৩৭% গ্রাম্যশিশু ভুলতে বসেছে বর্ণমালা! ৯৭% অবিভাবকদের দাবি ‘স্কুল খোলা হোক’
দুঃস্বপ্নের মতো করোনার তিনটে ঢেউয়ের ধাক্কায় ছারখার হয়ে গিয়েছে গোটা দেশ। ব্যবসায় মন্দা, অর্থনীতিতে ধ্বস, স্বজনহারানোর বেদনা, চাকরিতে ছাটাই এসব রোজকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তার উপর প্রায় দেড় বছরের উপর বন্ধ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিছু কিছু স্কুলে অনলাইনে লেখাপড়া নমঃ নমঃ করে চললেও এমন প্রত্যন্ত গ্রামও রয়েছে যেখানে অনলাইন, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন শব্দগুলি উচ্চারণ করাও খানিক বিলাসিতা৷
স্বভাবতই করোনার এই ধাক্কায় নড়বড়ে হয়ে পড়েছে গোটা দেশের শিক্ষার প্রসারও। কোভিড মহামারীর কারণে স্কুল বন্ধের প্রভাব ঠিক কতটা তা অধ্যয়ণ করতেই ২০২১ সালের অগাস্ট মাসে “স্কুল চিলড্রেনস অনলাইন এবং অফলাইন লার্নিং (স্কুল)” কর্তৃক সম্প্রতি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, স্কুল বন্ধের পর থেকে বর্ণমালা ভুলতে বসেছে অশিকাংশ শিশু। সমীক্ষা বলছে প্রায় ৪৮ শতাংশের বেশি শিশু কয়েকটি শব্দ ছাড়া কিছুই পড়তে পারছেনা।
স্কুলের বিকল্প হিসেবে অনলাইন পঠনপাঠন শুরু হয়েছে, কিন্তু আদৌও এই মাধ্যম কতটা কার্যকরী তা খতিয়ে দেখতেই ১৫ টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক আসাম, বিহার, চণ্ডীগড়, দিল্লি, গুজরাট, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের ১,৩৬২ টি পরিবারের উপর এই সমীক্ষা চালায়। পরিবারগুলি বেছে নেওয়া হয়েছে কিছু শর্তের ভিত্তিতে- ওই পরিবারেরর একজনকে প্রাইমারি বা আপার প্রাথমিক বা উচ্চ প্রাথমিক শ্রেণির পড়ুয়া হতে হবে।
এই রিপোর্টে আশার বদলে হতাশাই বাড়ছে। দেখা যাচ্ছে বিকল্প অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় গ্রামের মাত্র ৮ শতাংশ ছাত্র পড়ার সুযোগ পাচ্ছে, এবং প্রায় ৩৭% শিশু অনলাইন শিক্ষার ধার কাছ দিয়ে যায়নি। শহরের ক্ষেত্রেও যে বিপুল উন্নতি হয়েছে তা নয়। দেখা যাচ্ছে মাত্র ২৪ শতাংশ শিশু অনলাইন মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাস করছে। এক্ষেত্রে প্রায় ৯৭% অভিভাবকরা মনে করেন যে লকডাউনের সময় তাদের সন্তানদেরর পড়া ও লেখার ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে এবং তারা মরিয়া হয়ে চায় স্কুলগুলি আবার চালু হোক।