্ত থাকায় অনেকেই দর্শন করতে পারেন না। তাই তাদের জন্য বিকেল ৪টা থেকে ৬-৬:৩০ মিনিট পর্যন্ত মন্দিরে দর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকালের ভোগ ও আরতির সময়- ৭টা এবং একঘন্টা পরে অর্থাৎ ৮টা নগদ পুজো সম্পন্ন হয় মহাদেবের। সন্ধ্যা এবং শয়ান আরতি হয় বিকেল ৬টায়।
এছাড়াও ব্লগারদের জন্যে রয়েছে সুখবর। মন্দিরের ভিতরে ক্যামেরা নিয়ে ঢুকতে কোনো রকম নিষেধ নেই। এমনকি আলাদা করে টাকাও দিতে হবে না। এই মন্দিরে যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় অক্টোবর এবং মার্চের মাঝামাঝি। যাতায়াতের পথ অত্যন্ত সুগম। ট্রেন বা প্লেনে করে আপনাকে নামতে হবে জয়পুর। তারপর সেখান থেকে চলে যেতে হবে ইন্দ্রপুরী, পুরানি বস্তিতে। সেখানেই অবস্থিত এই ভূগর্ভস্থ পাতালেশ্বর শিব মন্দির।