Anis Khan : “রাজ্য পুলিশের উপর আস্থা নেই”, আনিস মৃত্যু রহস্যে বাড়ছে জল্পনা

নিজের বাড়ির তেতলার ছাদ থেকে ছাত্রনেতা আনিস খান ( Anis Khan ) কি নিজেই পড়ে গিয়েছিলেন নাকি ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে? প্রশ্ন একাধিক তবে উত্তর এখনও অজানাই। এই পরিস্থিতি ময়না-তদন্তই সামনে আনতে পারে অজানা তথ্যগুলিকে। কিন্তু সেই ময়না-তদন্তই যদি ঠিকঠাক না হয়? কে দেবে আনিসের মৃত্যুর জবাব? এই সন্দেহ-সংশয় প্রকাশ করছেন হাওড়ার আমতার ওই ছাত্রনেতার বাব সালেম খান। আনিসের পরিবার তরফে জানান হয়েছে, পুলিশে ময়না-তদন্তের উপর তাঁদের ভরসা নেই। রাজ্য পুলিশের উপর তাঁদের অনাস্থা এতটাই যে, সিবিআই মৃত্যু রহস্যের সিবিআই তদন্তের দাবি করছেন তাঁরা।
এমতাবস্থায়, আনিসের রহস্য মৃত্যু নিয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান পুলিশ কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, ঠিক কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর এই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করে দিতে পারে ফরেন্সিক বিভাগ। সেই সঙ্গে সত্য উদ্ঘাটনেও বড় হাতিয়ার হতে পারে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট। উল্লেখ্য, পুলিশের করা ময়না-তদন্তে আনিসের পরিবারের আস্থা নেই কেন?- এই প্রসঙ্গে আনিসের ( Anis Khan ) বাবা সালেমের অভিযোগ, তাঁর ছেলের মরদেহের ময়না-তদন্ত নিয়ে চোর-পুলিশ খেলেছে পুলিশ। তিনি বলেন, “ছেলের দেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের পক্ষ থেকে আমাদের থানায় যেতে বলা হয়েছিল। সেখান থেকে আমদের ময়না-তদন্তেরর জন্য উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু থানায় গিয়ে আমরা জানতে পারি, পুলিশ তত ক্ষণে দেহ নিয়ে চলে গিয়েছে। আমাদের আশঙ্কা ময়না-তদন্ত ঠিক ভাবে হবে না। পুলিশ তাঁদের মন মরজি রিপোর্ট আমাদের সামনে পেশ করাবে। এতে আমাদের আস্থা নেই।”
পাশাপাশি, পুলিশের বক্তব্য, যা করা হয়েছে, আইন মেনেই করা করা হয়েছে। কিন্তু ময়না-তদন্তের রিপোর্ট নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তদন্তকারীরা। আনিসকে ( Anis Khan ) ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারের পোশাক পরা কয়েকজন দুষ্কৃতী বিরুদ্ধে। পুলিশের বক্তব্য, তাদের কেউই শুক্রবার ঘটনার রাতে আনিসের বাড়িতে যাননি। পুলিশের এই বক্তব্য সামনে আসার পর থেকেই ছাত্রনেতা মৃত্যু রহস্য যেন আরও ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে।
ছাত্রনেতার মৃত্যু প্রসঙ্গে ফরেন্সিক বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, “ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে কি না, তা বলা সম্ভব। কিন্তু সেটি আত্মহত্যা না খুন কিংবা দুর্ঘটনা, সেটা শুধু ময়নাতদন্ত থেকে বলা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে দেহটি ছাদ থেকে কত দূরে পড়েছে তা গুরুত্বপূর্ণ। কাউকে ঠেলে ফেলা হলে তিনি প্রতিরোধ করবেন। পরস্পর বিপরীতমুখী বলের ক্রিয়ার ফলে তাঁকে বেশি দূরে ফেলা সম্ভব নয়। আবার কেউ আত্মহত্যা করলে দেহ তুলনায় বেশি দূরে গিয়ে পড়বে।”
আরও পড়ুন…Hijab controversy : সোজা ক্লাস থেকে বার করে দেওয়া হল, হিজাব বিতর্কে মামলা রুজু ১০ ছাত্রীর বিরুদ্ধে
আরও পড়ুন… বিয়ের ঊর্ধ্বে নাগরিক অধিকার, সাত পাক ছেড়ে ভোট প্রদান করলেন এই নবদম্পতি
পাশাপাশি, আরও এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ জানান, “সাধারণত লাফ দেওয়ার সময় ক্রীড়াবিদেরাও সর্বাধিক ৪৫ ডিগ্রি কোণে লাফ দিতে পারেন। কিন্তু সে-ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ লাফ দেওয়ার কোণের মাপ আরও কম হবে। দেহ সর্বাধিক ১৩ থেকে ১৫ ফুট দূরে পড়তে পারে। আবার দুর্ঘটনা ঘটে থাকলে অনেক সময়েই দেহ একেবারে দেওয়ালের গা ঘেঁষে পড়ে। সে-ক্ষেত্রে তখন কার্নিসে বা কোথাও ধাক্কা লাগতে পারে। কেষ্টপুরে এক বিমানসেবিকার মৃত্যুতে এমনই উদাহরণ রয়েছে।”
এই পরিস্থিতি ছাত্রনেতা আনিসের মৃত্যু নিয়ে রাজ্য জুড়ে শুরু নানা প্রকার জল্পনা-কল্পনা। এই পরিস্থিতি প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলছে বিরোধী নেতা। রাজ্য পুলিশকেও নিশানা করতে বাকি রাখেনি একাংশ। প্রসঙ্গত, এই মৃত্যু রহস্য ( Anis Khan ) নিয়ে পুলিশ ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, আনিসের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষদর্শী আছেন এবং নানান সাক্ষ্য রয়েছে। ফলত তদন্তে বড় হাতিয়ার হতে পারেন সেই সব প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষ্যরা।