Joker Virus Back- এই ভাইরাস ফোনে ঢুকে গেলেই জেনে যাবে সব ভিতরের কথা, একদম যেন পেগাসাস
রাখী পোদ্দার, কলকাতা– এই অ্যাপ (app), সেই অ্যাপ। এটায় হচ্ছে না ওটা ডাউনলোড (Download)। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন এই অ্যাপই আপনার সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে? আজকালকার দুনিয়ায় একে অপরের সাথে যোগাযোগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল এই স্মার্ট ফোন (Smart Phone)। ৮ থেকে ৮০ সকলেই স্মার্ট ফোনে আসক্ত। আর সেই স্মার্ট ফোনেরই একাধিক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে (Anroid App) মিলল এক ভয়ঙ্কর ভাইরাস (virus)। ভাইরাসটির নাম রাখা হয়েছে জোকার ভাইরাস (Joker virus)। ২০১৭ সালে এই ভাইরাসটির প্রথম সন্ধান পান রিসার্চাররা। ফের আরও একবার একাধিক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে এই ভয়ঙ্কর ভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই জোকার ভাইরাস হল ম্যালিশিয়াস কোড, যা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের ভিতরে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে!
ক্যাসপারস্কি-র অ্যান্ড্রয়েড ম্যালওয়্যার অ্যানালিস্ট তাতিয়ানা শিশকোভা জানিয়েছেন যে, এখনও পর্যন্ত মোট ১৪টি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে এই ম্যালওয়্যারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। নিজের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে টুইট করে সেই সব অ্যাপের তালিকাও প্রকাশ করেছেন তিনি। নিজের কোড পরিবর্তন করে গুগল-এর অফিসিয়াল অ্যাপ স্টোরে ক্ষণে ক্ষণে জায়গা করে নেয় জোকার নামের এই ম্যালওয়্যার। আপনার ফোন থেকে বিভিন্ন ডেটা চুরি করতে ওস্তাদ এই ভাইরাস। এই ভাইরাস ইউজারের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, এস এম এস, কনট্যাক্ট লিস্ট, ডিভাইস তথ্য, ওটিপি -সহ আরও একাধিক জিনিস চুরি করতে ওস্তাদ।
২০১৯ সালে গুগলের তরফ থেকে একটি ব্লগ পোস্টে জানানো হয় যে, দীর্ঘদিন ধরে এই ভয়ঙ্কর ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলছে তবে ২০১৭ সালের তুলনায় আরও অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এই জোকার ভাইরাস। নতুন পদ্ধতি, একাধিক কারসাজির সহায়তায় ঘনঘন বিভিন্ন অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপে হানা দেয় এই ভাইরাস। সম্প্রতি যে ১৪টি অ্যাপে নতুন করে এই জোকার ভাইরাসের সন্ধান মিলেছে, যত দ্রুত সম্ভব আপনার ফোন থেকে সরিয়ে ফেলুন সেই অ্যাপগুলি।
আরও পড়ুন……..পেগ্যাসাস ইস্যুতে ব্যাকফুটে কেন্দ্র! সুপ্রিম কোর্টের তদন্ত কমিটি গড়ার নির্দেশে উচ্ছ্বসিত বিরোধী শিবির
চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এই অ্যাপগুলির নাম এবং এদের কাজ। ১) সুপার-ক্লিক ভিপিএন (Super-Click VPN)- এটি একটি ফ্রি ভিপিএন অ্যাপ। ইতিমধ্যেই গুগল প্লে স্টোর থেকেই অ্যাপ ডিলিট সরিয়ে ফেলা হয়েছে। তবে তার এপিকে ফাইল এখনও পর্যন্ত রয়ে গিয়েছে। ২) ভলিউম বুস্টিং হিয়ারিং এইড (Volume Boosting Hearing Aid)- এই অ্যাপ ব্যবহার করলে আপনার স্মার্ট-ফোনকেই হিয়ারিং এইড হিসেবে কাজে লাগানো যেতে পারে। ৩) স্মার্টটিভি রিমোট (Smart TV Remote)- গুগল প্লে স্টোরে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ। এই অ্যাপের সাহায্যে আপনার স্মার্ট-ফোনকেই স্মার্টটিভির রিমোট হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ৪) ফ্ল্যাশলাইট ফ্ল্যাশ অ্যালার্ট অন কল (Flashlight Flash Alert on Call)- এটি একটি ফ্ল্যাশ লাইট অ্যালার্ট অ্যাপ। কল চলাকালীন বা এস এম এস পাঠানোর সময়ে ফ্ল্যাশ লাইট জ্বেলে অ্যালার্ট করে দেয় অ্যাপটি। ৫) হ্যালোউইন কালারিং (Halloween Coloring)- এই অ্যাপ আসলে একটি গেম। হ্যালোউইন কালারিং এই গেমের মধ্যেও জোকার ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। ৬) ব্যাটারি চার্জিং অ্যানিমেশন বাবল এফেক্টস (Battery Charging Animation Bubble Effects) – ব্যাটারি চার্জ করার সময় আপনার স্মার্টফোনে কিছু অসাধারণ অ্যানিমেশন এফেক্টস দেখাতে পারে এই অ্যাপ। ৭) ভলিউম বুস্টার লাউডার সাউন্ড ইক্যুয়ালাইজার (Volume Booster Louder Sound Equalizer)- এটিও অ্যান্ড্রয়েডের জন্য একটি ভলিউম বুস্টার অ্যাপ। এই অ্যাপের তরফ থেকে প্লে স্টোরের ডেসক্রিপশনে লেখা হয়েছে, ‘আপনার অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের গুণমান বাড়াতে সাহায্য করবে।’ ৮) ইজি পিডিএফ স্ক্যানার (Easy PDF scanner)- এটি একটি পিডিএফ PDF স্ক্যানার অ্যাপ। প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপ সরানো হয়েছে। তবে আপনার ফোনে থাকলে এখনও প্রভূত ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। ৯) ক্লাসিক ইমোজি কিবোর্ড (Classic Emoji Keyboard)- এই অ্যাপের সাহায্যে ইউজাররা যে কোনও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে অন্তত ৩০০০ প্লাস অতিরিক্ত ইমোজি ব্যবহার করতে পারবেন। ১০) সুপার হিরো এফেক্ট (Super Hero-Effect)- এটি একটি স্পেশ্যাল এফেক্ট অ্যাপ। এর সাহায্যে ফায়ার, লাইটনিং, এনার্জি, লেজ়ার এফেক্টস-সহ একাধিক সুবিধা পাওয়া সম্ভব। ১১) ব্যাটারি চার্জিং অ্যানিমেশন ওয়ালপেপার (Battery Charging Animation Wallpaper)- আপনার ফোন ১০০ শতাংশ চার্জ হয়ে গেলে অ্যালার্ট করবে এই অ্যাপটি। আপনি যাতে দ্রুত চার্জার থেকে আপনার ফোন আনপ্লাগ করেন, সেই দিকটা নজর রাখে এই অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ। ১২) ড্যাজ়লিং কিবোর্ড (Dazzling Keyboard) -পার্সোনালাইজ় কিবোর্ডের যাঁরা খোঁজ করেন, তাঁদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক এই অ্যাপ। ১৩) ইমোজিওয়ান কিবোর্ড (EmojiOne Keyboard)- আর একটি কিবোর্ড অ্যাপ, যা জেসচার ইনপুটস, ক্লাউড প্রেডিকশন এবং ভয়েস ইনপুট দিতে সক্ষম। ১৪) কিউ আর কোড স্ক্যান (Now QRCode Scan)-এই অ্যাপ ব্যবহার করলে আপনার মোবাইল ফোন প্রফেশনাল মাল্টি-ফাংশনাল বারকোড স্ক্যানার।