Khardaha : এ যেন ‘ব্রক্ষ্মা জানেন গোপন কম্মটি’র সিকুয়াল, পৈতে ধারণ করল একরত্তি মেয়ে

রাখী পোদ্দার, কলকাতা : এর আগেও সমাজের চিরাচরিত প্রথা ভেঙে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে অনেকেই। সমাজের কুসংস্কারের বেড়াজালে বাধা পরে থাকেনি তাঁরা। সমাজের সামনে এমনই এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের ( Kharadha) বাসিন্দা শরণ্যা ( Sharanya) ভট্টাচার্য। সমাজে মেয়ের মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠা করতেই এমন সাহসী উদ্যোগ নিলেন সুতপা দেবরায়। আগাগোড়াই আমরা জেনে এসেছি পৈতে ( Upanayana) হয় কেবলমাত্র বামুনের, অর্থাৎ ছেলেদের শুধুমাত্র। কিন্তু বৈদিক যুগে মেয়েরাও ‘দ্বিজা’ হতেন। আর সেই হারিয়ে যাওয়া দিনের কথা ২০২২ সালে ফের মনে করালো পলতা এয়ারফোর্স স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী শরণ্যা। যদিও দশ বছরের এই কন্যাটির কাছে ধর্ম, নিয়ম, রীতি, বৈদিক যুগ- এ সব কিছুই অস্পষ্ট। তবে স্কুল শিক্ষিকা মা সুতপা দেবরায়ের ( Sutapa Debray) প্রচলিত রীতির পরিপন্থী হয়ে সিদ্ধান্তের জেরেই রবিবার বৈদিক মতে দ্বিতীয় জন্ম শুরু করল শারণ্যা ( Sharanya)।
Khardaha : শারণ্যার পৈতে –
রবিবার দুপুরে হলুদ শাড়ি, রংবেরঙের গয়না পরা মেয়েটি এর আগেও পৈতে বা উপনয়ন দেখেছে। কিন্তু সেসব দাদাদের। তবে এবার তাঁর নিজের পৈতে। মেয়ের পৈতে ( Upanayana) দিতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি মা সুতপা দেবরায়কে। ব্রাহ্মণ পরিবারে ছেলেদের পৈতে তো হয়ই। কিন্তু মেয়ের পৈতে! অনেক বিস্ময়ের জবাব দিতে হয়েছে তাকে, মেয়ের অধিকার বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। আর সেটা পারলেনও। দু’বছর ধরে কোথায় পালিত হবে এই অনুষ্ঠান তা খোঁজ করার পরে অবশেষে রবিবার পূরণ হল স্বপ্ন।
উত্তর কলকাতার আর্য সমাজ মন্দিরে উপনয়ন হল সুতপার বালিকা কন্যা শরণ্যার। চাকরি সূত্রে শরণ্যার বাবা অংশুমান ভট্টাচার্য এখন ভিন্ রাজ্যে রয়েছেন। আর্য সমাজ মন্দিরে মাসি, মেসো, কাকা, দিদিমার উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় অনুষ্ঠান। শরণ্যার দিদিমা ভালবেসে নাতনির জন্য সোনার উপবীত বানিয়ে দিয়েছেন। উপনয়নের দিন শাড়ি পরা ছোট্টো শরণ্যা সেই উপবীত পরেছিল।
Khardaha : সুতপার বক্তব্য –
সুতপা রানাঘাটের নপাড়া হাইস্কুলের শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষিকা। মেয়ের পৈতে দেবেন বলে রীতি মতো শাস্ত্র অধ্যয়ন করতে হয়েছিল তাঁকে। তিনি বলেন, “বৈদিক যুগ থেকেই মেয়েদের পৈতে ( Upanayana) দেওয়ার প্রথা চলে আসছে। এখন পৈতে শুনলেই ছেলেদের কথা মনে এলেও আদি বৈদিক যুগে এ ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়ে বিভাজন ছিল না। বৈদিকযুগে মেয়েদেরও পৈতে হত। সময়ের সঙ্গে উপনয়ন শুধু ছেলেদের হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সেটা হবে কেন?’’
Online Dating app : ‘টাইম পাস’ নয়, অতিমারি আবহে অর্ধেক মানুষই চান খাঁটি প্রেম! বলছে সমীক্ষাhttps://thebengalichronicle.com/online-dating-app-survey-finds/
Murder : “ও এখনও কেন মরছে না!” ছুঁড়ি দিয়ে ছিন্নভিন্ন দেহhttps://thebengalichronicle.com/mumbai-murder-boyfriend-girlfriend/
Khardaha : হঠাৎ মেয়ের পৈতে দেওয়ার কথা ভাবলেন কেন –
সুতপা ( Sutapa Debray) জানান, স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের বৈদিক যুগের কথা বলতে গিয়েই মেয়ের পৈতে ( Upanayana) দেওয়ার ভাবনাটা মাথায় আসে প্রথম। তারপর থেকেই শরণ্যার পৈতে দেওয়ার চেষ্টা শুরু করি। কোথায় গেলে সঠিক বিধান জানা যাবে তার জন্য বিভিন্ন জায়গায় খোঁজও নেওয়া হয়। দক্ষিণ ভারতে মেয়েদের পৈতে ( Upanayana) হয় শুনে সেখানেও খোঁজ নেন তাঁরা। যোগাযোগ করেন কাশীর মন্দিরেও। কিন্তু করোনা অতিমারি চলতে থাকায় সেখানে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে এতো কিছুর মধ্যে আটকায়নি ইচ্ছা পূরণ। সরস্বতী পুজোর পরের দিন মাঘী ষষ্ঠী তিথিতে উত্তর কলকাতার আর্য মন্দিরে পৈতে হল শরণ্যার।