যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য, ১৩৬ জন পড়ুয়ার যোগ রয়েছে বলে উঠে এল
নদিয়ার বগুলা থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা নিয়ে পড়তে যাওয়া ছাত্রের মৃত্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যাদবপুর। এই পাঁচতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।

শুভঙ্কর, কলকাতা: গত ৯ আগস্ট রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান হস্টেলের ব্যালকনি থেকে পড়ে মৃত্যু হয় এক ছাত্রের। উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি ইউজিসি নিজেদের একটি টিম পাঠায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও অভ্যন্তরীন্ত কমিটি তৈরি করে। এবার পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্টে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। মোট ১৩৬ জন পড়ুয়া যুক্ত রয়েছেন এই মৃত্যুর পিছনে বলে রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে।
নদিয়ার বগুলা থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা নিয়ে পড়তে যাওয়া ছাত্রের মৃত্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যাদবপুর। এই পাঁচতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এর সঙ্গে প্রধান যে বিষয়টি সকলের সামনে উঠে আসে তা হল র্যাগিং এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র এবং প্রাক্তন ছাত্রদের দাপাদাপি। চাপের মুখে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ একটি কমিটি তৈরি করে। যারা পুলিশী তদন্তের পাশাপাশি নিজেদের মতো করে তদন্ত চালায়। এইবার সেই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এল। তাতে বলা হয়েছে ওই পড়ুয়ার মৃত্যুতে ১৩৬ জন জড়িয়ে রয়েছেন। ৪৬ পাতার রিপোর্টে অনেকগুলি সুপারিশ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে। ৬ জন প্রাক্তন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে থানায় নালিশ জানানো ও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সারা জীবনের জন্য ঢুকতে না দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। র্যাগিংয়ের ঘটনায় চারজন পড়ুয়া সরাসরি যুক্ত থাকায় তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের কথা বলা হয়েছে এই রিপোর্টে। ওই ১৩৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে পাঁচজন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ে যুক্ত থাকার জন্য চারটি সেমিস্টার বহিষ্কার এবং হস্টেল থেকে পুরোপুরি বহিষ্কারের সুপারিশ রয়েছে এই কমিটিতে। অন্য ১১ জন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে এই সুপারিশে বলা হয়েছে তাদের দুটি সেমিস্টার বহিষ্কার এবং আজীবনের জন্য হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা হোক। আরও ১৫ জন পড়ুয়াকে একটি সেমিস্টার থেকে বহিষ্কার ও হস্টেল থেকে চিরকালের মতো বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। বাকি ৯৫ জন পড়ুয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল থেকে বহিষ্কার ও তাঁর সঙ্গে সতর্ক করে দেওয়ার সুপারিশ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করে দেওয়া আভ্যন্তরীণ কমিটি।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে বসবেন। সেখানেই এই সুপারিশগুলোকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এর সঙ্গে ওই পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট নিয়েও ওই বৈঠকে আলোচনা করা হবে।