Khuridam Birth Anniversary – স্বাধীনতা সংগ্রামে যার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা, রইল ক্ষুদিরামের ছেলেবেলার কাহিনী

১৮৮৯ সালের ৩রা ডিসেম্বর মেদিনীপুর (Medinipur) জেলার কেশপুর থানার অন্তর্ভুক্ত মোহবনী (Mohobini) নামে একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ভারতীয় বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসু (Khudiram Bose)। বাবা ত্রৈলোক্যনাথ বসু (Trailokyanath Bose) ও মা লক্ষীপ্রিয়া দেবী (Lakshmipriya Devi )। মা বাবার তিন মেয়ের পর জন্ম নিয়েছিলেন চতুর্থ সন্তান ক্ষুদিরাম। লক্ষীপ্রিয়া দেবীর এর আগের দুই পুত্রসন্তানই অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন। তাই এই সন্তানের মৃত্যুর আশঙ্কায় সামান্য কিছু ক্ষুদের (শস্য) বিনিময়ে তার বড়ো দিদির কাছে বিক্রি করে দেন তিনি। সেই থেকেই তার নাম হয় ক্ষুদিরাম বসু।

ইতিহাসের পাতা উল্টালেই জানা যায়, ১৮৯৬ সালের মার্চ মাসের শেষ বা এপ্রিল মাসের গোড়ার দিকে মেদিনীপুর জেলার হাটগেছিয়া (বর্তমান নাম দাসপুর) গ্রামে বসবাস করতে শুরু করেন ক্ষুদিরাম ও তার পরিবার। ছোটৌবেলা থেকেই গ্রামের অন্য ছেলেদের তুলনায় ক্ষুদিরামের পার্থক্যটা সহজেই নজরে পড়তো। রায়বাড়ি ( ক্ষুদিরামের তখনকার বসতভিটে)  থেকে কিছুটা দূরে পন্ডিত গিরিশ মুখোপাধ্যায়ের পাঠশালাতে পড়তে যেতেন ক্ষুদিরাম। খেয়াল করার মতন বিষয় ছিল, পাঠশালার ছেলের দল পড়াশোনায় অনাগ্রহী ক্ষুদিরামের কথা মন্ত্রমুগ্ধের মতন মেনে চলত। পড়াশোনায় তেমন গ্রাহ্য না থাকলেও দুষ্টু বুদ্ধিতে সেরা ক্ষুদিরাম পাঠশালার মাস্টারমশাইয়ের কাছে বকা খেয়েও সরস্বতী পুজোর আয়োজনে কখনো ত্রুটি করতেন না। পাঠশালা পাশের রাস্তা দিয়ে যখন বর-কনে গোরুর গাড়ি নিয়ে যেত, তাদের থেকে জোরাজুরি করে পয়সা দিতে বাধ্য করতেন পড়ুয়ারা।

বাংলার গর্ব ক্ষুদিরাম,ক্ষুদিরাম বসুর জন্মবার্ষিকী,বিপ্লবী জীবনের খবর,ইতিহাসের খবর,ক্ষুদিরাম বসুর আত্মবলিদানের খবর,স্বাধীনতা সংগ্রামীর খবর,Bengal's Pride Khudiram,Khudiram Basu's birth anniversary,news of revolutionary life,news of history,news of Khudiram Basu's self-sacrifice,news of freedom fighter

১৮৯৬ থেকে ১৯০১ সালের পর্যন্ত দাসপুরে থাকার পর সপরিবারে তমলুকে চলে যান ক্ষুদিরাম। সেখানে গিয়ে তমলুকের হ্যামিলটন বিদ্যালয়ে ভর্তি হন ক্ষুদিরাম। খুব অল্প বয়সেই দেশকে ভালবেসে দেশের স্বার্থে রাজনীতিতে নামে ক্ষুদিরাম। তমলুকে গিয়েই তার পরিচয় হয় পুন্যচন্দ্রের সঙ্গে। এরপর মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে পড়ার সময় ক্ষুদিরামের সঙ্গে পরিচয় হয় হেমন্ত কানুনগো, জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর।
১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের সময় একেবারেই বিদ্যালয়মুখো হওয়া বন্ধ করে দেন ক্ষুদিরাম। এই সময় স্কুল ছাড়ার পরেই ক্ষুদিরাম বিপ্লবী পার্টির সদস্য হন এবং ‘বন্দেমাতরম’ প্রচারপত্র বিতরণে সক্রিয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯০৭ সালের ৬ই ডিসেম্বর বাংলার নারায়ণগড় রেলওয়ে স্টেশনে বোমা বিস্ফোরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ক্ষুদিরাম বসু।

আরও পড়ুনঃ ক্ষুদিরামের জন্মবার্ষিকীতে ফিরে দেখা রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের ইতিহাস

১৯০৮ সালে কিংসফোর্ডকে হত্যার চেষ্টায় ব্যর্থ হয় প্রফুল্ল চাকি ও ক্ষুদিরাম বসু। কিংসফোর্ডের গাড়িতে ঐদিন ছিলেন না তিনি। সেদিন তার গাড়িতে ছিলেন অন্য এক জেলা অফিসারের স্ত্রী ও মেয়ে। নিরপরাধ দুই সাধারণ মানুষের হত্যামামলায় গ্রেফতার করা হয় ক্ষুদিরাম বসুকে। ১৯০৮ সালের ১১ ই অগাস্ট মুজাফফরপুর জেলে ফাঁসি দেওয়া হয় বাংলার এই অগ্নিপুত্রকে।




Back to top button