Bhutan:রোমাঞ্চে মোড়া খুশির দেশ ভূটান, ছুঁয়ে দেখবেন নাকি সৌন্দর্য নগরী?

স্বপ্ন সুন্দরী ভূটান। তাঁর মায়াবী সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যাবেন রুক্ষ বিষয়ী মানুষও। প্রত্যেকেই কল্পনায় নিজের দেশকে যেমন দেখতে চান, ভূটান সেই আদর্শ দেশ। যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক স্থান, ঐতিহ্য বহনকারী স্থাপত্য চোখ ধাঁধিয়ে দেবে মূহূর্তেই। এখানকার স্থানীয় মানুষের ব্যবহার অতীব মধুর, এত আপ্যায়ন আর আন্তরিকতায় মোড়া শহর বড়ো একটা দেখা যায় না। এছাড়াও রয়েছে উপরি বিস্ময়। অপূর্ব সব খাবার আর রঙিন উৎসব আপনার ভূটান ভ্রমণকে স্মরণীয় করে রাখতে পারে। তবে এমন কী কী অত্যাবশ্যকীয় জিনিস রয়েছে যা ভূটান ভ্রমনে একদম মিস করা চলবে না। চলুন আজই করে ফেলি আপনার ভূটান সফরের পরিকল্পনা:
ভূটানে রোড ড্রাইভিং হোক বা আকাশ পথে উড়ান হোক দুটোই ভীষণ রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার স্বাদ এনে দেবে আপনাকে। যারা ট্রেকিং করতে ভালোবাসেন, ছুটি পেলেই ছুটে যান পাহাড়ের কোলে তাদের জন্য আদর্শ জায়গা ভূটান। ভূটানের যাত্রা পথেই আপনার চোখে পড়বে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া,এই দেখে জীবন সার্থক করে দেওয়ার মতো অনুভূতি হতে বাধ্য। পারো বিমানবন্দরে অবতরণ করা কিন্তু সহজ ব্যাপার নয়, বিশ্বের সবচেয়ে জটিল টেক-অফ গুলোর মধ্যে একটি। দিল্লি বা কাটমন্ডু থেকে ফ্লাইটে উঠলে চোখে জুড়িয়ে যাবে যখন দেখবেন স্বয়ং হিমালয় তার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। নন্দা দেবী আর এভারেস্টের ওপর যখন সদ্য ফোটা আলো চিকচিক করছে তখন আপনি থান্ডার ড্রাগনের দেশে পৌঁছে গিয়েছেন।
ভূটানের বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী খাবার ও সঙ্গে পোশাক ঘো/কিরা
বাঙলায় আছে ‘রথ দেখা, কলা বেচা’, ভূটানের মাটিতে থিম্পুতে দাঁড়িয়ে এই দ্বৈত কাজ একসঙ্গেই করা যাবে। যেমন আপনি খেতে খেতে পরে নেবেন ভূটানের ঐতিহ্যবাহী পোশাক। ঘুরে দেখে নেবেন ভূটানের ঐতিহ্যবাহী যাদুঘর। আপনি চাইলে মুখোশ আর কিরা পড়ে ছবি তুলতে পারেন। পুরুষদের জন্য ভূটানিজ পোশাকের নাম ঘো, মহিলাদের পোশাকের নাম কিরা। আপনি চাইলে সেই দেশের সংস্কৃতির স্বাদ নিতে পারেন এক নিমেষে, হোটেলের লোকেরাই আপনাকে উৎফুল্ল মনে সাহায্য করবে।
খাবার নিয়ে তো কিছু বলার নেই, অতুলনীয়। ঐতিহ্যবাহী ভুটানিজ বাটার চা অর্থাৎ মাখন চা তার সঙ্গে মুড়ি। দুপুরে একটা সম্পূর্ণ থালিতে দাতশি অর্থাৎ পনিরের ডিশ, মিক্সড ভেজটেবল, ঝাল মাংস কষা থাকবে। যা খেলে চিরদিন মুখে লেগে থাকবে এর স্বাদ।
ভুটানের বিশেষ পানীয়
প্রত্যেক দেশের একটা বিশেষ পানীয় থাকে। ভূটানের রয়েছে। যাকে আমরা ইংরাজিতে ওয়েলকাম ড্রিংকস বলে থাকি। গাঁজানো বার্লি, ভুট্টা, বাজরা, চাল গম ও জল মিশিয়ে তৈরি এই বিশেষ পানীয়। তবে চাইলে আপনি জাফরান, মাখন ইত্যাদি দিয়ে বিশেষ পানীয় বানিয়ে নিতেই পারেন।
স্নুকার খেলা
প্রতি সন্ধ্যায় স্নুকার খেলার আসর বসে। কাজ শেষ করে মানুষ নিজেকে একটু আমোদ আহ্লাদে রাখতে স্নুকার খেলতে আসে। সবচেয়ে বেশি ভীর হয় সপ্তাহান্তের দিন গুলোয়। আপনার যদি ফুরফুরে মেজাজে একটা সন্ধ্যে কাটানোর ইচ্ছে হয় তবে অবশ্যই গাইডকে বলুন স্নুকারের আসরে নিয়ে যেতে।
ভুটানের বিশেষ নাচ ড্রয়াং
ডান্স বার বললে যা সচরাচর মাথায় আসে তার থেকে বেশ খানিকটা আলাদা ড্রয়াং। তবে এটি যে ডান্স বার তাতে সন্দেহ নেই। প্রায়শই বড় হোটেল রেস্তোরাঁর একদম বেসমেন্টে গড়ে ওঠে ডান্স বার। বিভিন্ন ধরনের টেবিল থাকে সেখানে লোকেরা হাজির হয়। একদল মহিলা কখনও হিন্দি গানে নাচে, কখনও অভিনয় করে।
অশুভ শক্তিকে দমন করতে স্থানীয় বিশ্বাস স্যুভেনির খুব উপকারী। পুনাখাতে ডিভাইন ম্যাড ম্যান নামে এক তিব্বতী সাধু থাকেন, চিমি লাথাং আশ্রমের পাশেই সেখানে প্রথম স্থাপন করেন এই মূর্তিটি। সেখানে আশেপাশের অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে স্যুভেনির পাওয়া যায়। মানুষ মঙ্গলের জন্য সংগ্রহ করে আবার অনেকে সন্তান হওয়ার জন্য ঐ মন্দিরে মানত করে।
এত রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা আপনার জন্য দুহাত বাড়িয়ে অপেক্ষা করছে, শুধু তো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, ভুটানের সংস্কৃতি তাঁর নির্মল আনন্দকে ছুঁয়ে দেখার এই চেষ্টা একদম মিস করবেন না।