একশো বিঘার ওপর জমি ব্যাঙ্কে লক্ষ লক্ষ টাকা, মানুষ নয় ভারতের বুকে দানের টাকায় ‘কোটিপতি পায়রা’
আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা টাকা জমানোর স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু সারাজীবন কষ্ট করে টাকা জমিয়ে কত টাকাই আর জমানো যায়! নানা কারণে জমানো টাকা খরচ হয়ে শেষ পর্যন্ত সঞ্চয় বলতে যেটা থাকে সেটা নামমাত্র। তবে যে মানুষ টাকার জন্য পাগল সেই মানুষকে ছেড়ে এমন এক প্রাণী রয়েছে যে কিনা টাকার মূল্য না বুঝেই কোটিপতি।
আসলে এদেশে কেন গোটা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে কিছু কুসংস্কার। যার মধ্যে কয়েকটিতে আবার অনেক যুক্তিবাদীরা বিশ্বাস করেন। যেমন, পায়রাকে বলা হয় “শান্তির দূত”। তবে ভারতের এক শহরে রয়েছে এমন কিছু পায়রা যাদের “কোটিপতি” নামে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
কোটিপতি পায়রা আবার হয় নাকি! অবাক করার মত বিষয় হলেও এটাই সত্যি। অনেকেই কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কেউ কেউ এই কারণে খাওয়া-দাওয়া ফেলে সারাদিন ছুটে বাড়ান টাকা উপার্জনের উদ্দেশ্যে। কিন্তু তারপরও তার স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। অন্যদিকে কোটিপতি হওয়ার অর্থ না বুঝেই হাজারো পায়রা কোটিপতি হয়ে আছে এই শহরে। ভারতের রাজস্থানের নাগৌর জেলার যশনগরে বাস কোটিপতি পায়রাদের। এই পায়রারাই এখন মানুষকে দেখছে, গরুদের নিশ্চিন্তে রাখছে। পায়রারা না থাকলে অনেক মানুষ বেকার হয়ে যেতেন। তাদের পরিবার চলছে পায়রাদের কৃপায়।
এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে, পায়রা আবার কোটিপতি হল কি করে? তাহলে ব্যাপারটা খুলেই বলি, “প্রভুসিং রাজপুরোহিত” নামে পায়রাদের একটি সংস্থা আছে রাজস্থানে। মূলত শিল্পপতিদের সাহায্যার্থে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সংস্থাটি। যার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজস্থানের একটি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান রামদিন চেটিয়া। এই সংস্থার পক্ষ থেকে একটি প্রকল্প শুরু করেন সজ্জনরাজ জৈন, যিনি নিজেও শিল্পপতি। এই সংস্থার অধীনে অনেক জমি রয়েছে যে জমিতে প্রায় ২৭ টির কাছাকাছি দোকান রয়েছে। এই দোকান থেকেই কোটি টাকার উপর ব্যবসা হয়।
এখানেই শেষ নয়, দোকান ছাড়াও সংস্থার আওতায় ১২৬ বিঘা জমি এবং প্রচুর পরিমাণ টাকা রয়েছে। তবে শুধু ব্যবসায়ী নয়, পশুপাখিদের দেখাশোনাও করে সংস্থাটি। জমি গুলির মধ্যে ১০ বিঘা জমিতে বাড়ানো হয়েছে গোশালা, যেখানে প্রচুর গরু থাকে। বহু মানুষ মন খুলে অর্থ প্রদান করেন এই সংস্থায়। সকল পশুপাখির চিকিৎসার খরচও এই সংস্থা বহন করে। দোকান গুলি প্রায় ৮০ হাজার টাকা আয় করে প্রতিমাসে। আর এর পিছনে পায়রাগুলিই পয়মন্ত বলে মনে করেন সংগঠন সহ এলাকার একাধিক মানুষ। গত ৩০ বছর ধরে এই সংস্থা পায়রাদের নামে সম্পত্তি থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে পশুপাখি সেবা করে চলেছেন। একই সঙ্গে তারা যুক্ত আছেন নানারকম সামাজিক কাজকর্মে।