সাইকেল সরানো থেকে অধ্যাপনা! জেনে নিন এক হার না মানা যুবকের গল্প

অনীশ দে, কলকাতা: মানুষের জন্য কাজ করে সফলতা পাওয়া যায়, একথা অনেকেই মানতে চান না। কিন্তু গ্রামবাংলার চন্ডীচরণ একথা পুরোপুরি ভুল প্রমাণ করে দিয়েছেন। গ্রামবাংলায় মানুষ হয়েছেন চন্ডীচরণ লেট(Chandicharan Let)। দীর্ঘদিন যুক্ত রয়েছেন ভারতবর্ষের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে। বাবার একটা সাইকেল সারানোর দোকান ছিল চন্ডীচরনের। সেই দোকানে এতদিন সারাইয়ের কাজও করতেন তিনি(Chandicharan Let)। কিন্তু কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এবার কলেজের অধ্যাপক হতে চলেছেন চণ্ডী(Chandicharan Let)।

বর্ধমানের রায়ান গ্রামের বাসিন্দা কমরেড চণ্ডীচরণ(Chandicharan Let) স্টেট লেভেল এলিজিবিলিটি টেস্ট বা SLET(State Level Eligibility Test)  পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। যার জেরে সাইকেলের দোকানের যন্ত্রপাতি ছেড়ে এবার অধ্যাপনার জুতোয় পা গলাবেন চণ্ডীচরন। তার(Chandicharan Let) সাফল্যের কীর্তি ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামবাসীর মুখে মুখে। গ্রামের খুদেদের কাছে তিনিই ইন্সপিরেশন। এই চাকরি পেয়ে খুবই খুশি তিনি। দীর্ঘদিন শ্রেণী সংগ্রামের সাথে যুক্ত থাকা চণ্ডীচরন(Chandicharan Let) অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি অধ্যাপনা করলেও আদর্শের লড়াই সারাজীবন চালিয়ে যাবেন তিনি।

২০২১- এ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বর্ধমান উত্তরের সিপিআইএম (CPIM) প্রার্থী ছিলেন চণ্ডীচরন(Chandicharan Let)। অবশ্য বাকি প্রার্থীদের মত ছিলেন না চণ্ডী। শোনা যায়, বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর পাড়ার কাকিমা ভালোবেসে একটা লাল পাঞ্জাবি কিনে দিয়েছিলেন তাকে, যা পরে প্রচার করতেন তিনি। ছোটরা হোক কিংবা বয়স্ক, সবার সাথে গভীর জনসংযোগে সক্ষম ছিলেন চণ্ডী। কারন বাকি নেতাদের মতো তাকে শুধু ভোটের সময়ই শুধু দেখা যায় এমনটি নয়।

ছোটবেলা থেকেই গ্রামবাসীদের বিপদে আপদে ছুটে গেছেন এই কমরেড(Chandicharan Let)। যার জেরে তার সাথে গ্রামবাসীদের গভীর সম্পর্ক সেই ছোটবেলা থেকে। কিন্তু কোনো কিছুর জন্যই পড়াশুনার ক্ষতি হতে দেননি তিনি। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে এম.ফিল (M.Phil) করেছিলেন এই মেধাবী ছাত্র। বাবাকে দোকানে সাহায্য করে, গ্রামবাসীদের সমস্যার সমাধান করার পরের নিতের স্লেটের (SLET) প্রস্তুতি।

আরও পড়ুন:বৃদ্ধাশ্রম থেকে বিয়ের পিড়ি! সত্তরে সঙ্গী খুঁজে পেলেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা

শেষ পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রমের ফল পেলেন চণ্ডী(Chandicharan Let)। স্লেট উত্তীর্ণ হয়ে এবার অধ্যাপকের দায়িত্ব সামলাতে চলেছেন তিনি। চাকরির প্রস্তুতির জন্য কোন শিক্ষকের সহজ নিয়েছেন জানতে চাওয়ায় তিনি জানান, “দুবেলা দুমুঠো চাল ঠিকঠাক জুটত না। শিক্ষক পাবো কথা থেকে? নিজের চেষ্টাতেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। কিন্তু গ্রামের সমস্ত মানুষ ও বাবা মা পাশে ছিলেন সবসময়। বিশেষ করে মা যেনো আমায় আলাদা করে শক্তি যোগাত।” সিপিআইএমের(C.P.I.M) এই যুবনেতা আরও জানান যে যতই তাকে পেশার খাতিরে ব্যস্ত থাকতে হোক না কেনো, মানুষের হয়ে মানুষের সমস্যার কথা চিরদিন তুলে ধরবেন তিনি।




Leave a Reply

Back to top button