Jiren Gur : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের হাত ধরেই ফের বাজারে বাংলার অন্যতম সম্পদ খাঁটি জিরেন গুড়

Jiren Gur – ‘বাজারে দাম মেলে না বলেই বাধ্য হয়ে গুড়ে ভেজাল মেশাতে হয়। নাহলে কে না চায় ভালো গুড় তৈরি করতে’- বলতে বলতে চোখের জল পড়ে গেল  বাঁকুড়ার ( Bankura) প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মহল্লাদার পরিবারের মোড়লের। বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে সেই খাঁটি জিরেন গুড় ( Jiren Gur) নিয়ে এসে কলকাতার বাজারে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিলেন অরুণাভ। এবার আপনার জানতে ইচ্ছে হতে পারে, কি এই  জিরেন গুড়।  খেজুর গাছ থেকে প্রতিদিন রস সংগ্রহ না করে তিনদিন অন্তর অন্তর রস সংগ্রহ করা হয়। অর্থাৎ, তিনদিন করে গাছকে জিরিয়ে নিতে বা বিশ্রাম নিতে দেওয়া হয়। চারদিনের মাথায় সেই রস সংগ্রহ করে যে গুড় তৈরি হয়, তাঁরই  নাম জিরেন গুড় ( Jiren Gur)। স্বাদে ও গন্ধে যা বাজারচলতি যে কোনও গুড়কে টেক্কা দিতে পারে।

Jiren Gur – বাজারে টিকে থাকা

কিন্তু শুধু গুণমান ধরে রাখলেই বাজারে টিকে থাকা যায় না, টিকে থাকার জন্যে চাই সঠিক বাজার মূল্য। আর এই বাজার মূল্যই ডেকে এনেছে বিপদ। তাই বাংলার অন্যতম সম্পদ এই জিরেন গুড়ের ( Jiren Gur)  কথা এখন আর কতজনই বা জানেন? নভেম্বর মাসের শুরু থেকেই গাছ ভাড়া নিতে শুরু করেন শিউলি বা মহল্লাদাররা। শিউলি বা মহল্লাদার হলেন খেজুরের রস এবং গুড়ের বংশীয় ব্যাপারী। গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা তারপর গুড় তৈরি এবং তা বিক্রি, সবই করেন পরিবারের কয়েকজন মিলে। তাই দেড়ি না করে বাঁকুড়া জেলার সেগুনসরা গ্রামের একটি মহল্লাদার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অরুণাভবাবু। সেগুনসরা গ্রামে এর আগে তৈরি হয়েছে বাংলার প্রথম বাণিজ্যিক গোলাপের ফার্ম ‘বাঁকুড়া রোজেস’। সেই উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা অন্তরা দাস এবং অনীক পারিয়ালও এগিয়ে আসেন ‘জিড়েন গুড়’ উদ্যোগের পাশে। তবে মহল্লাদারদের আশঙ্কা ছিল জিরেন গুড় ( Jiren Gur)  তৈরি করে বাজারের দামের সঙ্গে টিকে থাকা যাবে না। কিন্তু অরুণাভবাবু জানান, তাঁর খাঁটি জিরেন গুড়ই চাই।

jiren gur

শুরু হয়ে যায় সব প্রস্তুতি। কিন্তু এর মধ্যেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রকৃতি। আমরা সকলেই জানি, খেজুর গাছ থেকে উৎকৃষ্ট রস পেতে গেলে যথেষ্ট ঠাণ্ডা আবহাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এবছর শীত এসেছে বেশ দেরিতে। শেষে ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় গুড় তৈরির কাজ। আর মকর সংক্রান্তির আগের এই সময়টাই তো গুড়ের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তাই অর্ডার পেতেও তেমন সমস্যা হল না।

আরও পড়ুন- https://thebengalichronicle.com/sandy-saha-posted-madan-mitras-sensational-picture/

Jiren Gur – যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের অংশগ্রহণ

আর কাজের আরও সুবিধা হয়ে যায় যখন কলকাতায় এই গুড় বাণিজ্যিকিকরণের দায়িত্ব নেয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের সংস্থা ‘লিফি গ্রিনস’। অরুণাভবাবুর সঙ্গে এই সংস্থায় রয়েছেন সৌম্যকান্তি রায়চৌধুরী এবং মানস ঘোষ। পাশাপাশি এগিয়ে এলেন সুমিত দাস এবং সুস্নাত চৌধুরীরাও। সামাজিক মাধ্যমেও শুরু হল পুরোদমে প্রচারের কাজ। দক্ষিণ কলকাতা থেকে শুরু, তারপর উত্তর কলকাতা হয়ে একেবারে কলকাতার বাইরে জেলা শহরেও পৌঁছে যেতে শুরু করেছে জিরেন গুড় ( Jiren Gur) । এমনকি রাজ্যের বাইরে থেকেও অর্ডার আসতে শুরু করেছে বাংলার এই অমূল্য সম্পদের।

Jiren Gur – নামে-স্বাদে-গন্ধে গুড়

চাহিদা (Demand) বাড়ছে ক্রমশই। প্রথম বছরেই যে সাড়া পেয়েছেন, তাতে আপ্লুত অরুণাভসহ বাকিরাও। আগামী বছরে ( next season) চাহিদা যে আরও বাড়বে, তাতে সন্দেহ নেই। তবুও চাহিদা মেটাতে গিয়ে গুণমানের সঙ্গে আপোষ করতে কোনোভাবেই রাজি নন উদ্যোক্তারা। সীমিত উৎপাদনের মধ্যেই যতটুকু বিপণন সম্ভব, সেটুকুই করতে চান তারা। নামে-স্বাদে-গন্ধে আকাশে বাতাসে চান বাংলার এই অমূল্য সম্পদকে, খাঁটি ‘জিরেন গুড়’ ( Jiren Gur) ।

আরও পড়ুন- https://thebengalichronicle.com/legendary-bengali-cartoonist-narayan-debnath-is-no-more/




Leave a Reply

Back to top button