Lakshmi Narayan Shaw and Sons: বাঙালির ১০০ বছরের চপের গল্প, যে দোকানের তেলেভাজা ভালবাসতেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র

প্রায় শতক আগে। স্বদেশি আন্দলোনে গোটা দেশ কাঁপছে। গোপনে গোপনে চলছে একাধিক মিটিং। নতুন ভোরের আশা নিয়ে প্রতিদিন কোনও না কোনও আন্দোলন চলছে দেশের নানা প্রান্ত জুড়ে। সে এক কালের কথা। প্রত্যেকটা দিন সাধারণের কাছে হয়ে উঠছিল যুদ্ধ পরিস্থিতি। তবে এত সব কিছুর মাঝেও বাঙালির একটি অভ্যাস ছিল প্রতিদিনের। দেশ জুড়ে স্বদেশি আন্দোলন, উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেও চপের রেওয়াজ তখনও কিন্তু ছিল বেশ। এই সময়কালেই বিহারের গয়া হয়ে খেঁদু সাউ খুলেছিলেন তেলেভাজার দোকান।
তৎকালীন সময় এখনকার মতো ভির হতো না ঠিকই, কিন্ত মানুষের কাছের খেঁদুর চপ ছিল বেশ জনপ্রিয়। বেগুনি, পিঁয়াজি, কাশ্মীরি চপ আর প্রতিদিন সকালে ফুলুড়ি এই ছিল খেঁদু সাউয়ের দোকানের রোজনামচা। পরবর্তীকালে লক্ষ্মীনারায়ণ সাউ এন্ড সন্স ( Lakshmi Narayan Shaw and Sons ) নামে খেঁদুর দোকানের আত্মপ্রকাশ। মানুষের মনে বেশ অনেকটা জায়গা করে নিয়েছিল তাঁর তেলেভাজা। আর সত্যি বলতে, শুধুই সেকাল নয় একালেও একই ভাবে জনপ্রিয়তার সঙ্গে উত্তর কলকাতার তেলেভাজার রাজা এই লক্ষ্মী নারায়ণ সাউ এন্ড সন্স। সেকালের মতো আর একালে ওই হাতেগোনা তেলেভাজা নিয়ে চলে না দোকান। কেষ্টকুমাারের আমলে দোকানে শুরু হয়েছে নানা নতুন আইটেম।
তবে এই দোকানের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় কাহিনি আবার নেতাজিকে ( Netaji Subhas Chandra Bose ) নিয়ে। স্বয়ং সুভাষচন্দ্র বসু নাকি এই দোকানে তেলেভাজা খেতে ভীষণ ভালবাসতেন। আসলে সেখানে দোকানের আশেপাশেই নানা ডেরায় গোপন মিটিং স্বদেশিদের। সেখানে মুড়ি-তেলেভাজা দেওয়ার নিয়মিত বরাত পেতেন খেঁদু সাউ। তেমনি কোনও এক মিটিংয়ে এসেছিলেন স্বয়ং সুভাষচন্দ্র বসু। খেঁদুর তেলেভাজা খেয়ে মুগ্ধ হয়ে যান নেতাজি। তেমনি নেতাজির সঙ্গে দেখা করে ঈশ্বর দেখার মতো ছিল খেঁদুর কাছে। আর সেই দেখায় এতটাই মুগ্ধ হয়েছিল সে যে, এরপর ১৯৪২ সাল থেকে নেতাজির জন্মদিনে বিনামূল্যে তেলেভাজা বিতরণ শুরু করে দেয় সে। আর সেই মুগ্ধতা আজও মাত্রা ছাড়া। তবে শুধু সুভাষচন্দ্র বসুই নয়। আরও বহু বিখ্যাত মানুষের পদধূলী পড়ে ছিল খেঁদুর দোকানে।