Ukraine: ‘বাবা কবে দেখা হবে…’ যুদ্ধে যাওয়ার আগে বাবাকে আর্জি মেয়ের

বাবাকে করা একটা প্রশ্ন, ‘বাবা কবে আসবে গো…’ এভাবেই যুদ্ধের মুখে পড়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে যাওয়া বাবাকে বিদায় তার ছোট্ট মেয়ের। কিভে ইউক্রেনের ( Ukraine) যুদ্ধ তাই শুধু আন্তর্জাতিক রাজনীতির উত্তাল ঢেউ নয় বরং আত্মবিসর্জন ও যন্ত্রণার ব্যক্তিগত ও সামাজিক দায়ভার। গতকাল থেকেই আক্রমণ শুরু হয়েছে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর, সীমান্তে মরছে শয়ে শয়ে সেনা। ছোট্ট এই দেশটা তাই নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য সামান্য আশা আঁকড়ে ধরেও বাঁচতে চাইছে প্রানপণ।
Men aged 18-60 cannot leave the #Ukraine, they must stay behind and fight if called upon. Here’s a video of a dad saying goodbye to his daughter. He knows he may never see her again. These are the real stories. Human stories. The atrocities of war. pic.twitter.com/pdGpk7R7xm
— Dan Clark (@DanClarkSports) February 25, 2022
দেশের সমস্ত মানুষকে আক্রমণ প্রতিরোধের আর্জি জানানো হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। অস্ত্র নেই, তাও মনের জোরেই দেশ দখল হয়ে গেলেও লড়াইটা চালিয়ে যেতে চাইছে আমআদমি। কারণ আমাদের মতন যুদ্ধটা তাদের কাছে দূর দেশের কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং ঘরের বাইরে দিনরাত পড়া শত্রুপক্ষের বোমা মিসাইলগুলোর মতই জ্বলন্ত সত্যি। যা দৈনন্দিন জীবনের অংশমাত্র। বিনা প্রতিরোধে তাই নিজের ঘরটা ছেড়ে যেতে রাজি নন কেউই। যথাসম্ভব সম্বল নিয়েও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছাটা তাই আছে তাদের মধ্যে।
Ukraine: রক্তাক্ত যুদ্ধের মাঝে সাধারণ মানুষ
সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন কোনে তাই ঘুরে বেড়াচ্ছে এমনই একটা ভিডিও। ছোট্ট মেয়েকে বিদায় জানিয়ে যুদ্ধের পথে তার বাবা, ফেরা নিশ্চিন্ত নয়। কিন্তু তা আটকে রাখছে না কাউকেই দেশের জন্য আত্মবিসর্জনের পথে। ইউক্রেনের রাজধানী কিভের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একটা সামরিক বাসে তার উঠতে যাওয়ার আগের মুহূর্তের এই ছবি ধরা পড়েছে তাই অজানা ক্যামেরায়। ছোট্ট সেই মেয়েটা হয়তো বোঝে না যুদ্ধ কি? কি নিয়ে হচ্ছে যুদ্ধ? কেন যাচ্ছে এত মানুষের প্রাণ? কিন্তু বাস্তবের কঠিন সত্য এড়িয়ে চলা মুশকিল, তাই মেয়েকে বিদায় জানাবার সময় চোখের কোনে জল জমেছিল বাবারও।
আরও পড়ুন: নিরাপদ স্থানের খোঁজে এক রত্তি, বিদায়বেলায় বাবা-মেয়ের কান্না দেখে চোখে জল নেটনাগরিকদের
যুদ্ধে যাওয়ার আগে ছোট্ট মেয়ের সঙ্গে বাবার আলিঙ্গন তাই আজ নেটাগরিকদের চোখের পাতা ভেজাচ্ছে, তাদের অনেকেই হয়তো এই যুদ্ধের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত নয় কিন্তু মানবিক ইচ্ছা ও কষ্ট পেরিয়ে যায় মানচিত্রে আঁকা সমস্ত রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক সীমানাকে। এমনই অনেক সন্তান, স্ত্রী ও পরিবারকে বিদায় জানাতে ইউক্রেনের সামরিক-বয়স্ক পুরুষদের। হয়তো কোন ক্যামেরায় ধরা পড়েনি সেইসব মুহূর্তগুলো, তাই দুনিয়ার চোখের আড়ালেই রয়ে যায় তাদের চাওয়া-পাওয়াগুলো।
পরিবার-প্রিয়জনকে গাড়িতে তুলে অনেকেই পাঠিয়ে দিচ্ছেন তাদের দেশের অন্যত্র কিংবা বিদেশেও। মৃত্যু ও যন্ত্রণার সংকটে আজ তাই দিশেহারা ইউক্রেন। এই ভিডিওয় তুলে ধরা মুহূর্তগুলো তাই শুধু তার ক্ষনিকের অংশমাত্র। ছবিটা হয়তো একই যুদ্ধের উল্টোদিকে রাশিয়াতেও, কিন্তু কোনও প্রমাণের অভাবে তাই তা হয়ে যায় অজানাই। প্রিয়জনদের সঙ্গে আবার কবে সাক্ষাৎ হবে কিংবা আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে নিশ্চিন্ত নয় কেউই, কিন্তু তবু ক্ষীণ আশায় বুক বাঁধছে গোটা দেশ তথা বিশ্বই। একদিন শেষ হবে যুদ্ধ উঠবে, আবার শান্তির পতাকা। কিন্তু জিতুক যেই, রয়ে যাবে সবাই পরাজিতই।