দর্শনার্থীদের সমাগমে আলোড়িত দক্ষিণেশ্বর মন্দির, জেনে নিন কি কি থাকছে এবার পুজোয় মা ভবানীর ভোগে
সকাল থেকেই উপচে পড়া ভিড় মা ভবানী মন্দিরে, পুজোতে মা সাজবে সোনার গয়নায় জেনে নিন কি কি থাকছে ভোগের থালায়

করোনা কালের পর থেকেই দক্ষিণেশ্বরের কালীমন্দিরে মা ভবানী পুজোয় পরিবর্তিত হয়েছে একাধিক নিয়ম। তবে করোনা কাল কাটিয়ে উঠতেই আবার স্বাভাবিক ছন্দে দক্ষিণেশ্বরের মা ভবানীর পুজো। করোনা কালে দূরত্ববিধি থেকে শুরু করে সমস্ত নিয়ম বলবৎ করা হয়েছিল কঠোর ভাবে। তবে আবারও প্রতিবছরের মতো কালী পুজোয় যে ধরণের নিয়ম দেখা যায় দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে, চলতি বছরে সেই চেনা ছন্দে দেখা মিলল দক্ষিণেশ্বর মন্দির। করোনা কাল চলাকালীন দূরত্ববিধি থেকে শুরু করে সমস্ত নিয়ম বলবৎ করা হয়েছিল কঠোর ভাবে। তবে অন্যান্য বছর কালী পুজোয় যে ধরণের নিয়ম দেখা যায় দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে, চলতি বছরে সেই চেনা ছন্দে দেখা মিলল দক্ষিণেশ্বর মন্দির।
এদিন কালীপুজোয় সকাল থেকে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ভিড়। হাজার হাজার দর্শনার্থী ভিড় জমিয়েছেন মন্দির প্রাঙ্গণে। করোনার সময় দূরত্ববিধি থাকার কারণে, আয়োজনও ছিল সীমিত। তবে ফের চেনা ছন্দে ফিরেছে দক্ষিণেশ্বর। এ দিন ভোর থেকেই মন্দির চত্বরের বাইরের অংশের চাতাল থেকে বালি ব্রিজ পর্যন্ত সর্বত্র ভক্তদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে পূর্ণ মাত্রায়। প্রতিবছর কালীপুজোর দিন ভোর থেকেই ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ভিড় জমে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে। বিকেল থেকেই সেই ভিড় বাড়তে থাকে মন্দির চত্বরে।গঙ্গার ঘাট থেকে শুরু করে নাট মন্দির ও চাতাল জুড়ে দেখা যায় লাখো ভক্তের ভিড়। করোনা আবহে সেই পরিস্থিতির আমূল বদল আনা হয়েছিল। তবে ভিড়ের চাপে সকাল থেকে যে সব ভক্তরা বসে পুজো দিচ্ছেন, তাদেরকেও পুজো দেওয়ার পরে মন্দির ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হচ্ছে। পুজো দেওয়ার জন্য লম্বা লাইন পড়েছে বালি ব্রিজ পর্যন্ত। বিভিন্ন মন্দিরে পশু বলি হলেও দক্ষিণেশ্বরে মন্দিরে বলি হয় না। তাই পুজোর ভোগে মাংসও থাকে না। ভবতারিণীকে কালীপুজোর দিন পরানো হয় বেনারসী। ভোগে থাকে অন্নভোগ। ভবতারিণীকে দেওয়া হয় ভাত, ঘি-ভাত, পাঁচ রকমের ভাজা, পাঁচ রকমের তরকারি, পাঁচ রকমের মাছ। সেই সঙ্ থাকে চাটনি-পায়েস, পাঁচ রকমের মিষ্টি।শ্রীরামকৃষ্ণের দেখানো পথেই মা কালী পুজিত হন দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরে।
মূলত, ভবতারিণীর পুজোর আর এক বৈশিষ্ট্য হল, এখানে শাক্ত, বৈষ্ণব ও শৈব, তিন ধারার পুজো এক সঙ্গে হয়। যা আর কোথাও দেখা যায় না। এই ত্রিবেণী সঙ্গম ঘিরে আজও একই প্রাঙ্গণে দেবী কালীর পুজো হয়ে শাক্ত মতে, বৈষ্ণব মতে রাধাকৃষ্ণের পুজো। এবং ১২ টি শিবমন্দিরে হয় শৈব ধারার শিব আরাধনা। এদিন সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে কালীপুজো এই শক্তিপীঠে।আজ সকাল থেকে যে সব ভক্তরা পুজো দিতে আসছেন, তাঁরা মন্দিরে এসে দাঁড়িয়ে আছেন লম্বা লাইন ধরে। মন্দিরের চাতালে একসঙ্গে প্রায় কয়েক হাজার জনকে দাঁড়ানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও সম্পাদক কুশল চৌধুরী জানিয়েছেন, ” যে সব নিয়ম মেনে মন্দিরে পুজো হয়, এখনও সেটা বজায় রাখা হচ্ছে। গোটা দেশের মানুষের আবেগ জড়িয়ে আছে এই মন্দিরের সাথে। তাই কালী পুজোর দিনে কাউকেই পুজো দেওয়া থেকে বিরত করতে বা বঞ্চিত করা হবেনা। তাই মন্দিরের বিধি মেনেই সব কাজ করা হচ্ছে।”নাটমন্দিরে বসানো হয়েছে ক্যামেরা। সেখান থেকেই অবশ্য অনলাইনে ফিড মিলছে সরাসরি পুজো দেখার জন্যে।