SmartWatch: অতীত থেকেই স্মার্ট! জানেন কি ঐতিহ্যবাহী ঘড়ির অস্তিত্ব মুছে দেওয়া এই Smart Watch-এর ইতিহাস?

জয়িতা চৌধুরি,কলকাতাঃ কটা বাজে? প্রশ্নটি এলেই আমাদের চিরাচরিত অভ্যাস বাঁ- হাতের কব্জির দিকে তাকানো। কতো ঘণ্টা, কতো মিনিট, কতো সেকেন্ডের হিসেব বন্দী হয়ে থাকে বাঁ-হাতের ওই কব্জিটায়। হাতে যতই স্মার্ট ফোন আসুক না কেন, ঘরির আভিজাত্যের আবেদন যেন চিরন্তন। তবে ফোনের মত ঘরির প্রযুক্তিতেও রুপান্তর ঘটেছে। রূপান্তর ঘটেছে নকশাতেও। অ্যানালগের বদলে ব্যবহার হয়েছে ডিজিটাল সার্কিট। তবে ঘড়ির আবেদন ফুরাবে না কখনো।
ক্লাসিক ঘড়ি ও স্মার্ট ওয়াচ আলাদা কেন?
সাধারণ হ্য়বাহী বা চিরাচরিত ঘড়িতে যেমন সময় দেখা যায়, স্মার্ট ওয়াচে সময়ের পাশাপাশি দিন ও তারিখও দেখা যায়। কোনো হাত ঘড়িতে থাকে দিক নির্ণয়ের সুবিধা অর্থাৎ জিপিএস। কিছু কিছু স্মার্ট ওয়াচে থাকে হার্টরেট, স্টপ ওয়াচ ও রিমাইন্ডারের অপশন। ডিজিটাল সার্কিট ব্যবহার করার দরুন দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলেও ঘড়ি নষ্ট হয় না। কিছু কিছু স্মার্ট ওয়াচে আবার অ্যালার্ম ঠিক করা যায়। প্রযুক্তি আজ এতটাই উন্নত যে হাতের নড়াচড়া ওপর চলে এমন ঘড়িও আছে। আবার, সৌরশক্তিতে চলে বাজারে এমন স্মার্ট ওয়াচও রয়েছে।
স্মার্ট ওয়াচের ইতিহাসঃ
স্মার্ট ওয়াচের ইতিহাসে সর্বাধিক বিক্রিত স্মার্ট ওয়াচ অবশই অ্যাপেল কম্পানির। তবে অ্যাপেল বাজারে স্মার্ট ওয়াচ আনে একবিংশ শতকে। তবে জানেন কি অ্যাপেলের বহু আগে বাজারে প্রথম স্মার্ট ওয়াচ আসে ১৯২৭-এ। কি ছিল পৃথিবীর সর্ব প্রথম স্মার্ট ওয়াচ? তারপর একের পর এক প্রযুক্তি ও নকশার উন্নয়নের পর বিবর্তিত হয়ে এল আজকের স্মার্ট ফোন? জেনে নেওয়া যাক…
Plus Four Wristlet Route Indicator ( ১৯২৭ ): পৃথিবীর সর্বপ্রথম এই স্মার্ট ওয়াচ Plus Four Wristlet Route Indicator –এ সময় দেখানোর পাশাপাশি সাহায্য করত নিজের দিক নির্দেশনায়। সেই যুগে দাঁড়িয়েও অবস্থান শনাক্ত করতে জিপিএসের ব্যবহার দেখতে পাওয়া যেত এই ঘড়িতে। আর চার্জ দেওয়ার ঝুঁট ঝামেলাও ছিল না এই ওয়াচে।
Pulser ( ১৯৮২ ): Plus Four Wristlet Route Indicator- এর প্রায় ৫০ বছর পর Hamilton Watch Company বাজারে নিয়ে আসে এক অল- ইলেকট্রিক ডিজিটাল ঘড়ি। ১৮ ক্যারেট সোনায় বাঁধানো এই ঘড়িতে সময় দেখতে একটি বোতাম টিপতে হত। তৎকালীন সময় ঘড়িটির মূল্য ছিল ২১০০ ডলার।
Seiko Message Watch ( ১৯৯৫ ): Pulser- এরপরও আরও অনেক স্মার্ট ঘড়ি তৎকালীন বাজারে এলেও Seiko MessageWatch ঘড়ির ইতিহাসে আলোরণ সৃষ্টি করেছিল। এই ঘড়িতে ছিল কলার আইডি দেখার সুবিধা। তাছাড়াও ছিল খেলার স্কোর, স্টকের মূল্য এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস ইত্যাদি তথ্য।
Nike+ Fuelband ( ২০০৭ ): স্মার্ট ওয়াচের ইতিহাসে অন্যতম বিপ্লব সৃষ্টি করে Nike+ Fuelband। স্মার্ট ঘড়ির ইতিহাসে প্রথম পদক্ষেপ ট্রাকার। এই ঘড়িতে ছিল ব্লুটুথ, অটো সিঙ্ক করার সুবিধা।
Samsung Gear Fit S ( ২০১৪ ): এক বিশাল হ্যান্ডকাফের মত স্মার্ট ওয়াচ যার ছিল ২ ইঞ্চির ডিসপ্লে, ৩জি কানেক্টিভিটি Super AMOLED মুখের ব্যবহার। আধুনিক স্মার্ট ঘড়ির সবরকম সুযোগ-সুবিধাই ছিল এই ফোনটির মধ্যে।
Apple Watch ( ২০১৫-২০২১ ): স্মার্ট ঘড়ির ইতিহাসে রাজা বললে অবশ্যই Apple Watch-এর নাম করা যায়। সারা বিশ্ব এটিকে iwatch বলে। অ্যাপেল ওয়াচ বাজারে আসে ২০১৪ সালে। প্রথমে Apple Watch-এ ছিল না GPS-এর সুবিধা। অ্যাপল ওয়াচের সেন্সরগুলির অ্যারে অ্যাক্সেস করতে পারত না। তবে সব রকম বাঁধা বিপত্তি কাটিয়ে ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটিয়ে iwatch-এ এই মুহূর্তে সুবিধা রয়েছে স্পোর্টস মোড, মাস্টারড নোটিফিকেশন, অ্যাপ স্টোর সুপারচার্জ, ইসিজি, হার্ট রেট, ওয়াকি-টকি মোড ইত্যাদি। যাকে এক কথায় বলে চিত্তাকর্ষক!