Bangladesh Riot : সাম্প্রদায়িকতার জালে জর্জরিত বাংলাদেশ, ইতিহাসের পাতায় কিছু ভয়াবহ রক্তস্নাত স্মৃতি

গতবছর প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে ( Bangladesh Riot ) দশমীর আগেই শোনা গিয়েছিল বিসর্জনের শব্দ। না, এই শব্দ ঢাকের নয়, বরং আতঙ্কবাদীদের মন্ডপ থেকে মুর্তি ভেঙে ফেলার তান্ডবের হুঙ্কার। যথারীতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথেই নিন্দায় মুখর দুই দেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ। তবে বাংলাদেশে ( Bangladesh Riot ) সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ঘটনা বিশেষ নতুন নয়। ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলেই দেখা যাবে এরকমই আরও একাধিক দৃষ্টান্ত।
২০১৬ সালের নাসিরনগর হিংসা
২০১৬ সালে বাংলাদেশের ( Bangladesh Riot ) নাসিরনগর উপজেলায় ইসলাম কট্টরপন্থীরা আক্রমণ করেন সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর। একজন হিন্দু জেলের বিতর্কিত সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট থেকে এই ঘটনার সূত্রপাত। এই আক্রমণে উনিশটি হিন্দু মন্দির ভেঙে ফেলার পাশাপাশি প্রায় তিনশো হিন্দু বাড়ি ধ্বংস করা হয় এবং একশো জনের বেশি মানুষ গুরুতর আহত হন।
২০১৩ হিন্দু বিরোধী হিংসা
২০১৩ সালে বাংলাদেশের জামাত-এ-ইসলাম জঙ্গি সংগঠনের নেতা দিলওয়ার হোসেন সইদীকে ফাঁসির আদেশ দেয় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল। এরই প্রতিবাদে ইসলামী ছাত্র শিবির এবং জামাত-এ-ইসলাম বাংলাদেশের ( Bangladesh Riot ) বিভিন্ন প্রান্তে সেদেশের সংখ্যালঘু তথা হিন্দুদের ওপর সশস্ত্র আক্রমণ শুরু করে। হিন্দুদের জমিজমা বাড়িঘর লুটপাট থেকে শুরু করে হিন্দু মন্দির জ্বালিয়ে দেওয়া চলতে থাকে। তবে বাংলাদেশ সরকার জামাত-এ-ইসলামকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করলেও তারা দায় নিতে অস্বীকার করে।
২০১২ ফতেপুর হিংসা

২০১২ সালে বাংলাদেশের ( Bangladesh Riot ) কালীগঞ্জ উপজেলার ফতেপুর গ্রামের হাইস্কুলে ছাত্রদের দ্বারা পরিবেশিত একটি নাটককে ঘিরে সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য। দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরকে সমর্থন করে দুজন জামাত-এ-ইসলামের সদস্য দাবি করেন সেই নাটকে নবী মহম্মদের উদ্দেশ্যে অসম্মানজনক বক্তব্য পেশ করা হয়েছে। এরপরই ফতেপুর হাইস্কুল সংলগ্ন দশটি হিন্দু বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং লুটপাট চালানো হয়।
১৯৯২ বাংলাদেশ হিংসা
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরেই সেদেশে সবচেয়ে বড় হিন্দু আক্রমণ ( Bangladesh Riot ) হয় ১৯৯২ সালে। ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙার প্রতিবাদে এই ঘটনা প্রথম শুরু হয় বাংলাদেশের ঢাকেশ্বরী মন্দির ভাঙার হাত ধরে। সেই বছরের সার্ক সম্মেলনও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই ঘটনার ফলে। ৭ই ডিসেম্বর প্রায় পাঁচ হাজার সশস্ত্র মুসলিম আক্রমণ করে ঢাকা স্টেডিয়াম। চোদ্দটি হিন্দু মন্দির ধ্বংসের পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকচারি এবং মীরেশ্বরী গ্রাম সম্পূর্ণ ভস্মীভূত করা হয়। প্রায় একবছর অর্থাৎ ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত চলেছিল বাংলাদেশী হিন্দুদের ওপর এই লাগাতার আক্রমণ।
১৯৭১ চুকনগর গণহত্যা
তখন আজকের গোটা বাংলাদেশ জুড়ে সংগঠিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেওয়ার জেদ ও সেই আগুনের আঁচে সীমানা পাড় করে লক্ষাধিক মানুষ ১৯৭১ সালের ২০ মে ভারতীয় সীমান্তের নিকটবর্তী একটি গ্রাম ঢুকনগরে জড়ো হয়। বেলা বাড়তেই সেই দিকে রওনা দেয় পাকিস্তানি সেনার একটি ট্রাক ও জিপ। ঢুকনগর বাজারে ( Bangladesh Riot ) কাউতলা গ্রামে এসে থাকে সেনা ট্রাকটি প্রথম থামে। এরপর সেখান থেকে শুরু হয় সেনার বর্বরতা। সাধারণ মানুষের দিকে তাক করে চলে গুলি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। মৃতদেহগুলিকে পরে পাক বাহিনী নদীতে ফেলে দেয়। ইতিহাসের পাতায় আড়ি পাতলে আজও যেন শোনা যায় সেই মানুষগুলির মর্মান্তিক আর্তনাদ।