মুখ্যমন্ত্রীর ছবিই নাকি লাইসেন্স! নীল সাদা স্কুটিতে ছবি লাগিয়েই জোড়ে ছুটছে গাড়ি, আহাম্মক পুলিশ

প্রত্যুষা সরকার, কলকাতা: এ যেন এক সিনেমার দৃশ্য। মনে হচ্ছে কমিডি কোনও ছবির পোস্টার। কয়েক বছর আগে মুক্তি পাওয়া আমির খান অভিনীত ‘পিকে’ ( PK ) ছবির মতই কিছুটা সেই দৃশ্য। পিকে ছবিতে আমির খান দুই গালে দেবদেবীর ছবি সেঁটে রেখেছিলেন। কারণ রেগেমেগে মারতে চাইলেও ভগনাবেনর ছবি দেখে নাকি লোকে পিছু হটবে। তবে এখানে যুক্তিটা কিছুটা একই থাকলেও, কারণটা একেবারেই ( Scooty with picture of CM ) আলাদা। কি সেই কারণ? এমন কি বা করলেন তিনি? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

বাসন্তীর বাঁশিরাম গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় রং মিস্ত্রি প্রশান্ত সরকার। কাজের জন্য শহর থেকে শহরতলির প্রায় সব অলিগলিতেই ঘুরতে হয় তাঁকে। সঙ্গী একটি স্কুটি। কিন্তু সেই স্কুটিতে না দেখা যায় নম্বর প্লেট, না আছে তার বৈধ কাগজপত্র। তবে এসবের থেকে বাঁচতে এটেঁছেন এক জব্বর ফন্দি। নীল-সাদা স্কুটিতে মুখ্যমন্ত্রীর ( Scooty with picture of CM ) ছবিই নাকি তাঁর কাছে নিয়ম ভাঙার এক হাতিয়ার!

img 20220504 115900

তবে স্কুটির গায়ে সাঁটা আছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। প্রশান্তের দাবি, স্কুটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ( Scooty with picture of CM ) ওই ছবিই তাঁর সর্বত্র বিচরণের ‘পাসপোর্ট’। স্কুটির এমন অবস্থা, নেই কোনও কাগজ পত্র, তাহলে কি পুলিশ ধরে না তাঁকে? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রশান্ত গর্বিত হয়ে জানালেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো গাড়ি দেখলে কে আটকাবে! পুলিশের ক্ষমতা আছে?’ নিজেকে তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দেন প্রশান্ত। গর্ব করে সকলকে বলে বেড়ান, ‘এ হল দিদির গাড়ি!’

গাড়ির সামনে দলের ব্যাজ,পতাকা লাগিয়ে রাখতে দেখা যায় প্রশান্তকে। প্রশান্তের দাবি, ১৯৯৭ সাল থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ( Scooty with picture of CM ) সঙ্গে রাজনীতি করেন তিনি। সেই সময়ে টালিগঞ্জে কংগ্রেসের মিছিলের উপরে পুলিশ হামলা চালানোয় আক্রান্ত হন তিনি। সেই সময় তাঁর চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই থেকেই নাকি তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ অনুগামী। বৈধ কাগজপত্র না থাকলেও পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে অবাধে স্কুটার চালানোর লাইসেন্স নাকি তাঁকে দিয়েছে দিদির ছবিওয়ালা স্কুটি!

img 20220504 120132

যদিও পুলিশ প্রশান্তর এই যুক্তিকে একেবারেই পাত্তা দিচ্ছে না। বারুইপুর পুলিশ জেলার ডেপুটি পুলিশ সুপার ট্রাফিক সৌম্যশান্ত পাহাড়ি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘এমন কোনও নিয়ম নেই, রাজনৈতিক দলের প্রতীক, ব্যাজ বা উত্তরীয় গাড়িতে থাকলে কেউ আইনের হাত থেকে পার পেয়ে যাবেন। সব সময়েই রাস্তায় নিয়মভঙ্গকারীকে ( Scooty with picture of CM ) আটকে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে।’

আরও পড়ুন – মাকে খুব মনে পড়ছে, মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীতে আবেগে ভাসলেন বলিউড স্ট্রংম্যান

বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল প্রশান্তর স্কুটির কথা জানতে পেরেই বলেন,’ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই শিখিয়েছেন, ট্রাফিক আইন মেনে চলতে। সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ কর্মসূচির তিনি প্রবক্তা। ফলে তাঁর ছবি গাড়িতে সাঁটিয়ে যিনি আইন ভাঙছেন, তিনি অন্যায় করছেন। তিনি বরং মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান করছেন।’ বিধায়ক আরও জানান, প্রশান্ত যদি সত্যিই মুখ্যমন্ত্রীর অনুগামী হন, তা হলে তাঁর সম্মানেই ট্রাফিক আইন মেনে চলা উচিত ( Scooty with picture of CM )।

আরও পড়ুন – কেমন যাবে আপনার আজকের গোটা দিন, জানতে হলে আজকের রাশিফলে দেখে নিন




Leave a Reply

Back to top button