Kolkata First Metro: ৮৪ নয়, ১৯২১ এই ব্রিটিশদের হাত ধরে ছুটত পাতাল রেল! একটা গন্ডগোল পরিকল্পনায় ঢেলে ছিল জল

নতুন আলো, রঙে ফুটে উঠেছে শিয়ালদহ। বাঙালিও বেশ নতুনের আগমনে আনন্দিত। বাসের ধাক্কা ছেড়ে এবার শিয়ালদহ থেকে সেক্টর ফাইভ পৌঁছে যাওয়া হবে সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়েই। তবে এই শিয়ালদহের নতুন মেট্রো স্টেশন যেন একেবারে উস্কে দিল সেকালে কথা। দেশের প্রথম রেলের সড়ক কিংবা প্রথম মেট্রোর সুড়ঙ্গ, মানুষের উত্তেজনা। শিয়ালদহ মেট্রো যেন বাঙালিকে অনুভূতি দিল সেকালের। 

গত শতাব্দীর বিশের দশক। কলকাতা তখন সদ্য প্রাক্তন রাজধানী। রাজধানী সরে যাওয়া অধিকাংশ ব্রিটিশ পাড়ি দিতে হয়েছিল দূরের রাজ্যে। কিন্তু তিলোত্তমার মায়া যেন তখনও কাটাতে পারেননি অনেক ব্রিটিশই। তাই রয়ে গিয়েছিল এই বঙ্গের মাটিতেই। আর সেই সময়ই গঙ্গার এপার থেকে ওপার পর্যন্ত মাটির সুড়ঙ্গ দিয়ে ছুটেছিল পাতাল রেল। নদীর নীচের সুড়ঙ্গ মিলিয়ে দিয়েছিল দুই শহরকে। কিন্তু ইতিহাসে এসব কোথায় লেখা? ইতিহাস তো  বলছে, ১৯৮৪ স লে প্রথম ইন্দিরা গান্ধীর হাত ধরে কলকাতায় পাতাল রেলের সূত্রপাত। তা আদতেই সত্য, কিন্তু বিশ শতকের ঘটনা আদতেই মিথ্যে নয়। সব কিছু ঠিক থাকলে আজ ইতিহাস হয়ে যেত অন্য। ব্রিটিশদের হাত ধরে সূচনা হত পাতাল রেলের। 

kolkata metro

কলকাতা কিন্ত বিংশ শতকে লন্ডনে পরিণত হয়নি। ভারতের রাজধানী হওয়ায় এখানে বেড়েছিল ব্রিটিশদের  আনাগোনা।  আর সেই সূত্র ধরেই তিলোত্তমাকে লন্ডনের রূপ দেওয়ার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয় ব্রিটিশরাই। সমস্ত অনুপ্রেরণা আসত সাগরের ওপারে ইংল্যান্ডের রাজধানী থেকে। আর তারই ফসল ছিল মেট্রো রেল। ১৮৬৩ সালের জানুয়ারি মাসের এই ধরত্রী সকল বাসিন্দা দেখল পাতাল রেল। মাটির নীচে টিউবের মতো দ্রুত বেগে ছুটে গন্তব্যে পৌঁছে যেতে পারে এই রেল। বিশ্ব জুড়ে শিল্পব্যবস্থাকে যেন নাড়িয়ে দিল এই ভাবনা। 

তারই কিছু বছর পর অর্থাৎ সাল ১৯২১,  গঙ্গার পশ্চিম হাওড়ার সঙ্গে পুবের ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের যোগাযোগ স্থাপন করার চিন্তা করা হচ্ছিল। সেই সময়ই প্রশ্ন এল, লন্ডনের মতো টিউব রেল বা মেট্রো এখানেই করা যাক। যেমন কথা, তেমন কাজ। এপারের বাগমারি থেকে ওই পাড়ের হাওড়ার শালকিয়া পর্যন্ত মেট্রো চলার সিদ্ধান্ত হয়ে গেল। শহর জুড়ে তখন হইহই রব। মানুষ একেবারে আনন্দে আত্মহারা। গঙ্গার নীচ থেকে যে চলবে রেল গাড়ি। শুনেই যেন কাঁটা দেয় শরীর জুড়ে। এই গোটা পরিকল্পনার খরচ দাঁড়িয়ে ছিল ৩৫ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা। কিন্ত এত কিছু নির্ধারণ করেও শেষমেশ বন্ধ হয়েছিল কাজ। যার নেপথ্যে মূল কারণ ছিল, বিপুল খরচ বহনের ভার ছিল প্রাদেশিক সরকারের উপর। কিন্তু তা তাঁরা বহন করতে না পারায় অবশেষে ১৯২৩ সালেই বন্ধ হয়ে যায় ভারতের প্রথম পাতাল রেল গঠনের কাজ।




Back to top button