এবার ল্যাপটপ, কম্পিউটার কিনতে যেতে হবে দুবাই কিংবা ইংল্যান্ড, কেন? জেনে নিন বিস্তারিত
সেমিকন্ডাক্টর চিপ তৈরির কারখানা খুললে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি

বিদেশে তৈরি ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ট্যাব আর কেনা যাবে না। আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল ভারত সরকার। কেন্দ্রের ডিরেক্টর জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই খবর জানিয়েছেন। তবে ‘ক্যাপিটাল গুডস’-এর ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে এর জন্য বৈধ অনুমতি লাগবে। ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের অধীনে দেশি কম্পিউটার, ল্যাপটপ নির্মাণ সংস্থাগুলিকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে কেন্দ্র। তাই বিদেশি সংস্থার নির্মিত ল্যাপটপ, কম্পিউটারে রাশ টানা হল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর অধিকাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এপ্রিল-জুন মাসে ভারতের আমদানির পরিমাণ ছিল ১৯.৭ বিলিয়ন ডলার। আসলে ভারতের বাজারে যে ল্যাপটপ, কম্পিউটার বিক্রি হয়, তার ৯০ শতাংশই বিদেশ থেকে আসে। এমনকী এর যন্ত্রাংশও আমদানি করা হয়। ফলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন চলে। এখন যত বেশি সম্ভব ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ভারতেই উৎপাদন করতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। বিদেশি কোম্পানিগুলো যাতে ভারতে ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট খোলে সে বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
কেন্দ্র সরকারের লক্ষ্য, মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের অধীনে স্বদেশি শিল্প সংস্থাগুলিকে উৎসাহ দেওয়া। যাতে দেশের মধ্যেই ল্যাপটপ কম্পিউটারের উৎপাদন বাড়ে। এ জন্য বিশেষ ইনসেনটিভ প্ল্যানও এনেছে কেন্দ্র সরকার। ইলেকট্রনিক্স শিল্প সংস্থা ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন প্রধান আলি আখতার জাফরিও দেশি সংস্থাগুলির উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে কেন্দ্র এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করছেন। তাঁর কথায়, ‘ভারতে ল্যাপটপ, কম্পিউটারের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। এর পিছনে অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই’।
ল্যাপটপ, কম্পিউটারের উল্লেখযোগ্য যন্ত্রাংশ হল সেমিকন্ডাক্টর চিপ। এর বাজারের প্রায় পুরোটাই দখল করে রেখেছে তাইওয়ান। গোটা বিশ্বকে তারাই সাপ্লাই করে। সেমিকন্ডাক্ট চিপের এই বাজার ধরতে চাইছে ভারতও। এ জন্য একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। দেশে সেমিকন্ডাক্টর চিপ তৈরির কারখানা স্থাপন করলে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। অনেক বিখ্যাত সংস্থাই বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে এ দেশে বিক্রি করে। সেই দিন শেষ হতে চলেছে। আসলে ভারতের বাজার ধরতে গেলে ভারতেই উৎপাদন ইউনিট খুলতে হবে। যেমন টেসলা-কে জানিয়েছিলেন নীতিন গাডকরি। সেমিকন্ডাক্টর চিপ, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের ক্ষেত্রেও সেই নীতি লাগু হচ্ছে।
ডোকালাম-এ চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষের পর ড্রাগনের দেশের একাধিক কোম্পানিকে নিষিদ্ধ করেছিল কেন্দ্র। সেই সময় অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করলেও এতে আখেরে লাভই হয়। ভারতের খেলনা শিল্পের উৎপাদন বাড়ে। মাত্র ২ বছরের মধ্যে ভারতীয় খেলনা বিদেশে রফতানি শুরু হয়। এখন ল্যাপটপ, কম্পিউটারের ক্ষেত্রে কী হয় সেটাই দেখার।