যুদ্ধের মাঝেও সাথী ছোট্ট বিড়ালটি, বন্ধুকে না নিয়ে ফিরবেন না বলেই সাফ বক্তব্য ছিল নীলিমার

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সে একমাত্র সঙ্গী তার। তাই আদরের উষ্ণতায় ঘিরে রেখেছে তাকে, কখনও একাকীত্ব বোধ করতে দেওয়াও হয়নি। মৃত্যুভয়ে বাঙ্কারে ( Russia-Ukraine War ) লুকিয়ে থাকার সময় পেটে খিদের জ্বালা জ্বালিয়ে তুললেও সেই ছোট্ট প্রাণীটির সামনে তা প্রকাশ পায়নি কখনও। সর্বক্ষণই তাকে মাতিয়ে রাখা হয়েছিল ভালোবাসার খেলায়। কোনও দিনই নিজের ওই প্রিয় বন্ধুকে দূর দেশে ফেলে আসা চিন্তা করেননি নীলিমা হুসেন। যার জেরে এক সময় নিজের দেশে ফিরে আসার স্বপ্নই মাথা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল সে। কিন্তু ভারত সরকার যখন এককালীন ব্যাতিক্রম হিসাবে পোষ্য নিয়ে বিদেশ থেকে ফেরার অনুমতি দেয় তখন যেন ধড়ে প্রাণ আসে তার। পোল্যান্ড থেকে বিমান ধরে নিজের পোষ্যকে বুকে জড়িয়ে ধরে এ দেশে ফিরে আসে নীলিমা।

গুয়াহাটির মেয়ে নীলিমা। সাল ২০১৭ নাগাদ ইউক্রেনের সুমিতে নিজের চিকিৎসাশাস্ত্রের পড়াশোনা করতে সেই দেশে পাড়ি দেয় সে। এমনিতেই যুদ্ধের মাঝে পড়ে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির মাঝে পড়ে রয়েছে সেই দেশে থাকা ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা। তার মধ্যে সুমিতে অবস্থিত পড়ুয়াদের পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়ঙ্কর। একে ( Russia-Ukraine War ) রাশিয়া-ইউক্রেনে সীমান্তের খুব কাছে সেই শহর। যার জেরে যখন তখন ঘটছে বোমা বর্ষণ। আবার পশ্চিমপ্রান্তের পড়ুয়াদের মতোই চট করে পড়শি দেশে পাড়ি দিয়ে নিজ দেশে ফিরে আসাও অসম্ভব। দিনের পর দিন কাটাতে হয়েছে যুদ্ধ বাঙ্কারে। টান পড়েছে ভাঁড়ারে। নেই খাবার, জল, ওষুধ। কিন্তু তার মধ্যে দিয়েও বেঁচে থাকা। বন্ধ এটিএম। অবশেষে, ভারত সরকারের উদ্যোগে সুমি থেকে ভারতীয় পড়ুয়াদের বের করে আনার সিধান্ত নেওয়া হয়।

Russia-Ukraine Warনীলিমা জানান, তাঁর এতদিনের সঙ্গী রাশিয়ান ওরিওকে রেখে তিনি কোনও মতেই আসার কথা  ভাবতে পারবেন না। তাই তাকে সঙ্গে নিয়েই শুরু তার টিকে থাকার যুদ্ধ। ৮ মার্চ তাঁদের সুমি থেকে বের করা হয়। সেফ জ়োন হয়ে বাসে ১২ ঘণ্টা যাত্রার পরে পোল্টাভা আসেন তাঁরা। সেখান থেকে ( Russia-Ukraine War ) ট্রেনে ফের ১৮ ঘণ্টা সফর করে হাজির হন লভিভে। লভিভের ট্রেনে ওঠার সময় কিছু খাবার মিলেছিল। কিন্তু সেখান থেকে পোল্যান্ডের ট্রেনে ওঠার পরে গোটা যাত্রাই অভুক্ত থাকতে হয়।

সকল ধকলের মধ্যে দিয়ে তারা দু’জনে পৌঁছে যায় পোল্যান্ড বর্ডার। কিন্তু সেখানে গিয়ে ঘটে অন্য বিপত্তি। পোষ্য নিয়ে বিমান ওঠার অনুমতি নেই। কিন্তু নিজের এতদিনের বন্ধুকেও সেই ( Russia-Ukraine War ) দেশে একা ফেলে আসার মেয়ে নয় নীলিমা। নিজের প্রিয় বন্ধুকে নিয়েই দেশে ফিরবে সে। এমতাবস্থায়, ভারত সরকার তরফে বিশেষ ব্যবস্থা করা হয় সেই পোষ্যটির জন্য। ওরিওর জন্য আলাদা করে তৈরি হয় পাসপোর্ট ও ভিসা। দেওয়া হয় প্রতিষেধক। শরীরে ঢোকানো হয় মাইক্রোচিপ।

আরও পড়ুন…চীনে ফের করোনা কোপ, জারি লকডাউন, আক্রান্ত দুই বছরে সর্বাধিক

এরপর গতকাল দিল্লি পৌঁছান তাঁরা। আপাতত অসম ভবনেই রয়েছেন দু’জনে। পোষ্য থাকা ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিমানে বিশেষ ব্যবস্থা করে দেবে সরকার। তখনই গুয়াহাটি ফেরা।




Leave a Reply

Back to top button