কর্মফল, প্রতি রাতে নতুন নতুন পুরুষ লাগত! শেষ বয়সে দেহে পোকা পড়ে মৃত্যু এই অভিনেত্রীর

অনীশ দে, কলকাতা: ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে যেমন গ্ল্যামারের ঝলকানি রয়েছে ঠিক তেমনই রয়েছে অন্ধকারের হাতছানি। একাধিক অভিনেতা অভিনেত্রীরা রাতারাতি তারকা হয়ে ওঠেন। আবার সেই নক্ষত্রের পতনও ঘটে সমান গতিতে। আশির দশকের শেষে দক্ষিণী ছবির অন্যতম নায়িকা হিসেবে নাম করেন নিশা নূর (Nisha Noor)। মূলত তামিল, তেলেগু ও মালায়ালাম ছবিতে অভিনয় করতেন তিনি। কামাল হাসান (Kamal Haasan), রজনীকান্তের (Rajinikanth) মত সুপারস্টারদের বিপরীতে অভিনয় করেছেন তিনি।
কল্যানা আগঠিগল(১৯৮৬), আইয়ার দ্যা গ্রেট(১৯৯০) এবং টিক! টিক! টিক! – এর মত একাধিক সুপারহিট ছবি দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন তিনি। বালাচন্দ্রন, বিষ্ণু, চন্দ্রশেখরন প্রমুখ নামকরা পরিচালকদের ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। সাফল্যের শিখরে দাড়িয়ে ছিলেন নূর। সেই মুহূর্তের সেরা অভিনেতাদের বিপরীতে অভিনয় করেছেন নিশা। কিন্তু এই সুখ বেশিদিন ভোগ করতে পারেননি তিনি (Nisha Noor)।
ধীরে ধীরে ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যান তিনি। কিন্তু তার অন্তর্ধানের রহস্য কী? শোনা যায় সেই সময় নানান প্রযোজকদের সাথে ওঠা বসা ছিল নূরের। তাদেরই একজন অর্থের লোভ দেখিয়ে তাকে নামিয়ে আনে বেশ্যাবৃত্তিতে। অভিনেত্রী হিসেবে তার প্রতিচ্ছবি পুরোপুরিভাবে ধ্বংস হয়ে যায়। কোনো সনামধন্য পরিচালক বা অভিনেতা তার সাথে কাজ করতে চান না। এরপর নিজে থেকেই ইন্ডাস্ট্রিকে বিদায় জানান নিশা (Nisha Noor)।
মাত্র কয়েকবছরেই নিশা অর্থনৈতিকভাবে ভুগতে থাকেন। এরকম অবস্থায় পড়ে বাড়ি পর্যন্ত ছেড়ে দেন তিনি। নিজের পরিবার, বন্ধু বান্ধবকে বিদায় জানিয়ে হারিয়ে যান জনসমুদ্রে।২০০৭ সালে আবার তাকে দেখতে পাওয়া যায় এক দরগার সামনে। কিন্তু সেইসময় দেখে চেনা যায় না তাকে। রীতিমত কঙ্কালে পরিনত হয়েছিলেন নিশা। সারা দেহে ছিল পোকার বাসা, ঘুরে বেড়াচ্ছিল পিঁপড়ে। চেন্নাইয়ের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর জানা যায় তিনি AIDS রোগে আক্রান্ত।
হাসপাতালে ভর্তি করার কিছুদিনের মধ্যেই সকলকে ছেড়ে পরলোক গমন করেন নিশা।চলচ্চিত্র জগতে যেমন রোশনাই রয়েছে ঠিক তেমনই রয়েছে ঘুটঘুটে অন্ধকার। নিশা নূর একমাত্র নন যিনি বেশ্যাবৃত্তির ফাঁদে পা দিয়ে নিজের জীবন এবং ক্যারিয়ার নষ্ট করেছেন। এই তালিকায় রয়েছে আরও অনেক অভিনেত্রী। কিন্তু কোন উপায়ে রক্ষা যাবে এই অন্ধকারকে? তার উত্তর হয়তো আসন্ন সময়েই মিলবে।