KMC Result 2021: রামের ভোট এবার বামে, শূন্যের দুঃখ ভুলে এবার দ্বিতীয় স্থানে সিপিএম

২০০০ সালে বাংলার(West Bengal) পুরভোটে(Municipal Poll) বাজিমাত করে জয় লাভ করেছিল তৃণমূল(Trinomool)। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। স্কুলে ফার্স্ট আসাই আসল কথা নয়, কত বছর নিজের স্থান বজায় রাখতে পারো এটাই বড় কথা। ২০০০ সালে পুরভোটে জয় লাভ করলেও, ২০০৫ সালে ফের তা ছিনিয়ে নিয়েছিল বামেরা(Left)। মেয়র হয়েছিল সিপিএম(CPM)-এর বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। কিন্তু সেই বামফ্রন্টই(LeftFront) পড়ে গিয়ে পরিণত হয় ধুলি-কণায়। রাজ্য জুড়ে উথান ঘটে তৃণমূলের(TMC)। তবে ২০২১-এর পুরসভায়(Municipal Poll) আবার ফের নিজেদের পরিচয়কে তুলে ধরলো বামেরা(Left)। লোকসভা(Lok Sabha) ও বিধানসভা(Legislative Assembly) নির্বাচনে(eletion) নিজেদের অস্তিত্বকে নিয়ে সংকটে পড়লেও পুরসভা(Municipal Corporation) ভোট(Election) আসতে আসতে ফের চাগাড় দিয়ে উঠলো তাঁরা। বিরোধী হিসাবে আসন সংখ্যায় না হলেও বিজেপি(BJP) ও কংগ্রেসের(Congrss) থেকে প্রাপ্ত ভোটে এগিয়ে বামেরা। গত পুরভোটে কলকাতায় ১৫ ওয়ার্ডে জেতা বামেদের এবার ফল ঘোষণার আগে কোনও আসনই দেয়নি কোনও সমীক্ষা। রাজ্য রাজনীতির কোনও এক কোণে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল বামেরা। কিন্তু দিন শেষে অন্য কথা বলল কলকাতা।
কলকাতা পুরভোটে সিপিএম ও সিপিআই একটি করে আসন জিতেছে। তবে সব ক’টিতে অর্থাৎ ১৪৪টিতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি বামেরা। ১২৮ আসনে প্রার্থী দিয়ে দুই ওয়ার্ডে জয়ী এবং ৬৫ ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থানে। সেখানে বিজেপি ১৪২টি আসনে লড়াই করে জিতেছে তিনটি আসনে এবং দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে ৫৪টি ওয়ার্ডে। প্রসঙ্গত, বিজেপি প্রথম থেকে ১৪৪টি আসনে প্রার্থী দিলেও পরে দু’জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়।
সাম্প্রতিককালের নিরিখে বামেদের ফল এই কারণেই ভালো যে, প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে বিজেপি-কে টপকে যেতে পেরেছে তাঁরা। শেষ পাওয়া হিসেবে বিজেপি-র প্রাপ্ত যেখানে ৯ শতাংশের নীচে, সেখানে সিপিএম একাই ৯ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে। প্রাথমিক পরিসংখ্যান ইঙ্গিত দিচ্ছে, বামেদের প্রাপ্ত ভোট পেরিয়ে যাবে ১১ শতাংশের ঘরও। গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ও বিশেষত, বামেদের বহু ভোট চলে গিয়েছিল বিজেপিতে। যার ফলে শূন্যের দুঃখে শূন্যতা দেখা যায় দলের মধ্যে। এবার সেই শূন্য থেকেই নতুন পথের দিকে পাড়ি দিয়ে দিয়েছে বামেরা। রামের ভোটকে নিজেদের কাছে টেনে বর্তমানের এই ভোটের রাজনীতিতে নিজেদের নামকে ফের তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে তাঁরা।
আরও পড়ুন……..KMC Result: ঘাসফুল ঝরে ফের মাতল তিলোত্তমা, তুরুপের তাস কি তাহলে নির্দল প্রার্থীরাই
প্রসঙ্গত, রাজ্যের সিপিএমের ভোটপ্রাপ্তির পারদ পতন শুরু হয় ২০০৬ সাল থেকেই। সেই বার প্রাপ্তি ছিল ৩৭.৯৩ শতাংশ ভোট। আর ২০১১ সাল পড়তে পড়তে তা কমে হয় ৩০.০৮ শতাংশ। এরপরে ২০১৪ ও ২০১৬ সালে কমে হয় যথাক্রমে ২২.৯৬ ও ১৯.৭৫ শতাংশ। এরপর এক অঙ্কের সংখ্যায় নেমে যায়। গত উনিশের লোকসভা নির্বাচনে ভোট প্রাপ্তি ছিল ৬.৩৪ শতাংশ। গত বিধানসভা নির্বাচনে সেই হার আরও কমে নেমে যায় ৪.৭০ শতাংশে। উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে কোনও আসন না পেলেও মহানগরে ১০.১৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বামেরা। এ বার সেই ভোট ১১ শতাংশের উপরে যাওয়ার অর্থ কলকাতায় গত আট মাসে নিজেদের প্রভাবকে পুনরুদ্ধার করতে খানিকটা সক্ষম হয়েছে বামেরা। যা হয়তো আগামী দিনে তিলোত্তমায় বামেদের ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভবনাকে ফের উস্কে দিচ্ছে। তবে আপাতত গোটা ভবিষ্যৎই রাজ্যবাসী ও আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের চার কোণা ঘরটির হাতে।