Durga Puja 2022: আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা, দেখে নিন উত্তর কলকাতার সেরা কয়েকটি পুজো

জয়িতা চৌধুরি,কলকাতাঃ দুর্গাপুজো মানে বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব। পুজোর পাঁচটা দিন ঘুরে ঘুরে মণ্ডপ ও প্রতিমা দর্শন দুর্গোৎসবের সবথেকে বড় আকর্ষণ। সকাল থেকে শুরু হয় বাঙালিদের পুজো পরিক্রমা। আট থেকে আশি সবাই যোগ দেন এই পরিক্রমায়। গত দুই বছর অতিমারীর ফলে মণ্ডপগুলিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তবে এই বছর ইউনেস্কো দুর্গাপুজো ‘ইনট্যানজিবল হেরিটেজ’ আখ্যা পেয়েছে। আর তাই অতিমারীর প্রকোপে মণ্ডপে মণ্ডপে কমে যাওয়া মানুষের ঢল হয়ত ফিরতে চলেছে। তবে এখন উত্তর কলকাতার পুজো মানেই সাবেকি পুজো নয়। উত্তরে সাবেকি পুজোর পাশাপাশি হয় থিম পুজোও। রইল এমন চার পুজো তালিকা…
শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোঃ
রাজবাড়ির দুর্গাপুজো মানেই সাবেকিআনার গন্ধ। সেই গন্ধকেই বাঁচিয়ে রেখেছে কলকাতার বুকের প্রাচীনতম রাজবাড়ি, উত্তর কলকাতার শোভাবাজার রাজবাড়ি। চিরাচরিত প্রথা মানে আজও ঠাকুর দালানে আয়োজন করা হয় রাজবাড়ির পুজো। রাজপ্রাসাদের সিংহদ্বারের সামনে কিছুটা জায়গা ফাঁকা রয়েছে। এই ফাঁকা জায়গা থেকেই সোজা তাকালেই করা যায় প্রতিমা দর্শন। তবে যারা সামনে থেকে প্রতিমা দর্শন করতে চাল তাদের অবশ্য জুতো খুলে ঠাকুরদালানে ঢুকতে হয়। প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও রাত্রে বন্ধ হয়ে যায় রাজবাড়ির ফটক। রাজবাড়িতে ঠাকুর দেখতে হলে মেট্রো করে আসতে পারেন শোভাবাজার সূতানুটি স্টেশন। এছাড়া বাসে করে এলে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের অথবা বিধান সরণীর হাতিবাগান থেকে পায়ে হাঁটা দুরত্বে পৌঁছে যেতে পারেন রাজবাড়ির পুজো দেখতে।
টালা বারোয়ারিঃ
উত্তর কলকাতায় টালা ব্রিজের খুব কাছেই ধুমধাম করে হয় টালা বারোয়ারি পুজো। শত বছর পূর্ণ করে ফেলা এই পুজো ২০১০ থেকে শুরু করেছে আধুনিক থিম পুজোর রেওয়াজ। প্রতি বছরই সামাজিক কোনও চিন্তা ভাবনাকে মণ্ডপের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলে টালা বারোয়ারি। আজ অবধি শারদীয়ার বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় টালা বারোয়ারি পেয়েছে প্রায় দুশোর বেশি পুরষ্কার। ‘কই পাখি আকাশে’ বা ‘হাইব্রিড মহিষাসুরমর্দিনী’ অথবা কাঁচের উপর লেখা ‘আমি আমার মায়ের মত’ থিমগুলি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল সেই বছরগুলোতে। শহর বা শহরতলীর যেখানেই থাকুন না কেন বিভিন্ন এলাকা থেকে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় টালা বারোয়ারির পুজো মণ্ডপে। কারণ, পুজো মন্ডপের খুব কাছেই আছে শ্যমবাজার মেট্রোস্টেশন। তার এক বা দুই নম্বর গেট অথবা চক্ররেলের টালা স্টেশন থেকেই কয়েক মিনিটের হাঁটা পথ এই পুজো মণ্ডপ। শ্যমবাজারগামী বাসে করে এলে আর. জি. কর স্টপেজ বা টালা পোস্ট অফিস থেকে হাঁটা পথ দুরুত্ব পুজোর মণ্ডপ।
কুমোরটুলি সর্বজনীন ও কুমোরটুলি পার্ক সর্বজনীনঃ
মহানগরীর কুমোরটুলি শুধুমাত্র প্রতিমা তৈরির জন্যই পরিচিত নন। কুমোরটুলিতে দুটি বড় পুজো হয়। মৃৎশিল্পীদের দ্বারা আয়োজিত দুটি হেভিওয়েট পুজো হল কুমোরটুলি সর্বজনীন ও কুমোরটুলি পার্ক সর্বজনীন। এই পুজো দুটির মণ্ডপ বা প্রতিমা দুইই মত্ত সাবেকিয়ানা থিম নিয়ে। বহু পুরষ্কার ও সন্মান জেতা পুজো দুটি বহুল জনপ্রিয় কলকাতাবাসীর কাছে। বাগবাজার স্টেশন থেকে হাঁটা পথের দুরত্বে রয়েছে এই পুজো মণ্ডপটি। এছাড়াও বাসে করে এলে রাজবল্লভ পাড়া স্টপেজে নেমে কিছুটা হেটে গেলেই কুমোরটুলি সর্বজনীন ও কুমোরটুলি পার্ক সর্বজনীন।
বাগবাজার সর্বজনীনঃ
কলকাতার রাজবাড়ির পুজো মাত্রেই শোভাবাজারের পরই নাম আসে বাগবাজার রাজবাড়ির। ১৯১৯ সালে প্রথম শুরু হয় এই পুজো। ১৯৩৮ বা ১৯৩৯ নাগাদ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুও যুক্ত হয়ে পড়েন এই পুজোর সঙ্গে। থিম পুজোর ধার না ধরেও, সাবেকি পুজোর মাধ্যমে কি করে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা যায়, তা প্রমান করেছে বাগবাজার সর্বজনীন। এখানে প্রতিমা দর্শনের সহজ উপায় হল বাগবাজার স্ট্রিট ধরে গিরীশ মঞ্চের দিকে কিছুটা এগোলেই দেখা যাবে বাগবাজার সর্বজনীনের দুর্গাপুজো।