কামদুনি ধর্ষণ মামলায় রদ হলো ফাঁসির সাজা
হলো না ন্যায় বিচার! কামদুনি ধর্ষণ মামলায় রদ হলো ফাঁসির সাজা।

শুভঙ্কর, কলকাতা: অবশেষে হলো না ন্যায় বিচার! এ কেমন সমাজ যেখানে নেই নারীর যন্ত্রণার প্রাধান্য? এ কেমন বিচার ব্যবস্থা যেখানে চোখের জলের হলো না সুবিচার? বাংলায় কি আদৌ নারীরা সুরক্ষিত? এই মুহূর্তে সকলের মনেই ঘোরাফেরা করছে এই প্রশ্নগুলো। কেন? কি এমন ঘটলো? আজ বাংলার মাটিতে ঘটলো এমন এক ঘটনা যা চিরকাল অর্জন করবে লোকের থেকে নিন্দা। ধর্ষিতা পেলো না সুবিচার কিন্তু রেহাই পেলো ধর্ষক। কামদুনি ধর্ষণ মামলায় এলো এক অমানবিক রায় কোর্টের থেকে। রদ হলো ফাঁসির সাজা। তার জায়গায় আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলো কলকাতা হাই কোর্ট।
জানা গিয়েছে, দোষী আনসার আলি মোল্লা এবং সইফুল আলি মোল্লাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি বেকসুর খালাস হয় ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আমিন আলি সহ আরো দুজনের। ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তারা ছাড়া পেয়ে যায়। এই রায়ে অখুশি প্রকাশ করেছেন ধর্ষিতার দুই বান্ধবী মৌসুমী ও টুম্পা। এমনকি এই নির্দেশে আদালত চত্বরেই জ্ঞান হারালেন মৌসুমী। তাদের অভিযোগ, ১৪জন সরকারি উকিল এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোয় এবং সদিচ্ছার অভাবের ফলেই এই রায়। মৌসুমী বলেন, “শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে সরকারি আইনজীবীরা ঠিকমতো আইনি লড়াই করেননি। সে কারণেই ফাঁসির সাজা রদ হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘ ১০ বছরের লড়াই বৃথা গেল। শয়তানগুলো বেঁচে গেলো।” যদিও সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
এই রায়ে হতাশা প্রকাশ করেছে ধর্ষিতার পরিবারও। অসুস্থ হয়ে পড়েন নির্যাতিতার ভাই। তার বক্তব্য, “কিভাবে আদালতে ফাঁসির সাজা পাওয়া দোষী বেকসুর খালাস পায়? কলকাতার রাস্তায় ফের কামদুনির প্রতিবাদ জেগে উঠবে।” উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৭ জুন এই ঘটনাটি ঘটে। যখন পরীক্ষা দিয়ে কামদুনির বাড়িতে ফিরছিলেন রাজারহাট ডিরোজিও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের সেই ছাত্রী। বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে একটি কারখানায় নিয়ে যায় আটজন এবং ধর্ষণ করে তাকে ভেড়িতে ফেলে যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে মিছিলের আয়োজন করা হয়। সিআইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁরা ৮জনকে গ্রেপ্তার করে।