কলকাতা পুরসভা নাকি কলতলা! তৃণমূল-বিজেপির তুমুল মারপিট, গালাগালি-কলার ধরে মার
অধিবেশন কক্ষে রীতিমতো মারপিট করলেন তৃণমূল ও বিজেপি কাউন্সিলাররা। গালাগাল দিতে দিতে এঁকে অন্যের দিকে তেড়ে গেলেন। তারপর কলার ধরে টানাটানি, চুলের মুঠি ধরে মারামারি।

কৌশিক, কলকাতা: পুরসভার অধিবেশন কক্ষ নাকি কুস্তির আখড়া!
অধিবেশন কক্ষে রীতিমতো মারপিট করলেন তৃণমূল ও বিজেপি কাউন্সিলাররা। গালাগাল দিতে দিতে এঁকে অন্যের দিকে তেড়ে গেলেন। তারপর কলার ধরে টানাটানি, চুলের মুঠি ধরে মারামারি। একেবারে কলতলার ঝগড়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মেয়র ফিরহাদ হাকিমও হিমশিম খেলেন। কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে এমন লজ্জাজনক ঘটনার নজির আর নেই।
শনিবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশন চলছিল। কিন্তু বিরোধী শিবির অর্থাৎ বিজেপির কোনও কাছ থেকে কোনও প্রশ্ন আসেনি। তা দেখে তৃণমূলের চেয়ারপার্সন মালা রায় বিজেপি কাউন্সিলার সজল ঘোষকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনাদের বিরোধীদের কেন কোনও প্রশ্ন থাকে না’? পাল্টা সজল বলেন, ‘বলেও কোনও লাভ হয় না। মেয়র, ডেপুটি মেয়র কোনও উত্তর দেন না’। এখান থেকেই ঘটনার সূত্রপাত।
অভিযোগ, এ কথা শোনার পরই সজল ঘোষ এবং বিজয় ওঝার দিকে তেড়ে যান তৃণমূল কাউন্সিলার অসীম বসু। তাঁর দাবি, মেয়রকে নিয়ে এমন কথা বলা যায় না। শুরু হয় তর্কাতর্কি। আচমকাই তা গড়ায় হাতাহাতিতে। রীতিমতো চুলোচুলি বেঁধে যায়। অসিতের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন সজল এবং বিজয়। গালাগালির ফোয়ারা ছোটে। অবস্থা বেগতিক দেখে আসরে নামেন খোদ মেয়র। কিন্তু তাঁকেও ধাক্কা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
এই অবস্থায় মালা রায় অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান। ওদিকে সজল, বিজয়দের সঙ্গে তুমুল মারপিট চলছে তৃণমূলের অসিতের। অভিযোগ, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বরো চেয়ারম্যান সুদীপ পোল্লেও। বেশ কিছুক্ষণ গণ্ডগোল চলার পর পরিস্থিতি ঠান্ডা হয়। চেয়ারপার্সন ফিরে আসেন। মেয়র ফিরহাদ হাকিমও বক্তব্য শুরু করেন। কিন্তু সজল ঘোষের উপর আক্রমণের অভিযোগ তুলে অধিবেশন বয়কট করেন বিজেপি কাউন্সিলাররা।
বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, ‘এত গালাগালি দিয়েছে মনে হচ্ছে কান থেকে রক্ত বেরবে। ওরা মেরেছে। মালা রায় এই হাউজে মায়ের মতো। উনি কেন একচোখামি করবেন। ওরা দুর্নীতি করেছে প্রমাণ করে দেব’। তৃণমূল কাউন্সিলার অসীম বসু বলেন, ‘কাউকে মারা হয়নি। সজল আমার ভাইয়ের মতো। ওঁকে মারব কেন? ওঁকে তো ভালোবাসি। কিন্তু মাঝে মধ্যে ওঁর মাথা বিগড়ে যায়। মনে রাখতে হবে, কারও দিকে একটা আঙুল তুললে নিজের দিকেও চারটে আঙুল থাকে’।