‘রাম নামেই’ সিঁদুরে মেঘ দেখছে সংখ্যালঘুরা! লাগাতার গণপিটুনির ঘটনায় প্রশ্নের মুখে মানবাধিকার

‘রাম নামেই’ সিঁদুরে মেঘ দেখছে সংখ্যালঘুরা! লাগাতার গণপিটুনির ঘটনায় প্রশ্নের মুখে মানবাধিকার

কখনও গো মাংস ভক্ষণের অভিযোগে গণপিটুনি তো কখনও আবার জোর করে জয় শ্রীরাম বলতে বাধ্য করা, ২০১৪ সাল মোদী জমানা শুরুর পর থেকেই যেন গোটা দেশেই ধীরে দীরে বাড়তে শুরু করেছে সংখ্যালঘু নিপীড়নের মাত্রা। এদিকে এই ধরণের ঘটনার জেরে সবথেকে বেশি নজর কেড়েছে পদ্ম শাসিত রাজ্যগুলিই। তালিকায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো গোবলয়ের বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলি। ‘জয় শ্রীরাম’ না বলায় হেনস্থার সেই চেনা ছবি ফের দেখা গেল মধ্যপ্রদেশে। ঘটনাস্থল মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনীর সেকলি গ্রাম।

ভিডিয়োতে যে মুসলিম ব্যাক্তিটিকে নিগ্রহ করা হচ্ছে, পুরনো-ভাঙাচোরা জিনিসের কেনাবেচা করে দিন গুজরান করেন তিনি। ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, দুই যুবক ওই ব্যক্তির হাত ধরে জোর করে তাঁকে জয় শ্রীরাম বলানোর চেষ্টা করছেন। ওই দুই যুবকের বার্তায় স্পষ্ট, হিন্দু এলাকায় ঢুকে ব্যবসা করতে গেলে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতেই হবে। এই কথা শুনে ওই মুসলিম ব‌্যক্তি অভিযুক্তের হাত ছাড়িয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁকে জোর করে ধরে রাখেন ওই দুই যুবক। অবশেষে যখন তাঁকে মারতে উদ্ধত হয় এক যুবক, তখন নিজের প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে সেই মুসলিম ব‌্যক্তি ‘জয় শ্রীরাম’ বলেন।

বাড়ছে উদ্বেগ

তবে আমাদের দেশে এই ঘটনা নতুন কিছু নয়। বিজেপি দেশের শাসন ক্ষমতা কায়েম করার পর থেকে এই ধরনের ঘটনা বেড়েই চলেছে ক্রমশ। এমনকি জয় শ্রীরাম না বলায় পিটিয়ে খুন পর্যন্ত করা হয়েছে বহু মানুষকে। বছর দুয়েক আগে ঝাড়খণ্ডের ২৪ বছরের এক যুবকে নির্মমভাবে পিটিয়ে মারা হয় ‘জয় শ্রীরাম’ না বলার কারণে।

বাঙালি চুড়ি বিক্রেতাকে বেধড়ক মার

কয়েক দিন আগে এই মধ্যপ্রদেশেই মুসলিম হওয়ার ‘অপরাধে’ এক বাঙালি চুড়ি বিক্রেতাকে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। এমনকি সমস্ত চুড়ি ভেঙে, টাকাকড়ি কেড়ে নিয়ে তাকে মারতে মারতে এলাকা ছাড়া করে একদল লোক। ঘটনার সমর্থনও করে সেই রাজ্যের মন্ত্রী! শুধু তাই নয়, কয়েকমাস আগে মন্দিরে জল পানের ‘অপরাধে’ ১৪ বছরের এক মুসলিম কিশোরকে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। বলতে বলা হয় জয় শ্রীরাম। যা দেখে নৃশংসতায় শিউরে ওঠেন নেটিজেনরা। মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, ‘হিন্দু ছাড়া অন্যান্য ধর্মের মানুষদের মন্দিরে ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’

প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে

বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে সংখ্যালঘুদের উপরে এমন অত্যাচারের ঘটনা ক্রমশই বাড়ছে। বহু ক্ষেত্রেই নীরব দর্শকের ভূমিকা নিচ্ছে পুলিশ। আর কিছু ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হলেও এমন ধারায় অভিযোগ আনছে যে তারা সহজেই জামিন পেয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, ভারতে থাকতে গেলে কি জয় শ্রীরাম বলা বাধ্যতামূলক ? ‘জয় শ্রীরাম’ না বললে কি দিনের পর দিন এভাবেই মার খাবে সংখ্যালঘুরা?




Back to top button