এ যেন পুতিনেরই পরাজয়, দেশ রক্ষার্থে প্রাণের বাজি রেখে যুদ্ধে সামিল ইউক্রেনবাসীরা

বিগত কয়েকদিনে বিশ্ব দেখেছে এক অন্যরকম যুদ্ধের আবহ। রাশিয়ার ( Russia-Ukraine War ) আগ্রাসনে মানুষের মনে তৈরি করেছে একাধিক প্রশ্ন। কেউ বলেছে, হয় তো এবারই বিশ্ব জুড়ে বেজে উঠল তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের রণডঙ্কা। কারোর আবার মনে হয়েছে, পুনর্গঠিত হতে চলেছে ভেঙে যাওয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন। তবে এই সকল ধারণা কারোর মনে আপনা থেকে জন্ম নেয়নি। সেগুলি আসলে তৈরি করা হয়েছে। তৈরি করেছে ( Russia-Ukraine War ) রুশ সরকার। যুদ্ধের মাঝে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে সোভিয়েত ইউনিয়নের পুনর্গঠন একাধিক প্রোপাগান্ডাকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে রুশ রাক্ষস। নিজেদের আগ্রাসী মনোভাব ও প্রোপাগান্ডার মাধ্যমেই হাতের মুঠোয় করতে চেয়েছে বিশ্ব রাজনীতিকে। কিন্তু এক সপ্তাহ পার হতে না হতেই দরজা-জানলা বন্ধ করে আজ ঘর বন্দি রুশ শাসক। বাইরের পরিবেশও যেন একেবারে গেছে থমকে।
তাহলে কী আবার নতুন কোনও ঝড়ের আশঙ্কা নাকি ব্যর্থ হয়েছে পুতিন সরকার? আসলে এই রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ একদিনের নয়। একটা বড় সময় ধরেই ( Russia-Ukraine War ) ইউক্রেনের উপর নিজের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে চলেছে রাশিয়ার পুতিন সরকার। রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কাছে ইউক্রেন যে একটি ধুলিকণা মাত্র এই বিষয়ে রাশিয়ার ধারণা অতি স্বচ্ছ। কিন্তু যুদ্ধ ঘোষণা করলেই বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলি, এই আশঙ্কাই যেন কুরে কুরে খেয়ে নিচ্ছিল পুতিনকে। আর সেই সমস্যা থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে আনতে পথ বাঁচতে হল অপপ্রচারের।
তবে হাজারও অপপ্রচারও থামাতে পারেনি ( Russia-Ukraine War ) ইউক্রেনবাসীদের। রাশিয়া সেই ছোট্ট রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে, এক সাথে সকলে যেন রুখে দাঁড়ায় ওই রুশ রাক্ষসের বিরুদ্ধে। নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে একবারও দেশ বাঁচাতে দাঁড়িয়ে পড়ে তাঁরা। আসলে রাশিয়া কোনও দিনই ইউক্রেনিয়ানদের অস্তিত্বকে স্বীকার করতে চায়নি। হিটলারের মতোই পুতিনও যেন দিন দিন পরিণত হচ্ছে চরমপন্থী জাতীয়তাবাদীতে। রুশ জাতীয়তাবাদ তুলে ধরতে অস্বীকার করে দিচ্ছে তাঁদের সাথেই গড়ে ওঠা, বেড়ে ওঠা ( Russia-Ukraine War ) ইউক্রেনিয়ানদের। আসলে রাশিয়াও খুব ভালো করে জানে, বর্তমান সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে যাওয়ার ক্ষমতা কারোর কাছেই নেই। ন্যাটো যতই ইউক্রেনের পক্ষে থাকুক তাঁরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যাবে না কোনও পক্ষেই। আর এই ধারণার সব থেকে বড় কারণ, বর্তমানে দাঁড়িয়ে রাশিয়া বিশ্বের বৃহৎ তেল ও গ্যাস প্রদানকারী। গোটা ইউরোপকেই নির্ভর করতে হয় রাশিয়ার উপর।
একটা দেশকে দখল করা হয় তো এই সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে খুব সহজ। কিন্তু সেই দেশের মানুষের মনের বল, শক্তিকে কখনই তাঁরা রুখে দিতে পারবে না। রাশিয়া ( Russia-Ukraine War ) ইউক্রেনীয়দের অস্তিত্বকে স্বীকার না করলেও, তাঁদের রুশ হিসাবে মান্যতা প্রদান করতে চাইলেও ইতিহাসকে কখনই মিথ্যা বানাতে পারবে না তাঁরা। সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রেমী পুতিন হয় তো নিজের স্বপ্ন সফল করতে সক্ষম হবে। হয় তো অস্ত্রের খেলায় দখল করে নেবে ইউক্রেন। কিন্তু সে কখনই সেখানকার মানুষদেরকে নিজের দখল আনতে পারবে না। আজ গোটা দেশ যখন যুদ্ধের মাঝে পড়ে বিধ্বস্ত, তখনও একবারও নিজেদের মাটিকে আঁকড়ে পড়ে রয়েছে ইউক্রেনীয়রা। মিখাইল গর্বাচেভ যে রুশ আর ইউক্রেনীয়দের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক তৈরি করে গিয়েছিলেন। আজ নিজের চরমপন্থী চিন্তাধারার মধ্যে সেই সম্পর্ককেই মাটির সঙ্গে লুটিয়ে দিতে বসেছে পুতিন।
আরও পড়ুন…দীর্ঘদিন পর বড় পর্দায়,এবার নন্দিতা দাসের পরিচালনায় অভিনয় করবে জনপ্রিয় কমেডিয়ান কপিল শর্মা
দুর্ভাগ্যবশত, এই যুদ্ধটা হয় তো দীর্ঘস্থায়ী হতে যাচ্ছে। বিভিন্ন রূপে এটা হয়তো বছরের পর বছর টিকে থাকবে। কিন্তু তার মধ্যেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা ইতিমধ্যেই নির্ধারিত হয়ে গেছে। বিশ্বের সামনে পরিস্কার হয়ে গেছে, ইউক্রেন একটা প্রকৃত রাষ্ট্র, ( Russia-Ukraine War ) ইউক্রেনীয়রা একটা প্রকৃত জাতি, আর তারা মোটেই একটা নয়া রুশ সাম্রাজ্যে বাস করতে চান না।