“পরতে দেওয়া হবে না ধুতি-শাড়ি-সিঁদুর!” বাংলাদেশে হিন্দুদের হুমকি মুসলিম মৌলবাদীদের

ভারতে কোনও প্রকার উত্তেজিত পরিস্থিতি তৈরি হলে তার প্রভাব প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে ( Bangladesh ) -ও পড়ে থাকে। কিছুদিন আগেই কর্ণাটকের একটি স্কুলে কিছু ছাত্রীকে হিজাব পড়ে ঢুকতে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় শোরগোল পড়ে যায় গোটা দেশ জুড়ে। সাম্প্রদায়িকতার বিষ যে ভারতকে ভিতর থেকে কুরে কুরে খেয়ে ফেলেছে তা স্পষ্ট হয়ে যায় মানুষের কাছে। কর্ণাটক থেকে সেই বিতর্ক আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। এক দল বেরিয়ে পড়ে গলায় গেরুয়া কাপড় ঝুলিয়ে, আর এক দল বেরিয়ে পড়ে বরখা পড়ে। জয় হিন্দ ভুলে দুই দল মেতে ওঠে “আল্লা হু আকবর” ও “জয় শ্রী রাম” ধ্বনিতে। হারিয়ে যায় মনুষ্যত্ব।
এবার এই সাম্প্রদায়িকতার আগুন কুরে কুরে খেতে শুরু করেছ আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ( Bangladesh ) -কেও। সাম্প্রদায়িকতার দাবানল ভারত পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে সেই দেশেও। হিজাব বিতর্ক নিয়ে যখন উত্তাল এই দেশ। তখন বাংলাদেশে ধুতি, পৈতে এবং সিঁদুর পরিহিত কোনো হিন্দুকে রাস্তায় হাঁটতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মৌলবীরা। এবার সেই হুঁশিয়ারির প্রতিবাদে সড়কে নেমে পড়েছে বাংলাদেশি হিন্দুরা। মুসলিম মৌলবাদীদের ওই ফতুয়ার বিরুদ্ধে রীতিমতো গর্জে উঠেছে সেখানকার হিন্দুরা। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র ও যুব মহাজোটের নেতৃত্বে শুক্রবার রাস্তায় নামেন হিন্দুরা। তাঁদের প্রত্যেকের পরনেই ছিল ধুতি এবং পাঞ্জাবি।
পাশাপাশি, তাঁদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, “মৌলবাদী গোষ্ঠী কর্তৃক প্রকাশ্যে বাংলাদেশে ( Bangladesh ) -র হিন্দু নারীদের শাঁখা, সিঁদুর ও হিন্দু পুরুষদের ধুতি পরা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকির প্রতিবাদেই এই ধুতি মিছিল।” ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শুরু করা হয় এই মিছিল। চলে গোটা শহর জুড়ে, সামিল হন কয়েকশো হিন্দুরা। পাশাপাশি, সেখান স্লোগান ওঠে, “এ দেশটা কারও একার নয়, সকলের।” উল্লেখ্য, এই প্রসঙ্গে আবার ঢাকার ইতিহাসবিদদের একাংশ জানিয়েছেন, “সম্প্রীতির মুখোশ পরে বর্তমানে বাংলাদেশে কার্যত হিন্দু নিধন যজ্ঞ চলছে। কখনওই এর পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশি হিন্দুরা। তবে গতবছর দুর্গা পুজো নিয়ে হওয়া সাম্প্রদায়িক হিংসায় যখন গোটা বিশ্ব বাংলাদেশি হিন্দুদের পাশে থেকে গর্জে ওঠে। তারপর থেকেই এদেশে হিন্দুরা নিজেদের শক্তিশালী করে তুলতে সক্ষম হচ্ছে। নিজেদের উপর আসা আঁচরের বিরোধীতা করতে নিজেরাই ঝাপিয়ে পড়ছে।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই মুসলিমদের নিয়ে বিশাল জমায়েতের আয়োজন করেন চরমোনাই পীরের দলের কেন্দ্রীয় যুব সভাপতি মৌলানা মহম্মদ নেছারউদ্দিন।
আরও পড়ুন…“কাকভোরে আনিসের মৃত দেহ চুরি করতে এসেছিল পুলিশ” বিস্ফোরক মৃত আনিসের বাবা সালেম খান
সেখান থেকেই সরাসরি হিন্দুদের হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, “কর্ণাটকের সরকার যদি মুসলিম পড়ুয়াদের স্কুল, কলেজে হিজাব পরে ঢুকতে না দেয়, তাহলে বাংলাদেশে ( Bangladesh ) বসবাসকারী হিন্দুদের ধুতি, পৈতে পরা চলবে না! এমনকি, মাথায় সিদুঁর দিয়ে রাস্তায় হাঁটতে দেওয়াও হবেনা তাদের” শুধু তাই নয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে হিন্দুদের কন্ঠ কীভাবে স্তব্ধ করে দিতে হয় সেই পথ মুসলমানরা খুব ভালো করে জানেন বলেও এদিন শাসিয়েছিলেন তিনি।