প্রথম মহিলা পেরালিম্পিয়ান হিসেবে টেবিল টেনিসে পদক জিতলেন ভাবিনা
ওয়েব ডেস্ক: ২০২০ টোকিও পেরালিম্পিক্সে ভারতের হয়ে ওমেন’স সিঙ্গেল উইলচেয়ার টেবিল টেনিসে রুপো জিতলেন ভাবিনা হাসমুখভাই প্যাটেল। ফাইনাল ম্যাচে চিনের জাও য়িঙের কাছে ৩-০ স্ট্রেষ্ট সেটে হেরে রুপোতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়ে ভাবিনাকে।
হেরে গিয়ে কিছুটা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন ভাবিনা। আক্ষেপের সুরে তিনি জানান, ‘চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু নিজের একশো শতাংশ দিতে পারিনি আজ।’ বিশ্ব রেঙ্কিংয়ে ১ নম্বরে থাকা য়িঙের কাছে গ্রুপ স্টেজের প্রথম ম্যাচেও পরাজিত হতে হয়েছিল ভাবিনাকে। কিন্তু সেই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও মানসিক শক্তি সঞ্চয় করে ফাইনালের দিকে এগোতে থাকে ভাবিনা। গতকাল, শনিবার বিশ্ব রেঙ্কিংয়ে ৩ নম্বরে থাকা চিনের মিয়াও জহাংকে ৭-১১, ১১-৭, ১১-৪, ৯-১১, ১১-৮ স্কোরে হারিয়ে ফাইনালে উঠে ইতিহাস গড়েন ভাবিনা। কিন্তু ফাইনালে ফের তাঁকে চিনের জাও য়িঙের সামনে পড়তে হয়। ম্যাচ হারলেও প্যারালিম্পিক্সে মেয়েদের টেবলে টেনিসে প্রথমবার পদক জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেন তিনি। এর আগে ২০১৬ রিও পেরালিম্পিক্সে শট পাট বিভাগে রুপো আনেন বর্তমান পিসিআই ( প্যারালিম্পিক কমিটি অফ ইন্ডিয়া ) সভাপতি দীপা মালিক।
ম্যাচের সম্পর্কে ভাবিনা বলেন, ‘আমি চেষ্টা করেছিলাম য়িঙকে সাইড বল বেশি করে খেলানোর। তবে ও আমার থেকে বেশি অভিজ্ঞ এবং আমার স্ট্রাটেজিগুলো সে আগে থেকেই ধরে নিতে পারছিল।’ হারের পিছনে নিজের দোষ স্বীকার করে বলেন, ‘আমারও চেষ্টায় খামতি ছিল। নিজের ১০০ শতাংশ দিতে আমি ব্যর্থ হয়েছি। আমি খেলা বোঝার আগেই তা আমার হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছিল।’
প্রসঙ্গত, স্বর্ণপদক জয়ী চিনের জাও য়িঙের মুকুটে যুক্ত হল আরও একটি পালক। এই নিয়ে মোট ৬টি স্বর্ণপদক জিতলেন ৩২ বছর বয়সী এই চীনা প্যারালিম্পিয়ান। ২০০৮ বেইজিং পেরালিম্পিক্সে এবং ২০১২ লন্ডনে ওমেন্স সিঙ্গেল এবং ওমেন্স ডাবলে স্বর্ণপদক যেতেন তিনি। যদিও, ২০১৬তে রিও পেরালিম্পিক্সে সিঙ্গলসে পদকশুন্য থাকলেও বাজিমাত করেন ওমেন’স ডাবলসে।
ভাবিনাকে নিয়ে উচ্ছ্বাসিত গোটা দেশের মানুষ। টুইটারে শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা। ভাবিনাকে অভিবাদন জানিয়েছেন গৌতম গম্ভীর, পি.টি উষা, সচিন টেন্ডুলকার সহ অনেকেই। পদক পেয়ে ভাবিনা জানান, ‘দেশবাসী এবং সহযোদ্ধাদের ভালোবাসা না থাকলে আজ এই জায়গায় পৌঁছাতে পারতাম না। ছোট থেকে যারা যারা আমার পাশে ছিলেন, আমার শারীরিক প্রতিবন্ধিতা কাটিয়ে তুলতে সাহায্য করেছেন, সবাই কে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’ মেডেল জিতে কিছুটা আবেগপ্রবন হয়ে ভাবিনা বলেন, ‘আমি আশা করছি, আমার এই মেডেল শুধু আমার না, ভারতের সেই সকল মানুষদের কাছে এক অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে যারা নিজেদের শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে পিছনে ফেলে রেখে জীবনে ঘুরে দঁড়াতে চান।’