ট্যাবুতে আটকে ছিল টিকাকরণ, ভারতের ‘গাঁজার’ গ্রামের বাসিন্দাদের অদ্ভূত ধর্মবিশ্বাস শুনলে অবাক হবেন
করোনা টিকে নিয়ে আম-আদমির ছুতমার্গ শুরুতে যতটা ছিল বর্তমানে তা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। এমনকী টিকাকরণ পর্বের শুরুতে করোনা টিকার প্রস্তুতি নিয়ে ইসলামী ধর্মাবলম্বীদের ভাববেগেও আঘাত লাগার কথা শোনা যায়। কিন্তু তারপর কেটেছে অনেকটা সময়। এদিকে ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রায় সমস্ত মানুষকে করোনা টিকা দিয়ে নয়া রেকর্ড গড়ে ফেলেছে হিমাচল প্রদেশ। এমনকী দেশের প্রথম রাজ্য হিসাবে এই শিরোপা নিজেদের পকেটে পুড়েছে হিমাচল প্রশাসন। কিন্তু মাত্র একটি গ্রামের কারণেই অধরা থেকে যাচ্ছিল লক্ষ্যমাত্রা।
কথা হচ্ছে ভারতবর্ষের প্রাচীনতম গণতান্ত্রিক গ্রাম হিমাচলের মালানা নিয়ে। এই গ্রামের মানুষদের বিশ্বাস তারা মূলত গ্রীক বীর আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের বংশধর। সামাজিক ‘ট্যাবুর’ কারনেই শুরুতে টিকা নিতে অস্বীকার করে গোটা গ্রাম। তাদের একমাত্র দেবতার নাম ‘জমলু ঋষি। এমনকী এই এলাকার বাসিন্দাদের বিশ্বাস যে কোনও বিপদ থেকে তাদের রক্ষা করবে ‘জমলু ঋষিই’। বরং ভ্যাকসিন নিলে হতে পারে ক্ষতি।
সূত্রের খবর, বর্তমানে গ্রামবাসীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপআলোচনার পর তাদের টিকা দিতে সমর্থ হয়েছে হিমাচল প্রশাসন। এদিকে উল্লেখযোগ্য ভাবে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় ভারত যখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে তখন ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত তৈরি করেছিল হিমাচলপ্রদেশের ছোট্ট গ্রাম মালানা। কারণ এই গ্রামে এখনও পর্যন্ত করোনা সংক্রমণের সংখ্যা একেবারে শূন্য। এদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দশ হাজার ফুট উচুতে থাকা এই গ্রামকে অনেকে ‘মালানা নালা’ নামেও ডেকে থাকেন।
এদিকে গ্রামের মাদকদ্রব্যের মধ্যে বিশ্বে চরস খুবই বিখ্যাত। হিমালয়ের এই অঞ্চলে উৎপাদিত গাঁজা থেকে তৈরি করা চরসের সুনাম পৃথিবী জোড়া। যা মানালা ক্রিম নামেও খ্যাত। আর এই কারণে প্রতিবছর দেশ হোক বা বিদেশ, বিপুল সংখ্যক মানুষ এই গ্রামে যান। মালানা গ্রামবাসীর মূল অর্থনৈতিক উৎসও এই মাদক ব্যবসা। এমনকী এই গ্রামের গাঁজাও বহুমূল্য।